বগুড়ার শেরপুরে আলুর বীজ না পেয়ে কৃষকদের মহাসড়ক অবরোধ
শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার শেরপুরে আলুর বীজ না পেয়ে বিক্ষুব্ধ কৃষকরা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন। ঘন্টাব্যাপি এই অবরোধের ফলে উভয়পাশে শতাধিক যানবাহন আটকা পড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। পরবর্তিতে সহকারি কমিশনার ভূমি রেজাউল করিম ও ওসি শফিকুল ইসলামের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেন কৃষকরা।
আজ বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে আলু বীজ নিয়ে সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের প্রতিকার চেয়ে শেরপুর উপজেলা পরিষদের সামনে ঢাকা-বগুড়া মহসড়ক অবরোধ করে রাখেন শতাধিক কৃষক।
কৃষকদের অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায়, মৌসুমের শুরু থেকেই একটি চক্র আলু বীজের সংকট সৃষ্টি করেছে। সেই চক্রের সাথে ডিলাররা জড়িত হয়ে সংকটের সুযোগ নিয়ে অবৈধভাবে এই উপজেলার বরাদ্দকৃত বীজ নিয়ে গিয়ে কাহালুসহ অন্যান্য উপজেলায় বিক্রি করছে। এছাড়াও সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ৭৯টাকার বীজ আলু ১শ’ ২০ টাকা থেকে ১শ’ ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে কৃষকের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে। কৃষকরা আরো বলেন গত কয়েকদিন যাবত উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশিক খান ও কৃষি কর্মকর্তা ফারজানা খাতুনের কাছে অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাননি। তাই তারা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন।
কচুয়াপাড়ার কৃষক শিপন সরকার জানান, আমি ১২ বিঘা জমিতে আলু চাষ করি। বীজের সংকটের কারণে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফারজানা আকতারের কাছে গেলে তিনি আমাকে আলুবীজ না দিয়ে আমার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন।
কুসুম্বি ইউনিয়নের মালিহাটা গ্রামের ওমর ফারুক বলেন, ১৭ বিঘা জমিতে আলু চাষের জন্য প্রস্তুত করেছি। বেলঘড়িয়ার ডিলার আরজু হোসেন মঞ্জুকে অগ্রিম টাকা দিয়েছিলাম আলু বীজের জন্য কিন্তু দাম বেশি হওয়াতে আমার টাকা ফেরত দিয়ে দালালের মাধ্যমে ৬ হাজার ৫শ’ টাকা করে বিক্রি করছে। আমরা প্রকৃত কৃষক আলু বীজ পাচ্ছিনা।
উপজেলার দক্ষিণ পেঁচুুল গ্রামের সোহেল রানা বলেন, আমি ৩০ বিঘা জমিতে আলু চাষ করি। এবার বীজের সংকটের কারণে ১২ বিঘা জমি চাষ করেছি। কিন্তু বীজের অভাবে এখনও জমি পতিত আছে।
আরও পড়ুনমালেক, মজিবর, আব্দুল মজিদ, মাসুদ, কালাম, রজিব, জাহাঙ্গীরসহ অবরোধকারী অনেক কৃষক জানান, ডিলারদের নির্ধারিত দোকানে বীজ পাওয়া না গেলেও গোপনে দ্বিগুন দামে তারা বীজ বিক্রি করছেন। রাতের আঁধারে ডিলাররা বীজ পাচার করছেন। কৃষকরা গত বুধবার রাতে ডিলার ফিরোজ আলমের দুই ট্রাক বীজ বিশালপুর ইউনিয়নের চৌমহনী বাজার থেকে আটক করে প্রশাসনের হাতে তুলে দেন। আটককৃত বীজগুলো কৃষকের মাঝে নির্ধারিত দামে বিতরণ করার কথা থাকলেও প্রশাসন কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায় রাস্তায় নামতে আমরা বাধ্য হয়েছি।
শেরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশিক খান বলেন, সিন্ডিকেট করে বেশি দামে আলু বীজ বিক্রি করার অভিযোগের সত্যতা পেয়ে ভ্রাম্যমান আদালতে ফিরোজ আলী মাস্টারের ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, কৃষক ও ব্যবসায়ীদের নিয়ে বৈঠক করে সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন