ভিডিও মঙ্গলবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৪

দেশের তৈরি পোশাকশিল্পে রপ্তানি আয়ের সুবাতাস

দেশের তৈরি পোশাকশিল্পে রপ্তানি আয়ের সুবাতাস

সম্প্রতি বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেছেন, ২০২১ সাল থেকে বছরের শুরুর দিক পর্যন্ত ৩৯৩টি নতুন কারখানা বিজিএমই এর সদস্য পদ গ্রহণ করেছে। একই সঙ্গে নতুন বাজারগুলোতে আমাদের রপ্তানি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। নতুন বাজারে প্রায় দুই দশকে দশগুণ রপ্তানি বেড়েছে।

পোশাক কারখানাগুলোতে নতুন নতুন অর্ডার ও আগের অর্ডারের কাজ করতে হিমশিম খাচ্ছেন মালিকরা। তাই নতুন কর্মী নিতে নানা জায়গায় বিজ্ঞপ্তিও দিচ্ছেন। জানা গেছে, আগামী মৌসুমকে কেন্দ্র করে প্রায় কারখানায় আসছে নতুন নতুন অর্ডার।

গত মাসের তুলনায় প্রায় ১০ শতাংশ অর্ডার বেড়েছে। কারখানা মালিকরা আশাবাদী আগামী মৌসুমে পুরো অর্ডার পাবেন। ক্রেতাদের মধ্যে আস্থা ফিরে আসছে। তারা বাংলাদেশ থেকেই পোশাক নিতে চান। তবে পরিবেশ আরও স্থিতিশীল ও স্থায়িত্ব চান তারা।

জানা গেছে, নতুন সরকারের প্রতি ক্রেতা দেশগুলোর আস্থা বাড়ছে। বিশেষ করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাতিসম্পন্ন। তাকে বিশ্ববাসী চেনেন। তার প্রতি বিশ্বাস রাখেন। তাকে তারা অনুসরণ করেন। তার প্রতি আস্থা থাকায় ক্রেতারা অন্য দেশে যাবে না বলে বিশ্বাস ব্যবসায়ীদের। বিজিএমইএর পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, পরিবেশ আগের তুলনায় অনেক ভালো।

কারখানাগুলো পুরোদমে চলছে। ক্রেতাদের মধ্যে আস্থা ফিরছে। নতুন নতুন অর্ডার আসছে। এদিকে ক্রেতা ও উৎপাদনকারীর মধ্যে সমন্বয়কারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ বায়িং হাউজ অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিবিএ) পরিচালক কিয়াও সেন থাই ডাল বলেন, ইতোমধ্যে ক্রেতাদের সঙ্গে বেশ কয়েকটি বৈঠক হয়েছে। তাদের থেকে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। বর্তমান সরকারের প্রতি তাদের আগে থেকেই আস্থা আছে।

আরও পড়ুন

পোশাক খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চলমান ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বৈশ্বিক অর্থনীতি একটি সংকটময় মুহূর্ত অতিক্রম করছে। তবে সম্প্রতি বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতি কমে আসায় এবং পোশাকের খুচরা বিক্রিতে কিছুটা গতি সঞ্চার হওয়ায় চলতি সময়ে আমাদের রপ্তানিতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি ফিরে এসেছে। বিশেষ করে ইউরোপ ও আমেরিকায় রপ্তানি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে।

আশার বিষয় হচ্ছে, শিল্পে আমরা নতুন নতুন উদ্যোক্তাদের পদচারনা দেখতে পাচ্ছি। নতুন বাজারগুলোতে রপ্তানি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে, যা প্রায় দুই দশকে ১০ গুণ বেড়েছে। চলতি অর্থ বছরের আট মাসে নতুন বাজারগুলোতে পোশাক রপ্তানি ১০.৮৩ শতাংশ বেড়েছে, বিশেষ করে তুরষ্কে ৬৩.৩৫ শতাংশ, সৌদি আরবে ৪৭.১৯ শতাংশ, চীনে ৪৪.৭৬ শতাংশ, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ৩৬.৫৪ শতাংশ, রাশিয়ায় ২৫.৬৫ শতাংশ. অষ্ট্রেলিয়ায় ২১.২৯ শতাংশ। দক্ষিণ কোরিয়ায় ১৭.১৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি এসেছে। এটা নি:সন্দেহে ভালো খবর। 
তৈরি পোশাক খাত বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি আয়ের মধ্যে অন্যতম।

সঙ্গত কারণেই এই খাতের সার্বিক অগ্রগতি নিশ্চিত করতে সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়ন জরুরি বলেই প্রতীয়মান হয়। বলা দরকার, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) ওয়ার্ল্ড স্টাটিস্টিক্যাল রিভিউ -২০২০ অনুযায়ী দেখা যায় যে, পোশাক রপ্তানিতে একক দেশ হিসেবে দীর্ঘদিন ধরেই শীর্ষে রয়েছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহ্ত্তম অর্থনীতির দেশ চীন। পরিমাণের বিচারে অনেক পিছিয়ে থাকলেও দ্বিতীয় শীর্ষ স্থানটি এতদিন ছিল বাংলাদেশের। দেশের মোট রপ্তানির ৮৫ শতাংশের মতো আসে তৈরি পোশাক শিল্প খাত থেকে।

আমরা বলতে চাই, বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি আয় বৃদ্ধির ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সব ধরনের উদ্যোগ অব্যাহত রাখার পাশাপাশি সামগ্রিকভাবে রপ্তানি খাতের দিকে নজর দিতে হবে। আর এখন যখন যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি বৃদ্ধির বিষয়টি জানা যাচ্ছে, তখন এটিকে আমলে নেওয়ার পাশাপাশি সার্বিকভাবে দেশের পোশাক খাতের অগ্রগতি ধরে রাখতে সর্বাত্মক উদ্যোগ বজায় রাখতে হবে। অর্থাৎ পোশাক খাতকে সামনে রেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ চালু রাখতে হবে। কেননা, দেশের সামগ্রিক অর্জন এবং অগ্রগতির প্রশ্নে পোশাক খাতের ভূমিকা অগ্রগণ্য।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

৩ দিনেই ১৫০ কোটি ঘরে তুললো ভুল ভুলাইয়া, কত আয় সিংহামের

জেনেভা ক্যাম্পের ‘বোমা কারিগর’ কসাই সোহেল গ্রেপ্তার

মাদকবিরোধী অভিযানে রাজধানীতে গ্রেফতার ২৩ 

ইসলামি মহাসম্মলনে যোগ দিতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনতার ঢল

সাগরপথে মালয়েশিয়ায় পাচার কালে ১২ রোহিঙ্গা উদ্ধার, ৪ গ্রেপ্তার

শারজাহতে ইতিহাসের সাক্ষী হচ্ছে বাংলাদেশ