দাম্পত্য জীবনে প্রভাব ফেলছে মোবাইল
লাইফস্টাইল ডেস্ক : সবকিছু মোবাইলকেন্দ্রিক হওয়ায় পরিবার, আত্মীয়স্বজন এমনকি সঙ্গীর সঙ্গেও সম্পর্কের দূরত্ব তৈরি হয়। মোবাইলের আসক্তির কারণে দাম্পত্য জীবনেও মারাত্মক প্রভাব পড়ে।
এ ছাড়া অত্যধিক মোবাইল ব্যবহার, মানসিক বা শারীরিক স্বাস্থ্যের ওপরও বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। তাই জীবন থেকে ডিজিটাল দুনিয়ার প্রভাব সরিয়ে সুস্থ জীবনযাপনের চেষ্টা করা উচিত। আর এর চাবিকাঠি সবার হাতেই।
এই যে ব্যাপারটি, অর্থাৎ কারও উপস্থিতিতে মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়া; এটির কিন্তু একটি নির্দিষ্ট নামও রয়েছে। একে বলা হয় ‘ফাবিং’ (Phubbing)। ইংরেজি শব্দ ফোন (Phone) ও Snubbing (অবজ্ঞা-পূর্ণ আচরণ) মিলে তৈরি হয়েছে ‘ফাবিং’ শব্দটি। সুতরাং, ফোনের প্রতি মনোযোগ দিতে গিয়ে যখন আমরা সামনে থাকা রক্ত-মাংসের মানুষটিকে অবজ্ঞা করি, তখন সেটিকে বলা হয় ফাবিং।
এ ক্ষেত্রে মনে হতে পারে যে, ফাবিং খুব ভয়াবহ কোনো অপরাধ না। ভয়াবহ না হলেও, এর ফলাফল সামাজিক অবক্ষয়ের একটা কারণ হতে পারে। দুটি মানুষের মধ্যে যখন একজন অন্যজনের মনোযোগ চায়, তখন তৃতীয়পক্ষ হিসেবে মোবাইল ফোনের টুংটাং শব্দ বিরক্তির কারণ হয়ে উঠতে পারে।
আরও পড়ুনফাবিংয়ের ফলে নষ্ট হতে পারে সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতা। আপনার বন্ধু, প্রেমিক-প্রেমিকা বা স্বামী-স্ত্রী যদি আপনার কথা না শোনে, তাহলে আপনি না চাইলেও বিপরীত মানুষটির প্রতি আপনার একধরনের অভিমান তৈরি হবে। আস্তে আস্তে সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতা নষ্ট হবে। আপনি যখন আপনার সামনের বন্ধুটিকে বাদ দিয়ে ভার্চুয়াল জগতের বন্ধুটিকে মেসেজ পাঠাচ্ছেন, তার মানেটা কী দাঁড়াচ্ছে? মানে দাঁড়াচ্ছে এই যে, সামনাসামনি থাকা বন্ধুটির চেয়ে ভার্চুয়াল জগতের বন্ধুটিই আপনার কাছে বেশি মূল্যবান।
আর বন্ধুত্বের ক্ষেত্রে সবসময়ই একটা মান-অভিমান, মানসিক টানাপোড়েনের জায়গা থাকে। কেউ মানতে পারে না সে যাকে বন্ধু ভাবে, সেই বন্ধুটি তাকে বন্ধু ভাবে না কিংবা ভাবলেও অন্য আরেকজন বন্ধুর চেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ মনে করে। এমনটা যখন আপনার সামনে থাকা বন্ধুটিও ভাববে, তখন থেকেই আপনাদের মধ্যে বিচ্ছিন্নতা তৈরি হতে থাকবে।
ফাবিংয়ের ফলে রোমান্টিক সম্পর্কেও ভাঙন ধরে। আর তা কেন ধরবে না, বলুন তো! একটি সম্পর্কে খুব ছোট ছোট মুহূর্তও অনেক বেশি মূল্যবান। হয়ত প্রেমিক-প্রেমিকা বা স্বামী-স্ত্রী কিছু বলছে না, চুপ করে বসে আছে। কিন্তু ওই নীরবতার সময়টুকুও আপনাদের একান্ত নিজস্ব। ওই সময়ে যদি তৃতীয় পুরুষ (কিংবা নারী) হিসেবে মোবাইলের অনাহূত আবির্ভাব ঘটে, তবে তার ফলাফল হতে পারে ভয়াবহ। অবজ্ঞাসূচক ব্যবহার নারীরা খেয়াল করে বেশি।
মন্তব্য করুন