শ্বশুরসহ তিনজনকে গ্রেফতার
মেয়ের দ্বিতীয় বিয়ে মানতে পারেননি বাবা, তাই সৌরভকে হত্যা
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি : মেয়ের দ্বিতীয় বিয়ে মানতে পারেননি বাবা ইলিয়াস আলী, তাই নিজের ভাতিজা ওমর ফারুক সৌরভকে (২৪) বাসায় ডেকে নিয়ে হত্যা করে বলে জানায় পুলিশ। ঘটনার পরপরেই গাঁ ঢাকা দেয় ইলিয়াস আলী ও তার পরিবার। গত সোমবার রাতে অভিযান চালিয়ে নিহতের শ্বশুরসহ তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এর আগে রোববার ময়মনসিংহ সদর উপজেলার মনতলা ব্রিজের নিচে সুতিয়া নদী থেকে ওমর ফারুক সৌরভের চার খন্ড মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই দিন বিকেলে নিহতের পরিচয় শনাক্ত করে পুলিশ। পরে নিহতের বাবা ইউসুফ আলী কোতোয়ালি মডেল থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
সৌরভ রাজধানীর প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির ইংরেজি সাহিত্যের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।
মঙ্গলবার ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার মাছুম আহম্মেদ ভূঁইয়া এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ইসরাত জাহান ইভা ও ওমর ফারুক সৌরভ তারা দুজন আপন চাচাতো ভাই বোন। গত তিন বছর আগে কানাডায় অধ্যয়নরত এক চিকিৎসক ছেলের সঙ্গে ইভার বিয়ে হয়। বিয়ের পর ইভাকে বাংলাদেশে রেখে তার স্বামী কানাডায় চলে যায়।
ইভা তখন তার চাচাতো ভাই ওমর ফারুক সৌরভের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ায়, বিষয়টি উভয়ের পরিবার জানত। গত ৯ মে ইভা ঢাকায় তার এক বান্ধবীর বাসায় সৌরভকে বিয়ে করে; সেই বিয়ে মেনে নেয়নি ইভার বাবা ইলিয়াস আলী। ক্ষুব্ধ বাবা ইভাকে ১৬ মে কানাডায় পাঠিয়ে দেন।
পুলিশ সুপার বলেন, গত শনিবার সৌরভ ইভার সাবেক স্বামীর বাবা চিকিৎসক আমিনুল ইসলামের সঙ্গে দেখা করতে ময়মনসিংহ আসেন। সৌরভ আমিনুল ইসলামের কাছে তার বিয়ের বিষয়টি খোলাসা করে সহযোগিতা চান। আমিনুল ইসলাম এই বিষয়টি ইলিয়াস আলীকে জানালে সে তার ছেলে মৃদুলকে দিয়ে সৌরভকে বাসায় ডাকে।
সৌরভ বাসায় গেলে ইলিয়াস আলী (৫৫) ও তার শ্যালক আহাদুজ্জামান ফারুক (৩০) প্রথমেই তাকে মাথায় ছুরি দিয়ে আঘাত করে হত্যা করে। এরপর চাপাতি দিয়ে চার খন্ড করে দেহ।
পরে গাঙ্গিনারপাড় থেকে একটি নতুন লাগেজ কিনে সেই লাগেজে খন্ডিত দেহ ভরে নদীতে ফেলে দেয়। এই ঘটনায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ গতরাতে ফারুককে ঢাকা থেকে এবং ইলিয়াস আলীকে ময়মনসিংহের সীমান্তবর্তী উপজেলা ধোবাউড়া থেকে গ্রেফতার করে। এই ঘটনায় সৌরভের দেহ বহনকারী প্রাইভেটকারসহ চালক আব্দুল হান্নানকেও (৬৫) গ্রেফতার করা হয়।’
মাছুম আহম্মেদ ভূঁইয়া বলেন, সৌরভের পরিচয় যেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শনাক্ত করতে না পারে, সে জন্য ইলিয়াস আলী সৌরভের হাতের আঙুল নষ্ট করে দেন। লাগেজ কেনার সূত্র ধরে অপরাধীদের শনাক্ত করা হয়েছে, তারা তাদের অপরাধ স্বীকার করেছেন।’
মন্তব্য করুন