বগুড়ার প্রাইমারি স্কুলগুলোতে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি করছেন ৭৪৯ জন শিক্ষক
নাসিমা সুলতানা ছুটু : বগুড়ায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৭৪৯ জন শিক্ষক ও তৃতীয় শ্রেণি পদে একজন চাকরি করছেন। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে এ তালিকা করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
শিক্ষক পদে কতজন আসল আর কতজন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি পেয়েছেন তা যাচাই-বাছাইয়ের জন্য এই তালিকা হতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার পদে জেলার কোন উপজেলাতেই মুক্তিযোদ্ধা কোটায় কেউ-ই চাকরি করছেন না বলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে।
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার কিছু দিনের মধ্যেই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের তালিকা সংগ্রহের কাজ শুরু করে। সেই অনুযায়ী শিক্ষকদের নামের তালিকা পাঠিয়েছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস।
গত আগস্ট মাসের তৃতীয় সপ্তাহে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (পলিসি ও অপারেশন) লুৎফর রহমান সই করা এক চিঠিতে এই তথ্য চাওয়া হয়। এছাড়া একই সময়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ড. বিলকিস বেগম সই করা অপর একটি চিঠিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পদে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগপ্রাপ্ত জনবলের তথ্যও চাওয়া হয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, বগুড়া জেলায় ৬০১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৭৪৯ জন শিক্ষক মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি পেয়েছেন।
আরও পড়ুনএরমধ্যে আদমদীঘি উপজেলায় ৭৬ জন, কাহালুতে ৪০ জন, গাবতলীতে ৮০ জন, দুপচাঁচিয়ায় ৪২ জন, ধুনটে ৭১ জন, নন্দীগ্রামে ২৯ জন, বগুড়া সদরে ১০৫ জন, শেরপুরে ৭৩ জন, শিবগঞ্জে ৪৩ জন, সারিয়াকান্দিতে ৪৭ জন, সোনাতলায় ৬৬ জন ও শাজাহানপুরে ৭৭ জন।
ইতিমধ্যে এই তালিকা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া গাবতলীর একটি স্কুলে তৃতীয় শ্রেণি পদমর্যদায় একজন নিয়োগ পেয়ে চাকরি করছেন। অভিযোগ রয়েছে, বিগত সরকারের সময় অনেক ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাকে সনদ দেওয়া হয়েছে। সেই সনদ দিয়ে অনেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক পদে চাকরি নিয়েছেন। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার বিষয়টি খতিয়ে দেখার পদক্ষেপ নিয়েছে। তারই অংশ হিসেবে দেশের সব উপজেলা থেকে শিক্ষকদের নামের তালিকা সংগ্রহ করেছে অধিদপ্তর।
বগুড়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার রেজোয়ান হোসেন জানান, আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তর থেকে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরিরত কর্মকর্তা, শিক্ষক ও কর্মচারীদের নামের তালিকা চাওয়ার পর আমরা প্রতিটি উপজেলায় তা জানিয়ে দেই।
উপজেলাগুলো থেকে পাঠানো তথ্যের ভিত্তিতে দেখা যায়, জেলায় ৭৪৯ জন শিক্ষক এবং একজন কর্মচারী মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি করছেন। আমরা সেসব তথ্য অধিদপ্তরে পাঠিয়েছি। পরবর্তীতে অধিদপ্তর থেকে কোনো নির্দেশনা এলে সেই অনুযায়ী কাজ করা হবে।
মন্তব্য করুন