ভিডিও সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

সবুজ টিয়া

সবুজ টিয়া

শিশুকাল থেকে রিমু দেখে আসছে তার ছোট খালা একটি টিয়া পাখি পোষে। ওর নাম রেখেছে লারা। লারাকে সে কখনো খাঁচায় বন্দি অবস্থায় দেখেনি। সব সময় বাড়ির বারান্দায় বসে থাকে। কোথাও উড়ে যায়না । সব কথা বলতে পারে লারা। রিমু নানার বাসায় বেড়াতে গেলে লারা আনন্দে ডানা ঝাপটায় আর বলে ---
রিমু এসেছে, রিমু এসেছে।
রিমু ভালো আছো?
রিমুও পাখির কথার জবাব দেয়, ভালো আছি। টিয়া আবার বলে ভালো আছি, ভালো আছি।
হাত পেতে দিলে অমনি হাতে উপর এসে বসে লারা। কিছুক্ষণ আদর করে ছেড়ে দিলে আবার উড়ে গিয়ে নিজের জায়গায় বসে পরে।
নানা বাড়ি বেড়াতে গেলে রিমু সারাদিন লারার সাথে কথা বলে আনন্দে দিন কাটায়। বাড়ি ফেরার সময় টিয়াকে যখন বলে ---
লারা টাটা, লারাও বলে টাটা। আবার এসো।
রিমুর তখন টিয়ার জন্য মন খারাপ লাগে।
আগে বাসায় ফিরে রিমুর টিয়া পাখিটির জন্য মন খারাপ লাগতো। টিয়া পাখি কেনার জন্য বায়না ধরতো।
সেদিন রিমুর স্কুল থেকে ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষা সফরে চিড়িয়াখানায় নিয়ে গেলো। শিক্ষকদের আদেশে সবার হাতে ছিলো খাতা কলম। কারন চিড়িয়াখানায় ঘোরার সময় প্রাণি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে পরবর্তীকে রচনা প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে হবে। এই প্রতিযোগিতায় মোট দশজনকে পুরস্কৃত করা হবে।
রিমুর পছন্দ টিয়া পাখি তাই সে প্রতিযোগিতায় লিখলো----
সবুজ টিয়া: টিয়া হলো একটি সুন্দর  পাখি যা মানব বসতির কাছে বড় বড় গাছে বাসা বেঁধে থাকে। অনেকেই টিয়া পাখি পুষে থাকেন। সবুজ রঙা টিয়া বাংলাদেশে প্রচুর পাওয়া যায়। সারা পৃথিবীর উষ্ণ ও নিরক্ষীয় অঞ্চলে এই পাখিটি চোখে পড়ে।
সবুজ টিয়ার, ইংরেজি নামঃ রোজ রিংগডপ্যারাকিট। লম্বায় ৪০ সেন্টিমিটার। দেহের তুলনায় লেজ লম্বা। ঠোঁট রক্ত লাল, শক্ত-মজবুত ও ধারালো। উপরের ঠোঁট বড়শির মতো বাঁকানো। জিভ শক্ত। চোখের বলয় কমলা রঙের, মনি হলুদ-সাদা। দেহের অধিকাংশ পালক কলাপাতা-সবুজ। পিঠের কিছু অংশ ফিকে নীলচে, ধূসর আভাযুক্ত ও হলুদ। পুরুষ পাখির থুতনির নিচে কালো দাগ, গলায় ও ঘাড়ে গোলাপি-কালো মিশ্রণ কণ্ঠী। স্ত্রী পাখির ঘাড়ে সবুজ পালকে আবৃত। এ ছাড়াও পুরুষ পাখি কিছুটা লম্বা। এই পাখি কিছুটা হিংস্র হলেও বেশ মিশুক। পোষ মানে দ্রুত, শিখালে কথাও বলে। দেশের প্রায় প্রতিটি স্থানেই কমবেশি এদের সাক্ষাৎ মিলে। বেশি দেখা যায় আর্দ্র পাতাঝরা বনে। পাহাড়ি বনবনানীতেও প্রচুর টিয়া পাখি দেখা যায়। বসতঘরের আশপাশে এবং শহরেও দেখা মেলে তাদের।
টিয়ার খাদ্য ফল, গাছের কচিপাতা, শস্যবীজ,ধান, বাদাম, দুধভাত ও বেশ প্রিয়। প্রজনন সময় মার্চ-মে। বাসা বাঁধে গাছের কোটরে অথবা পুরাতন দালানের ফাটলে। ডিম পাড়ে ৩-৪টি। ডিম ফোটে ২২-২৪ দিনে। নীল সোনালী ম্যাকাও পা দিয়ে ধরে বাদাম খায়।দক্ষিণ আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ায় সবচেয়ে বেশি টিয়ার দেখা মেলে।
সুন্দর পাখিদের মধ্যে অন্যতম একটি পাখি টিয়া। আমরা টিয়া পাখি ধরে খাঁচায় বন্দি করে পুষবোনা। টিয়া পাখির স্বাধীনভাবে বাঁচার অধিকার আছে। তাই তাদের নিজ পরিবেশে বিচরণ করতে দেওয়া আমাদের কর্তব্য।
রিমু প্রতিযোগিতায় প্রথম হলো। তাই তাকে স্কুল কতৃপক্ষ সুন্দর বড় একটি টিয়া পাখির ছবি উপহার দিলেন। যা শোভা পেলো রিমুদের ড্রইংরুমে।

 

আরও পড়ুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

জয়পুরহাটে এবার ২শ’ টন গুড় উৎপাদনের আশা

ইউনিয়ন ব্যাংকের শাখা পর্যায়ে গ্রাহকদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত 

বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া হাসপাতালের রোগীদের জন্য শীতবস্ত্র প্রদান করল শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি

চালডাল.কম-এর সাথে ব্যাংক এশিয়ার চুক্তি স্বাক্ষর 

নোয়াখালীর আমিশাপাড়াতে এনআরবিসি ব্যাংকের কার্যক্রম শুরু

আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকে সিটিজেন’স চার্টার অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত