নিখোঁজের ১৬ দিন পর মর্গে মিলল গুলিবিদ্ধ লাশ
নিউজ ডেস্ক: নিখোজের ১৬ দিন পর মর্গে পাওয়াগেলো প্রাইভেটকার চালক কামরুজ্জামান (৩০) এর গুলিবিদ্ধ লাশ। বাবা সৌদি আরব প্রবাসী, বড় ভাই থাকেন বেলজিয়ামে। কামরুজ্জামানও প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন বিদেশে যাওয়ার। কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি তার।
নিহত কামরুজ্জামান ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলার চরআলগী ইউনিয়নের চর কামারিয়া গ্রামের সৌদি আরব প্রবাসী মো. আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। কামরুজ্জামানের দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।
৩ আগস্ট স্ত্রীর সঙ্গে তার সর্বশেষ কথা হয়। ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়ে নিখোঁজ হন কামরুজ্জামান। এরপর তার সন্ধান পাচ্ছিল না পরিবার। ১৬ দিন পর রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাওয়া যায় তার গুলিবিদ্ধ মরদেহ।
৪ আগস্ট গুলিতে নিহত হওয়ার পর থেকে মর্গে অজ্ঞাত হিসেবে পড়ে ছিল তার মরদেহ। গত সোমবার (১৯ আগস্ট) শনাক্তের পর তার মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসেন স্বজনরা। মঙ্গলবার গফরগাঁও উপজেলার চর কামারিয়া গ্রামে জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয়।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টর এলাকায় ভাড়া বাসায় থেকে প্রাইভেটকার চালাতেন কামরুজ্জামান। পাশাপাশি ভাইয়ের কাছে বেলজিয়ামে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। ৩ আগস্ট রাতে স্ত্রী সামিরা জাহানের সঙ্গে তার সর্বশেষ কথা হয়। ৪ আগস্ট আন্দোলনে অংশ নেবেন বলে স্ত্রীকে জানিয়েছিলেন। পরদিন দুপুরে উত্তরা এলাকায় গুলিতে নিহত হন। ওই দিন থেকে মুঠোফোনও বন্ধ পাওয়া যায়।
এরপর মরদেহ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেই অজ্ঞাত হিসেবে মরদরহ মর্গে পড়ে থাকে। স্বজনরা ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে খোঁজ করেন। কিন্তু কোথাও সন্ধান পাচ্ছিলেন না।
আরও পড়ুনকামরুজ্জামানের শ্যালক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মর্গে পড়ে থাকা মরদেহের আঙুলের ছাপ মিলিয়ে পরিচয় শনাক্তের পর তাদের খবর দেয় পুলিশ। খবর পেয়ে তারা মর্গে গিয়ে মরদেহ শনাক্ত করেন। পরে রাতে মরদেহ বাড়িতে এনে মাথা ও শরীরে আটটি গুলির চিহ্ন পান।
শ্যালক জাহাঙ্গীর আলম আরও বলেন, ভগ্নিপতির এমন মৃত্যুতে পুরো পরিবার শোকাহত। তার (কামরুজ্জামান) বাবা প্রবাস থেকে কয়েক দিনের মধ্যে ফিরবেন। এরপর আইনি পদক্ষেপের বিষয়ে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেবেন।
তিনি বলেন, কামরুজ্জামান কোনো রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। প্রাইভেটকার চালিয়ে সংসার চালাতেন।
চর কামারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিক বলেন, ঢাকা থেকে পুলিশের এক কর্মকর্তা আমার কাছে ফোন করে কামরুজ্জামানের ছবি পাঠান। ওই ছবি দেখে চিনতে পেরে আমি কামরুজ্জামানের পরিবারকে জানালে তারা মরদেহ শনাক্ত করে বাড়িতে এনে দাফন করে।
মন্তব্য করুন