গণবিরোধী সরকার জবাবদিহিতার ধার-ধারেনা : রিজভী
গণবিরোধী সরকার জবাবদিহিতার ধার-ধারেনা। এ অবৈধ সরকারের পক্ষে কোনো গণরায় নেই। তাই জনগণের ওপর প্রতিশোধ নিতেই এগুলো দাম বাড়ানো হচ্ছে-এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
আজ বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞতিতে এসব কথা বলেন তিনি রিজভী বলেন, গত ৭ জানুয়ারি ডামি নির্বাচন দেশের জনগণ প্রত্যাখ্যান করায়, জনগণের ওপর প্রতিশোধ নিতেই বিদ্যুৎ ও জ্বালানরি দাম বাড়ানো হচ্ছে। দখলদার সরকারেরা ঐতিহ্যগতভাবেই নিপীড়ক হয়। জনগণকে শত্রুপক্ষভাবে, তাই ক্ষমতা দখলে রেখে একের পর এক জনগণের ওপর জুলুমের খড়গ নামিয়ে আনছে তারা। জনজীবনকে দুর্বিষহ করে তুলতেই এসবের দাম বৃদ্ধি করছে সরকার।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম বৃদ্ধি করা হলে কৃষি ও শিল্প কলকারখানা গভীর সংকটে পড়বে। এমনিতেই বাজারে দ্রব্যমূল্যের দাম হু-হু করে বাড়ছে। মানুষ তার প্রয়োজনীয় খাবার কিনতে হিমশিম খাচ্ছে। এর উপরে এ দাম বৃদ্ধি, সাধারণ মানুষের ওপর চরম আঘাত আসবে বলেও মনে করেন বিএনপির এ নেতা। তিনি বলেন, দেশের মধ্যম ও নিম্ন আয়ের মানুষরা এমনিতেই কঠিন কষ্টের মধ্যে দিনযাপন করছে। দেশে ৮০ শতাংশ মানুষের আয় বাড়েনি। অনাহারে-অর্ধাহারে কোনরকম জীবন কাটাচ্ছে। তার উপর সরকার বিদ্যুৎ ও জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি করে, জনগণকে বিপদের মুখে ঠেলে দেবে। সামনে রমজান মাস, তার আগেই এই দাম বৃদ্ধি হবে, ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো’।
আরও পড়ুনউন্নয়নের নামে দেশ-বিদেশ থেকে ব্যাপকহারে ঋণ নিয়ে জনগণের ওপর বিপুল পরিমাণে বাড়ানো হয়েছে ঋণের বোঝা। অথচ সরকারের হরিলুটের আর্থিক নীতির কারণে দেশের রাজকোষ প্রায় শূন্য হয়ে পড়েছে। এখন ডলার সঙ্কটের কারণে, কয়লা উৎপাদনের খরচ বাড়ার কথা বলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম বৃদ্ধি, সরকারের একটি অমানবিক খেলা ছাড়া কিছুই নয় বলেও জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, উন্নয়নের ফানুস দেখিয়ে ডলার কারা আত্মসাৎ করেছে, কারা বিদেশে সম্পদ পাচার করেছে? অর্থ পাচার করেছে? বিশাল অর্থবিত্তের মালিক হয়েছে তা জনগণ জানে। এখন বিদ্যুৎ ও জ্বালানিখাতে দাম বৃদ্ধি করে, বিভিন্ন কায়দায় জনগণের রক্ত চুষে নেয়ার আরেকটি পৈশাচিক পন্থা সরকারের। বিএনপির পক্ষ থেকে এগুলো দাম বৃদ্ধির উদ্যোগে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সরকারের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, প্রকাশনা শিল্পকে ধ্বংস করেছে সরকার। নিজেস্ব ভাষা সংস্কৃতির বদলে ব্যাপকভাবে ভিনদেশি ভাষা ও সংস্কৃতির প্রসার ঘটাতে তাদের গল্প, কবিতা ও কার্টুনের বইয়ের পাশাপাশি সিনেমা ও নাটকের ব্যাপক আমদানি করা হচ্ছে। এই সরকার বাংলাদেশের বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। ভিনদেশি সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের প্রভাবে বিকৃত বাংলা ভাষার চর্চা এবং প্রযুক্তির বিকৃত ব্যবহারের ফলে, হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের মৌলিক ভাষা ও সাংস্কৃতিক চেতনা।
শিক্ষা ব্যবস্থাকে স্কুলমুখি না করে কোচিং সেন্টার ও গাইড বই মুখি করা হয়েছে। সুতরাং শিক্ষা ব্যবস্থায় এহেন অরাজকতায় কখনোই বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির সমৃদ্ধি ঘটবে না। একটি মেধাহীন জাতি তৈরি করার জন্য, সরকারি ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
মন্তব্য করুন