পঞ্চগড়ে গ্রীষ্মের রসালো ফল লটকন গাছে ঝুলছে থোকায় থোকায়
সামসউদ্দীন চৌধুরী কালাম, পঞ্চগড় : হিমালয়ের কাছে অবস্থান হওয়ায় দেশের উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের আবহাওয়া ও মাটি দেশের অন্যান্য জেলার চেয়ে অনেকটাই ভিন্ন। এ কারণে এখানে বছর জুড়েই বিভিন্ন ধরনের ফল পাওয়া যায়। এর অধিকাংশই দেখা মেলে গ্রীষ্মকালে। গ্রীষ্মের এমন একটি ফল লটকন। আর মাসখানেকের মধ্যেই বাজারে উঠবে রসালো এই ফলটি। পরিমিত সেচ ও নিয়মিত পরিচর্যা করায় এবার লটকন গাছে প্রচুর ফল ধরেছে। গাছের গোড়া থেকে শুরু করে চিকন ডাল পর্যন্ত থোকায় থোকায় ঝুলছে লটকন। অপেক্ষাকৃত উঁচু জমির অন্যান্য গাছের মাঝে অথবা চা ও সুপারির বাগানের ভেতরে ছায়ার মধ্যেও চারা রোপণের ৩/৪ বছরের মধ্যে গাছে ফল ধরে লটকনের। শুরুতে কিছুটা ফল কম হলেও গাছ বড় হওয়ার সাথে সাথে ফলও বাড়তে থাকে।
কৃষিবিদরা বলছেন, পঞ্চগড়ের আবহাওয়া লটকন চাষের জন্য খুবই উপযোগী। মৌসুমের সময় এই ফলের চাহিদাও প্রচুর। পরিকল্পিতভাবে এই ফলের চাষ করা গেলে অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব।
পঞ্চগড় জেলার মাটির অধিকাংশই বেলে দো-আঁশ। মাটিতে বালুর আধিক্য বেশি থাকায় দেশের অন্যান্য জেলার চেয়ে পঞ্চগড় জেলায় অনেক ধরণের ফলের গাছ রয়েছে। আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, জাম্বুরা, জলপাই, লটকন, ডাউয়াসহ অনেক ধরণের ফলের গাছ রয়েছে পঞ্চগড়ে। এর অধিকাংশেরই ফল হয় গ্রীষ্মকালে। এর মধ্যে রাজধানীসহ দেশের অনেক জেলার চাহিদা পূরণ করে পঞ্চগড়ের লটকন। গাছে ফল ধরার পরই ফল ব্যবসায়ীরা গ্রামে গ্রামে ঘুরে চুক্তিতে বাগান ও গাছের ফল কিনে নেয়। নিয়মিত পরিচর্যার পর গাছে ফল পাকা শুরু করলেই গাছ থেকে ফল পেরে তা প্যাকেটজাত করে নিয়ে যায় রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে।
আরও পড়ুনএ বিষয়ে কথা বললে পঞ্চগড় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক মো. আব্দুল মতিন জানান, পঞ্চগড় জেলার মাটি ও আবহাওয়া লটকন চাষের উপযোগী। ব্যাপক চাহিদা থাকার কারণে পঞ্চগড়ে বাণিজ্যিকভাবে লটকনের বাগান হচ্ছে। এছাড়া চা বাগান, সুপারী বাগানসহ বিভিন্ন স্থানে লটকনের চারা লাগানো হচ্ছে। আমাদের হিসেবে পঞ্চগড় জেলায় ৪৫ হেক্টর জমিতে লটকন চাষ হচ্ছে।
মন্তব্য করুন