করতোয়া নদী খননের দামামা বাজতে শুরু করেছে
স্টাফ রিপোর্টার : বগুড়ার মধ্যে দিয়ে ব’য়ে চলা করতোয়া নদী খননের দামামা বাজতে শুরু করেছে। নদী খননের অংশ হিসেবে আজ সোমবার (১১ মার্চ) বগুড়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনের অংশ মাপজোক করে বের করা হয়েছে।
আগামী বুধবার শাজাহানপুরের মাদলা এলাকায় বগুড়া -৭ আসনের সংসদ সদস্য, বৃহস্পতিবার মাটিডালী এলাকায় বগুড়া সদর-৬ আসনের সংসদ সদস্য এবং আগামী ১৯ মার্চ বগুড়ার জেলা প্রশাসক মো: সাইফুল ইসলাম শহরে খনন কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন।
বগুড়ার মধ্যে দিয়ে চলা করতোয়া নদীর নাব্যতা ফিরে আনা, সেই সাথে করতোয়া নদীকে কেন্দ্র করে শহরের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধির জন্য করতোয়া নদী খনন ও সৌন্দর্য্য বৃদ্ধির প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। বগুড়ার জেলা প্রশাসকের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় প্রকল্পটি আলোর মুখ দেখে এবং ৪৭ কোটি টাকারও বেশি বরাদ্দ দেওয়া হয়। এই ৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে করতোয়া নদীর ১৭ কিলোমিটার এবং সুবিল বিলের ২০ কিলোমিটার খনন কাজ করতে ইতোমধ্যে টেন্ডার আহবান এবং ঠিকাদার নির্বাচন করা হয়েছে।
এদিকে খনন কাজ শুরুর আগে নদীর সীমানা চিহ্নিত করার জন্য ৭ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। এই কমিটি নদীর সীমানা নির্ধারণে কাজ করছে। সীমানা নির্ধারণের অংশ হিসেবে আজ সোমবার (১১ মার্চ) বগুড়া জেলা প্রশাসককের কার্যালয়ের সামনে সীমানা মাপজোক করা হয়।
বগুড়া শহরকে দুই ভাগে বিভক্ত করা করতোয়া নদী দখল দুষণে তার যৌবন হারিয়ে ফেলেছে। এমনকি তার অস্তিত্বই বিপন্ন হওয়ার দ্বারপ্রান্তে পৌছে গেছে। নদীর হারানো যৌবন ফিরে আনতে খনন এর কাজ করা হচ্ছে। বগুড়ার আপমর জনগণের দাবি ছিলো করতোয়া নদী খনন করে তার হারানো যৌবন ফিরিয়ে আনা।
চলতি অর্থ বছরের শুরুর দিকে বগুড়্রা জেলা প্রশাসক মোঃ সাইফুল ইসলাম করতোয়া নদী খননের জন্য মন্ত্রণালয়ে দেন দরবার করেন। এর ফলম্রূতিতে ৪৭ কোটিরও বেশি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প অনুমোদন হয়। ওই প্রকল্প অনুযায়ী বেসরকারী সংগঠন টিএমএসএস এর দক্ষিণ থেকে ১৭ কিলোমিটার নদী খনন এবং সুবিল খাল ২০ কিলোমিটার খনন করার সিদ্ধান্ত হয়।
আরও পড়ুনএরই প্রেক্ষিতে বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ড এর নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে মোট ১৩ টি গ্রুপে টেন্ডার আহবান করা হয়। এর মধ্যে করতোয়া নদী খননের জন্য ৯টি গ্রুপ এবং সুবিল খাল খননের জন্য ৪টি গ্রুপের টেন্ডার আহবান করা হয়। টেন্ডার আহবানের পর ঠিকাদারও নির্বাচন করা হয়েছে।
বগুড়ার নদী রক্ষা কমিটির সদস্য ও স্বপ্ন বগুড়ার সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া জানান, আনুষ্ঠানিক ভাবে সীমানা নির্ধারণ শুরু না হলেও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে নদীর সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ্ই স্থানে সিএস মানচিত্র অনুযায়ী নদীর প্রশস্ততা হবে ১২৫ ফুট।
বগুড়ার জেলা প্রশাসক মোঃ সাইফুল ইসলাম জানান, সিএস ম্যাপ ধরে নদীর সীমানা ঠিক করা হবে। হাইকোটের নির্দেশনা মেনে সীমানা নির্ধারণ করা হবে। নদীর তীর ঘেঁষে জনসাধারণের জমি থাকলে তা বাদ দেওয়া হবে। নদীর পানি প্রবাহ যাতে নষ্ট না হয় সে দিকে খেয়াল রাখা হবে।
পাবলিকের জায়গা ছেড়ে দেওয়া হবে। তিনি আরও জানান ১৩ মার্চ মাদলা এলাকায় বগুড়া ৭ আসনের এমপি ১৪ মার্চ মাটিডালী এলাকায় বগুড়া সদর আসনের এমপি খনন কাজের উদ্বোধন করবেন। ১৯ জানুয়ারি শহরের অংশে খনন কাজের উদ্বোধন করা হবে। এসপি ব্রিজ থেকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় পর্যন্ত নদীর পশ্চিমতীরে ওয়াকওয়ে হবে। সেখানে গাছ লাগানো হবে। বসার জন্য বেঞ্চ থাকবে। সব কিছুই হবে আকর্ষনীয় এবং আধুনিক।
উল্লেখ্য, পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে প্রচার মাইক থেকে জন সাধারণকে অবহিত করে বলা হচ্ছে জনগণের স্বপ্ন পূরণে খুব শিগগিরই করতোয়া নদী খনন কাজ শুরু হচ্ছে। সে কাজে সর্বস্তরের মানুষকে সহযোহিতা করার আগহ্বান জানানো হয়েছে।
মন্তব্য করুন