নীলফামারীতে নারী ইন্টার্ন চিকিৎসক লাঞ্ছিত দু’জনকে আসামি করে মামলা কর্মবিরতি অব্যাহত
নীলফামারী প্রতিনিধি : নীলফামারীর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসাপাতালে এক নারী ইন্টার্ন চিকিৎসককে লাঞ্ছনার ঘটনায় দু’জনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) দুপুরে নীলফামারী সদর থানায় বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন ওই হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবু আল হাজ্জাজ। এদিকে ঘটনার তিন দিনের থানায় মামলা হলেও আসামি গ্রেপ্তার না হওয়া এখনও অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
মামলার আসামিরা হলেন-জেলা শহরের উকিলপাড়া মহল্লার বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিয়ার রহমানের বড় ছেলে আব্দুস সালাম বাবলা ও ছোট ছেলে শামীম শাহ আলম তমু। এর মধ্যে আব্দুস সালাম বাবলা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি এবং শামীম শাহ আলম তমু সদর উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, গত ১৯ নভেম্বর মঙ্গলবার বিকেলে নীলফামারী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসাপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয় কিশোরী তানহাকে (১৪)। শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি হলেও তার স্বজনরা তাকে নিয়ে রাখেন হাসপাতালের মুক্তিযোদ্ধা কেবিনে। এরপর তানহার বাবা শামীম শাহ আলম তমু ও আব্দুস সালাম বাবলা বিকেল সোয়া ৪টার দিকে মেডিসিন বিভাগের ইন্টার্ন কক্ষে কর্তব্যরত চিকিৎসক সুরাইয়া জান্নাত সম্পার কাছে রোগী তানহাকে ছাড়াই যান এবং উত্তেজিত হয়ে মুক্তিযোদ্ধা কেবিনে গিয়ে তানহাকে দেখতে বলেন। ফাইলে শিশু ওয়ার্ডে ভর্তির বিষয়টি দেখতে পেয়ে তানহাকে শিশু বিভাগের ইন্টার্ন কক্ষে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন ওই চিকিৎসক। এতে তারা উত্তেজিত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও এক পর্যায়ে ওই ইন্টার্ন চিকিৎসককে লাঞ্ছিত করেন। এছাড়াও তারা ইন্টার্ন চিকিৎসকের কক্ষের আসবাবপত্র ও কম্পিউটার ভাঙচুর করেন। বিষয়টি জানার পর হাসপাতালের অন্যান্য বিভাগের ইন্টার্ন চিকিৎসক, নার্স এবং ওয়ার্ড বয়রা এগিয়ে এলে রোগীকে নিয়ে তার স্বজনরা সটকে পড়েন। এরপর সেদিন সন্ধ্যা থেকে ওই ঘটনার প্রতিবাদে এবং জড়িতদের গ্রেপ্তারসহ দ্রুত বিচারের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ঘোষণা দেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
এ বিষয়ে ইন্টার্ন চিকিৎসক ইমরুল কায়েস বলেন, আমাদের সহকর্মী সুরাইয়া জান্নাত সম্পাকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। চিকিৎসক লাঞ্ছনাকারী আব্দুস সালাম বাবলা ও শামীম শাহ আলম তমুর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি। এ ঘটনায় মামলা দায়ের হলেও আসামিরা এখনও গ্রেপ্তার হয়নি। আসামি গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
আরও পড়ুনহাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবু আল হাজ্জাজ বলেন, ইন্টার্ন চিকিৎসক সুরাইয়া জান্নাত সম্পাকে লাঞ্ছিতের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমি দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি। একই সাথে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা শিগগিরই তাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এম আর সাঈদ বলেন, গত মঙ্গলবার হাসপাতালে একটি অপ্রীতিকর ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটি এজাহার দিয়েছে। ওই এজাহারের ভিত্তিতে মামলা দায়ের হয়। আসামিদের ধরতে আমরা তৎপর রয়েছি।
মন্তব্য করুন