শ্রাবন্তীর জন্য একটা সাইকেল বদলে দিতে পারে শীল পরিবারের ইতিহাস
রাহাত রিটু : একটা বাইসাইকেল বদলে দিতে পারে একটা শীল পরিবারের ইতিহাস। বগুড়া জেলা প্রশাসকের দেওয়া বাইসাইকেল হতে পারে শীল পরিবারের ছোট্ট মেয়ে শ্রাবন্তী রানীর পড়ালেখার অনুপ্রেরণা। বগুড়ার নন্দীগ্রামের শ্রাবন্তী রানীর বাড়ি থেকে তার স্কুলটা বেশখানিক দূরে। প্রতিদিন স্কুলে যাওয়া-আসাটা তার জন্য অনেক কষ্টের হলেও এই ছোট্ট শিক্ষার্থী নিয়মিত স্কুল যেতে চায়।
পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া শ্রাবন্তী একদিন অনুভব করলো একটা বাইসাইকেল হলে তার স্কুল যাওয়া-আসা সহজ হবে। কিন্তু দরিদ্র পরিবারের পক্ষে তাকে বাইসাইকেল কিনে দেওয়া সম্ভব নয়। পরিবারের সদস্যদের ইচ্ছে থাকলেও মেয়ের আশা পূরণ করতে পারেনি শ্রাবন্তীর পরিবার।
অবশেষে একটা বাইসাইকেলের জন্য আবেদন করে বগুড়ার জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজার কাছে। জেলা প্রশাসকের রুটিন ওয়ার্কের অন্যতম একটা অংশ হচ্ছে প্রতি বুধবার গণশুনানী করা। মাসখানেক আগে জেলা প্রশাসক গণশুনানীর অনেক আবেদনের মধ্যে একটি আবেদন পেলেন, অন্যরকম একটা আবেদন। কোন জমি-জমার বিষয় নয়।
চাকরি বা অন্য কোন বিরোধের মীমাংসার আবেদন নয়; নয় কোন অভিযোগ। একটা মানবিক আবেদন তিনি বেছে নিলেন। আবেদনে ছোট্ট একটা মেয়ে লিখেছে তার স্কুল অনেক দূরে এজন্য তার একটা বাইসাইকেল প্রয়োজন। মানবিক জেলা প্রশাসক আবেদনটা আলাদা করে রাখলেন। শুনানী শেষে তিনি সিদ্ধান্ত নিলের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী শ্রাবন্তীকে একটা বাইসাইকেল কিনে দিবেন।
আরও পড়ুনতার পরিবারের খোঁজ-খবর নিয়ে তিনি বাইসাইকেল কেনার ব্যবস্থা করলেন। অবশেষে আজ সোমবার (৪ নভেম্বর) বেলা ২টায় শ্রাবন্তী রানী শীল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এলে তার হাতে বাইসাইকেল তুলে দেন তিনি। জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজ জানান, মাসখানেক আগে তার আবেদন পেয়ে তাকে সাইকেল কেনার জন্য টাকা না দিয়ে বাইসাইকেলই কিনে দিয়েছেন, যাতে মেয়েটা ভালোভাবে স্কুল যেতে পারে, পড়ালেখা করতে পারে।
বাইসাইকেল পেয়ে খুবই খুশি শ্রাবন্তী রানী শীল। এই একটা বাইসাইকেল বদলে দিতে পারে শীল পরিবারের নারীদের ইতিহাস। নতুন করে লেখা হতে পারে শ্রাবন্তীর জীবনী।
মন্তব্য করুন