ভিডিও সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪

বগুড়ার সারিয়াকান্দির শতবর্ষী স্কুলের পাঠদান চলে একচালা ঘরে

বগুড়ার সারিয়াকান্দির শতবর্ষী স্কুলের পাঠদান চলে একচালা ঘরে, ছবি : দৈনিক করতোয়া

সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়া সারিয়াকান্দির চর চন্দনবাইশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান চলে একচালা ঝুপড়ি ঘরে। শতবর্ষী এ স্কুলে এখনো লাগেনি উন্নয়নের ছোঁয়া। ৪ বার নদী ভাঙনের পর ছোট কুটুরি ঘরে নানা প্রতিকূল অবস্থায় পাঠগ্রহণ করেন শিক্ষার্থীরা।

উপজেলার চর চন্দনবাইশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৯০১ সালে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকেই প্রতিষ্ঠানটি উপজেলার একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন শিক্ষার্থী রেজাউল করিম মিলন বর্তমানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে ঢাকায় কর্মরত রয়েছেন।

কিন্তু গত ২০০৮ সালে, ২০১২ সালে, ২০১৪ সালে এবং ২০১৫ সালে মোট চারবার চর চন্দনবাইশা গ্রামেই এই প্রতিষ্ঠানটি যমুনা নদীর ভাঙনের শিকার হয়। এরপর থেকেই বিদ্যালয়টির জায়গা হয় চন্দনবাইশা গ্রামের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধে। এখানে প্রায় ২০ টি টিন দিয়ে একটি একচালা ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। কয়েকটি পুরাতন টিন দিয়ে এর  বেড়া নির্মাণ করা হয়েছে।

টিনগুলোর বয়স বেশি হওয়ার কারণে ঘরটিকে একটি জীর্ণশীর্ণ কুটির বলেই মনে হয়। কুটিরটির মাঝখানে বেড়া দিয়ে এটিকে দুই রুমে বিভক্ত করা হয়েছে। যেখানে দুই শিফটে নেয়া হচ্ছে ক্লাস। সেখানে ছোটছোট কক্ষে শিক্ষার্থীরা অসহায়ের মতোই বসে থাকে।

বিদ্যালয়টির নেই কোনও টয়লেট। কোথাও নেই বিন্দুমাত্র আধুনিকতার ছোঁয়া। বিদ্যালয়ের চাল দিয়ে বৃষ্টির দিনে পানি পড়ে। এছাড়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধের কিনারায় হওয়ায় বন্যার সময় স্কুলের মেঝেতে পানি আসে। ফলে বর্ষার সময় স্কুলের ক্লাসরুম প্রায়ই কর্দমাক্ত হয়ে যায়। প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫০ জন।

আরও পড়ুন

৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী আলো আক্তার বলেন, বর্ষার সময় আমরা খুবই কষ্ট করে পড়াশোনা করি। বৃষ্টি এবং বন্যার চোয়ানী পানিতে স্কুলের মেঝে সবসময় স্যাঁত স্যাঁতে থাকে। এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক বাবু আকন্দ বলেন, আধুনিক যুগে এ ধরনের জরাজীর্ণ স্কুল দেশের কোথাও আছে কিনা তা আমার জানা নেই। দ্রুত প্রতিষ্ঠানটির পাকা ভবন এবং উন্নত ওয়াশব্লক নির্মাণের জন্য সরকারের প্রতি জোর আবেদন জানাচ্ছি।

স্কুলের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মাসুমা আক্তার জানান, ২০০৮ সাল থেকেই তিনি এ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন। প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক মোকছেদুল ইসলাম বদলি জনিত কারনে অন্য স্কুলে চলে গেছেন। মাত্র ৪ মাস আগে মাসুমা আক্তার ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পেয়েছেন। তাই এখনো প্রতিষ্ঠানটির উন্নয়নের জন্য কোথাও কোনও আবেদন করেননি।

সারিয়াকান্দি উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা প্রভাত চন্দ্র সরকার বলেন, প্রতিষ্ঠানটির উন্নয়নের জন্য পাকা ভবন চেয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন প্রেরণ করা হয়েছে। কিন্তু এখনো কোনও অনুদান পাওয়া যায়নি। আমার জানামতে প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব কোনও জমি নেই।

সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহরিয়ার রহমান বলেন, আমি এ উপজেলায় নতুন যোগদান করেছি। স্কুলটির সরেজমিন পরিদর্শন করে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ঢাকা পলিটেকনিক ও বুটেক্সের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ

ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে মুহুর্মুহু রকেট হামলা চালিয়েছে হিজবুল্লাহ

বগুড়ায় ৪ আগস্ট নিহত রিপনের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন

১০ সাংবাদিকসহ ১১ জনের ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ

সায়রা বানুর চোখে এখনও ‘বিশ্বের সেরা পুরুষ’ তার সাবেক স্বামী এ আর রহমান

বিএনপির প্রত্যাশা জনগণের অংশগ্রহণমুলক অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন : রুহুল কবীর রিজভী