সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি : সারিয়াকান্দির যমুনা ও বাঙালি নদীতে গত কয়েকদিন ধরেই পানি বাড়তে শুরু করেছে। গত ৩৩ ঘণ্টায় বাঙালিতে ১ দশমিক ১১ মিটার ও যমুনায় ৬১ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। যমুনায় জেগে ওঠা চরগুলো আবারও ডুবতে শুরু করেছে। নিমজ্জিত হচ্ছে সদ্য রোপণ করা স্থানীয় জাতের গাইঞ্জা ধান। হুমকিতে রয়েছে আগাম রোপণ করা মরিচ, মাসকলাই ও মিষ্টি কুমড়াসহ শীতকালীন শাকসবজি।
গত কয়েক দিনের উজানের পাহাড়ি ঢল এবং ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে উপজেলার যমুনা ও বাঙালি নদীতে পানি বাড়ছে। বগুড়া জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী গত ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে যমুনার পানি বাড়তে শুরু করেছে। ৯ সেন্টিমিটার পানি বেড়ে সেদিন পানির উচ্চতা হয় ১২ দশমিক ৪১ মিটার। তার পরদিন ৩৭ সেন্টিমিটার পানি বেড়ে উচ্চতা হয় ১২ দশমিক ৭৮ মিটার।
আজ রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টা পর্যন্ত পানি সর্বোচ্চ ৬১ সেন্টিমিটার বেড়ে উচ্চতা হয় ১৩ দশমিক ৩৯ মিটার। তবে সারিয়াকান্দিতে যমুনা নদীর পানির বিপৎসীমা ১৬ দশমিক ২৫ মিটার। তাই পানি এখনও বিপৎসীমার ২ দশমিক ৮৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে ভারি বৃষ্টিপাতের জন্য যমুনার সাথে বাঙালি নদীর পানিও বাড়ছে। ৩৩ ঘন্টায় ১ দশমিক ১১ মিটার পানি বেড়ে আজ রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টায় এ নদীর পানির উচ্চতা হয়েছে ১৩ দশমিক ৭৭ মিটার।
এ নদীর পানিও বিপৎসীমার ১ দশমিক ৫৯ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর যমুনা ও বাঙালি নদীর অববাহিকায় জমা পলি মাটিতে গত কয়েকদিন আগে থেকেই কৃষকরা স্থানীয় জাতের গাইঞ্জা ধান রোপণ শুরু করেছেন। এসব জমিতে মরিচ, মিষ্টিকুমড়া, মাসকলাইসহ বিভিন্ন ধরনের আগাম শীতের শাকসবজির চাষ করেন। এদিকে অসময়ে পানি বাড়ার ফলে কয়েকদিন ধরে রোপণ করা স্থানীয় জাতের গাইঞ্জা ধান পানিতে নিমজ্জিত হওয়া শুরু করেছে।
নিচু জমির মরিচগাছ, মাসকলাই ও শাকসবজির জমি পানিতে আক্রান্ত হওয়া শুরু করেছে। তবে গত কয়েক দিন আগে যমুনায় জেগে ওঠা বিভিন্ন ডুবোচরগুলো আবারও পানিতে ডুবতে শুরু করেছে। উপজেলার চালুয়াবাড়ী, সদরের আংশিক, কাজলা, কর্ণিবাড়ী, বোহাইল ও হাটশেরপুর ইউনিয়নের আংশিক নিচু জমিতে পানি উঠতে শুরু করেছে।
উপজেলা সদর ইউনিয়নের নিজতিতপরল গ্রামের ফকির মিয়া বলেন, যমুনা নদীর জেগে ওঠা চরের পলি মাটিতে গত কয়েকদিন আগে থেকে গাইঞ্জা ধান রোপণ করা হয়। ধানগাছগুলো সবুজ হয়ে উঠেছিল। কিন্তু যমুনার পানি বেড়ে বেশকিছু জমির ধান তলিয়ে গেছে। আমার জমির আশেপাশের বেশকিছু মরিচ এবং মাসকলাই জমিতেও পানি উঠতে শুরু করেছে।
বগুড়া জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হক দৈনিক করতোয়া‘কে বলেন, উজানের ভারি বৃষ্টিপাত এবং পাহাড়ি ঢলে যমুনা ও বাঙালি নদীর পানি বাড়ছে, যা বেশ কয়েকদিন অব্যাহত থাকবে। তবে এ যাত্রায় পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করবে কিনা তা এখনও জানা যায়নি।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।