দেবীগঞ্জ (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি : পঞ্চগড়ে কাসাভা উৎপাদনে সফল হয়েছেন কৃষি উদ্যোক্তা মোস্তফা কামাল। দেশের বেশ কিছু জেলায় কাসাভার আবাদ শুরু হলেও পঞ্চগড়ে মোস্তফা কামালই প্রথম কাসাভা চাষ শুরু করেছেন। কাসাভা একটি উৎকৃষ্ট মানের খাদ্যবস্তু।

পৃথিবীর অনেক দেশের প্রধান খাদ্য এটি। দেশে শিমুল আলু নামে পরিচিত এই ফসল মার্চ-এপ্রিলে রোপণ করতে হয়। অনুর্বর জমিতে খরা সহিষ্ণু ফসলটির প্রতি বিঘায় ৮ থেকে ১০ টন পর্যন্ত ফলন পাওয়া সম্ভব।

এব্যাপারে কৃষি উদ্যোক্তা মোস্তফা কামাল জানায়, প্রচলিত ফসলের বাইরে লাভজনক একটি ফসল  চাষের ভাবনা থেকেই ২০২০ সালের মাঝামাঝিতে তিনি এলাকায় নতুন এক ফসল কাসাভা আবাদ শুরু করেন। এরপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। মোস্তফা নিজ বাড়ি কাদেরের মোড় এলাকায় অল্প জায়গাতে জমি লিজ নিয়ে  কাসাভা চাষ শুরু করলেও গত চার বছরে তার কাসাভা ও মিষ্টি আলু চাষের পরিধি বেড়েছে।

এখন তিনি ৪০ বিঘা জমিতে ওকিনেওয়া ও মুরাসাকি জাতের জাপানি মিষ্টি আলচাষ করছেন। যোগ করেছেন নতুন ফসলও। শুধু ফসল উৎপাদন নয় বরং মনোযোগ দিয়েছেন উন্নত জাতের চারা উৎপাদনে। গত বছর তিনি দেশের ৩০টি জেলায় সাত লাখ কাসাভা ও ৬০ লাখ মিষ্টি আলুর কাটিং বিক্রি করেছেন।

এবছর ২৫ লাখ মিষ্টি আলুও চারা বিক্রি করবেন। বর্তমানে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি কৃষি পাড়ায় মোস্তফা কামাল এখন পরিচিত মুখ। সাফল্য লাভের পর স্লাইসার, ক্রাশিং ও ড্রাইং মেশিন কিনে কাসাভা ও মিষ্টি আলু প্রক্রিয়াজাত করে আটা তৈরি করে বাজারজাত করছেন। তিনি আরও জানান, এই বছর ৯০ বিঘা জমিতে কাসাভা ছাড়াও তিনি ১০ বিঘা জমিতে মাদ্রাজী জাতের ওলকচুর চাষ করেছেন।

আশা করছেন ৪০০ মন ওল কচু পাবেন। এবার তিনি ২৫ লক্ষ মিষ্টি আলুর কাটিং সরবরাহ করতে পারবেন বলে আশা করছেন। ভবিষ্যতে কাসাভা থেকে পলিব্যাগের বিকল্প নবায়নযোগ্য ব্যাগ ও অন্যান্য সামগ্রী তৈরি করার পরিকল্পনা করছেন তিনি।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাঈম মোর্শেদ বলেন, কৃষক মোস্তফা কামাল তিন বছর ধরে কাসাভা উৎপাদন করে সফল উদ্যোক্তা হিসেবে নিজের অবস্থান তৈরি করেছেন। দেশের ক্রমবর্ধমান খাদ্য চাহিদা পূরন এবং এর উৎপাদন অব্যাহত রাখতে কৃষি উদ্যোক্তা মোস্তফা কামালকে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে সার্বিক সহযোগিতা করে যাচ্ছি।