বেড়ার শীতল মাঠায় তৃপ্তি মেলে রোজাদারের
আবুল কালাম আজাদ, বেড়া (পাবনা) প্রতিনিধি : গরমের সময়ে পাবনার বেড়া উপজেলায় মাঠার প্রচলন দীর্ঘকালের। তবে রমজান মাসে রোজাদারদের কাছে এই মাঠা পরিণত হয় অপরিহার্য এক সামগ্রীতে। উপজেলার বেশির ভাগ মানুষ দীর্ঘকাল ধরে ইফতারিতে মাঠার শরবত ব্যবহার করে আসছেন।
সারাদিন রোজা পালনের পর মাঠার শরবতে শরীরে শীতল আমেজ সৃষ্টি হয়। রোজাদাররা পান তৃপ্তির পরশ।
দেশের অন্য এলাকার চেয়ে বেড়া উপজেলার মাঠা কিছুটা আলাদা। মূলত এটি ঘোল ছাড়া আর কিছু নয়। স্থানীয়ভাবে এই ঘোল ‘মাঠা’ নামে পরিচিত।
এর স্বাদ ও বর্ণও দেশের অন্য এলাকার চেয়ে আলাদা। উপজেলার মানুষ মনে করেন এই মাঠা বা ঘোল আলাদা স্বকীয়তায় ভরা এবং ইতোমধ্যেই এটি পরিণত হয়েছে উপজেলার ঐতিহ্যবাহী পানীয়তে। সবারই জানা ঘোল বা মাঠা তৈরি হয় গরুর দুধ থেকে। আর গরুর দুধ উৎপাদনে বেড়া উপজেলার রয়েছে আলাদা সুনাম।
উপজেলাবাসীর ধারণা ভালো দুধের কারণেই এখানে ভালো মাঠা তৈরি হয়। তবে এ ক্ষেত্রে মাঠা তৈরির কারিগরেরও রয়েছে বিশেষ ভূমিকা। উপজেলায় বেশ কয়েকজন ঘোষ মাঠা তৈরি করলেও সবার শীর্ষে রয়েছে বিশু ঘোষের নাম। ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি উপজেলায় মাঠার চাহিদা মিটিয়ে চলেছেন।
বিশু ঘোষের বাড়ি বেড়া পৌর এলাকার বনগ্রাম মহল্লায়। সেখানেই তিনি মাঠা তৈরি করে বেড়া বাজারে নিয়ে আসেন বিক্রির জন্য। সাধারণত বেলা ১ টায় তিনি ৩০ থেকে ৩৫ মণ মাঠা নিয়ে বাজারে বসার সাথে সাথেই শুরু হয় লাইন ধরে ক্রেতাদের মাঠা কেনা।
আরও পড়ুনএক থেকে দেড় ঘন্টার মধ্যেই সাফ হয়ে যায় তার সব মাঠা। একটু দেরিতে যারা আসেন, তারা ফিরে যান মাঠা না পেয়ে। প্রতি লিটার মাঠা বিক্রি হয় ৭০ টাকায়।
বিশু ঘোষ বলেন, আমার মাঠা সবাই পছন্দ করেন বলে খুব ভালো লাগে। আরও ১০ থেকে ১৫ মণ মাঠা বেশি করে তৈরি করলেও তা শেষ হয়ে যাবে তাতে সন্দেহ নাই। কিন্তু বর্তমানে যে পরিমাণে তৈরি করছি এর চেয়ে বেশি তৈরি করার অবস্থা আপাতত আমার নাই।
বেড়া মনজুর কাদের মহিলা ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক মো. নূর আমিন বলেন, বেড়ার ইফতারিতে মাঠা এখন একটি ঐতিহ্যবাহী উপকরণ। দেশের আর কোথাও এমন স্বাদ ও বর্ণের মাঠা মিলবে না বলেই আমার বিশ্বাস।
মন্তব্য করুন