জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে প্রতিবন্ধী তিন মেয়ে নিয়ে চন্দনের মানবেতর জীবন
বাগজানা (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি : পুতুল (২২), সোহাগী (১৭) ও দিপা (১৪)। হরিজন সম্প্রদায়ের এই তিন সহোদরই জন্ম থেকে মানসিক প্রতিবন্ধী। নিজেদের খাওয়া গোসলসহ প্রয়োজনীয় কাজটুকুও করতে পারে না তারা। সবকিছুই করে দিতে হয় বাবা-মাকে। এমন অবস্থায় প্রতিবন্ধী তিন মেয়েকে নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার ছাতিনালী গ্রামের বাসিন্দা চন্দন-দিপালী দম্পতি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রায় ৩০ বছর আগে ছাতিনালী বাজারের পাশে এক ঝুপড়ি ঘরে বসবাস করার সময় তিন সন্তানের জন্ম হয়। পরে তিন সন্তান ও স্ত্রীসহ ৫জন কে নিয়ে, ওই ঘরে বসবাস করছেন চন্দন। সংসারের একমাত্র উপার্জনকারী চন্দন তার গ্রামের পাশেই ছাতিনালী বাজার ঝাড়ু– দিয়ে, আর মানুষের বাড়িতে টয়লেট পরিষ্কার করে যে টাকা পান তা দিয়েই সংসার চালান।
চন্দনের স্ত্রী দিপালী বলেন, আমার তিন সন্তানই ছোট থেকে মানসিক প্রতিবন্ধী। তারা কেউই কিছু বোঝে না। সবকিছু আমাদেরকেই করে দিতে হয়। চন্দন বলেন, লালমনিহাট থেকে পাঁচবিবির ছাতিনালী গ্রামে এসে পুকুর পাড়ে একটি ঘরে বসবাস শুরু করি। মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে টয়লেট পরিষ্কার আর ছাতিনালী বাজার পরিষ্কার করে যা পাই তা দিয়ে সংসার চালাই।
সামান্য অর্থে সংসার চালানো খুবই কষ্টদায়ক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর ওপর আবার রয়েছে তিন প্রতিবন্ধী মেয়ে। চন্দন বলেন, আমাকে যদি কোনো ব্যক্তি কিংবা সরকার একটি মাথা গোঁজার জায়গা বা ঘর করে দিতেন তাহলে আমি সেখানে পরিবার নিয়ে থাকতে পারতাম। ছাতিনালী গ্রামের বাসিন্দা আসাদুল ইসলাম বলেন, চন্দন আমাদের এখানে অনেকদিন আগে থেকেই বসবাস করেন।
আরও পড়ুনতিন মেয়েকে নিয়ে খুব কষ্টে আছেন তিনি। তিনজনকেই সবকিছু করে দিতে হয়। এরা অনেক দু:স্থ-অসহায়, তাদের দেখার কেউ নেই। চন্দনের প্রতিবেশী মাহবুব আলম বলেন,একটু বৃষ্টি হলেই তাদের ঘরে পানি পড়ে। বাড়িতে একমাত্র উপার্জনকারী চন্দনের এখন তেমন কাজকর্ম না থাকায় কষ্টেই জীবনযাপন করছে তারা।
অর্থের অভাবে মেয়েদের চিকিৎসাও করাতে পারে না চন্দন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বলেন, আমি সবেমাত্র যোগদান করেছি। সরকারি কোন সুযোগ সুবিধা আসলে পরবর্তীতে ব্যবস্থা করা হবে।
মন্তব্য করুন