খেজুরের আমদানি শুল্ক ও অগ্রিম কর কমানোর প্রস্তাব ট্যারিফ কমিশনের
আসন্ন পবিত্র রমজান উপলক্ষ্যে খেজুরের আমদানি শুল্ক ও অগ্রিম কর কমানোর প্রস্তাব দিয়েছে ট্যারিফ কমিশন। রোজায় খেজুরের দাম সহনীয় রাখতে কমিশনের সুপারিশ, খেজুরের আমদানি শুল্ক ২৫ থেকে ১৫ শতাংশ এবং অগ্রিম কর ১০ থেকে ৩ শতাংশ করা হোক।
রোজা উপলক্ষ্যে খেজুর আমদানিতে শুল্ক-কর ও শুল্কায়ন যৌক্তিকীকরণ নিয়ে সম্প্রতি ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন এক প্রতিবেদন প্রণয়ন করেছে। সেই প্রতিবেদনে এই সুপারিশ করা হয়েছে। কমিশন আরও বলেছে, খেজুর আমদানির সমুদয় আগাম কর (৫ শতাংশ) ৩১ মার্চ ২০২৫ পর্যন্ত সময়ের জন্য অব্যাহতি দেওয়া যেতে পারে। এছাড়া শুল্কস্টেশন কর্তৃক নির্বাহী আদেশে খেজুর আমদানিতে বিদ্যমান শুল্কায়নযোগ্য মূল্য ত্রুটিপূর্ণ হওয়ায় যথাযথ পদ্ধতি অনুসরণ করে প্রকৃত বিনিময়মূল্যকে ভিত্তি এবং টিসিবি কর্তৃক সাম্প্রতিক এলসি মূল্য বিবেচনায় নিয়ে শুল্ক স্টেশনগুলোকে শুল্কায়নের নির্দেশনা দিতে পারে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এ বিষয়ে প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী সংগঠন ও অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনা করা যেতে পারে। বিদ্যমান আমদানিনীতি আদেশের দ্বিতীয় অধ্যায়ের অনুচ্ছেদ ০৭ অনুযায়ী, খেজুরের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য মোড়কজাত করা পণ্য আমদানিতে আমদানিকারকের নাম, ঠিকানা ও ইটিআইএন, বিআইএন লিপিবদ্ধ করার বাধ্যবাধকতা শিথিল করা যেতে পারে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ট্যারিফ কমিশনের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ট্যারিফ কমিশন শুল্ক হ্রাসের প্রস্তাব দিয়েছে। সেই সঙ্গে আমদানিকারকের নাম, ঠিকানা ও ইটিআইএন, বিআইএন লিপিবদ্ধ করার বাধ্যবাধকতা শিথিল করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। এতে খেজুরের দাম উল্লেখযোগ্যহারে কমে আসবে। ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের পর্যবেক্ষণ, দেশে বর্তমানে খেজুরের চাহিদা প্রায় ১ লাখ থেকে ১ লাখ ১০ হাজার টন। রমজান মাসে খেজুরের চাহিদা প্রায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার টন। খেজুর মূলত সৌদি আরব, আরব আমিরাত, তিউনিসিয়া, মিসর, জর্ডান, ইরাক, ইরান ও পাকিস্তান থেকে আমদানি করা হয়।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে সব ধরনের খেজুর আমদানিতে সিডি ২৫ শতাংশ, ভ্যাট ১৫ শতাংশ, এআইটি ১০ শতাংশ, আরডি ৩ শতাংশ ও এটি ৫ শতাংশসহ মোট শুল্কের পরিমাণ ৬৩ দশমিক ৬০ শতাংশ। খেজুর আমদানিতে উচ্চহারে অগ্রিম আয়কর (১০ শতাংশ) ও আগাম কর (৫ শতাংশ) বাস্তবতার নিরিখে যৌক্তিক নয় বলে মনে করে ট্যারিফ কমিশন। উচ্চহারের বাড়তি করের কারণে পণ্যের দাম বাড়ছে। দেশে গত দেড় বছরের বেশি সময় উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে। গত অক্টোবরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি দুই অঙ্কের ঘরে ছিল। এই বাস্তবতায় অন্তর্র্বতী সরকার নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখতে শুল্ক কমানোসহ বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে। তার অংশ হিসেবে এবার খেজুরের শুল্ক কমানোর সুপারিশ করেছে ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন।
মন্তব্য করুন