গাছে গাছে ঝুলছে দার্জিলিংয়ের কমলা বাগান থেকেই কিনছেন ক্রেতারা
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি : গাছে গাছে ঝুলে আছে ফল ভর্তি দার্জেলিং কমলা। রসালো ফলের ভারে নুয়ে পড়া ডালগুলো ঠেকা দিয়ে রাখা হয়েছে। যতদূর চোখ যায় শুধু কমলা আর মাল্টা। খেতেও বেশ সুস্বাদু। সমতলভূমিতে এই ফল চাষ করে সফলতা পেয়েছেন ঠাকুরগাঁও সদরের উত্তর বঠিনা গ্রামের জয়নাল আবেদীন। প্রতিদিন বাগান দেখতে দূরদূরান্ত থেকে আসছেন দর্শনার্থীরা। অনেকে কমলা গাছের চারা নিয়ে যাচ্ছেন।
জানা যায়, উদ্যোক্তা জয়নাল আবেদীন বঠিনা গ্রামে ২০১৯ সালে নিজ উদ্যোগে ৬ বিঘা জমি নিয়ে শুরু করেন কমলা ও মাল্টার চাষ। চায়না ম্যান্ডারিং, দার্জিলিং কমলা ও বারি-১ মাল্টা জাতের চারাগাছ সংগ্রহ করে রোপণ করেন। বর্তমানে তার বাগানে ৫৫০টি গাছে শোভা পাচ্ছে হলুদ ও লাল রঙের কমলা ও মাল্টা। প্রতিটি গাছ থেকে গড়ে ৪০ থেকে ৬০ কেজি ফলন আসছে। শুধু ফলই নয়, চারা-কলম বিক্রি করেও ভালো আয় করছেন তিনি।
জয়নাল আবেদীনের বাগান ঘুরে দেখা যায়, থোকায় থোকায় ঝুলছে মিষ্টি হলুদ রঙের কমলা ও মাল্টা। এ কমলা আকারে বড়, মিষ্টি, সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা দর্শনার্থীরা পাইকারি দরে কমলা কিনছেন এবং চারা সংগ্রহ করে নিয়ে যাচ্ছেন ছাদ বাগানসহ বাড়ির উঠানে বাগান করবেন বলে। দক্ষিণ বঠিনা গ্রামের শাহের আলী বলেন, বাগানে কমলার ভালো ফলন দেখে তিনি নিজেও কমলা চাষের উদ্যোগ নিয়েছেন। বাগান করতে দুই বিঘা জমিও প্রস্তুত করেছেন তিনি।
জয়নাল আবেদীন বলেন, ২০১৯ সালে চুয়াডাঙ্গা থেকে ৫শ’ টি কমলা ও মাল্টা চারা নিয়ে আসেন তিনি। রোপণের এক বছর পর গাছে ফল আসতে শুরু করে। এছাড়াও বর্তমানে কলমপদ্ধতিতে বাগানে ৬ হাজার উৎপাদিত চারা রয়েছে। চলতি বছর আরও কয়েক বিঘা জমি বর্গা নিয়ে কমলার গাছ লাগিয়ে আরও একটি বাগান করার প্রস্তুতি নিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুনতিনি আরও জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর ভালো ফলন হয়েছে। গত বছর ৫ লাখ টাকার কমলা বিক্রি করলেও এ বছরে ১০-১২ লাখ টাকার কমলা ও মাল্টা বিক্রির আশা করছেন তিনি। ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলায় চলতি মৌসুমে ৩৪ হেক্টর জমিতে কমলা ও ১২৫ হেক্টর জমিতে মাল্টার চাষ হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মোছাম্মৎ শামীমা নাজনীন বলেন, এ জেলার মাটিতে এসিডের পরিমাণ বেশি থাকায় সবধরণের লেবু জাতীয় ফলের ফলন আশাতিত হচ্ছে। এ সফলতা জেলার অন্যান্য উপজেলার কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে চেষ্টা করছেন তারা।
মন্তব্য করুন