ভিডিও বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪

বগুড়ার সোনাতলায় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৬৪ শিক্ষার্থীর সবাই অনুপস্থিত

বগুড়ার সোনাতলায় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৬৪ শিক্ষার্থীর সবাই অনুপস্থিত, ছবি : দৈনিক করতোয়া

সোনাতলা (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার পাকুল্লা ইউনিয়নের পশ্চিম পদ্মপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী আসে না বলে শিক্ষকরা জানালেও অভিভাবকেরা বলছেন, এই স্কুলে পড়ালেখা ভালো না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা স্কুলে যেতে আগ্রহ দেখায় না।

পাকুল্লা ইউনিয়নের পশ্চিম পদ্মপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাক-প্রাথমিক থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত রেজিস্ট্রার অনুযায়ী শিক্ষার্থীর সংখ্যা মাত্র ৬৪ জন। ওই বিদ্যালয়ের চারজন শিক্ষকের মধ্যে একজন সিএনএড (পিটিআই ট্রেনিং-এ)।

অবশিষ্ট তিনজন শিক্ষক বিদ্যালয়ে আসলেও শিক্ষার্থীরা পাঠ গ্রহণ করতে আসে না প্রতিষ্ঠানে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলেছে বিদ্যালয়ের ভবন ৮ বছর আগে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করায় ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের শ্রেণিকক্ষে বসে পাঠগ্রহণ না করতে বিদ্যালয়ে আসে না শিক্ষার্থীরা।

উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১১ কিলোমিটার পূর্বে বাঙালি নদীর পূর্বপ্রান্তে নিভৃত পল্লী এলাকায় অবস্থিত পশ্চিম পদ্মপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠানটি ১৯৮৮ সালে স্থাপিত। ১৯৯৪ সালে বিদ্যালয়টিতে তিন কক্ষবিশিষ্ট একটি ভবন নির্মাণ করা হয়েছে, যা ৮ বছর আগে উপজেলা প্রকৌশলী অধিদপ্তর ঝুঁকিপূর্ণ ভবন হিসেবে ঘোষণা করেছে।

তবে বিদ্যালয়টিতে অন্য কোন ভবন না থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই বসে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদেরকে পাঠগ্রহণ ও পাঠদান করতে হয়। বিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অনুযায়ী ওই বিদ্যালয়ে প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১০ জন, প্রথম শ্রেণিতে ১৩ জন, দ্বিতীয় শ্রেণিতে ১২ জন, তৃতীয় শ্রেণিতে ১২ জন, চতুর্থ শ্রেণিতে ৯ জন ও পঞ্চম শ্রেণিতে ৮ জন শিক্ষার্থী দেখা যায়।

ওই বিদ্যালয়ে কোন শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে আসে না বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এখন পর্যন্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়েনি। এমনকি লেখাপড়ার মান নিয়েও রয়েছে নানা অভিযোগ। আজ মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সরজমিনে ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে তিনজন শিক্ষক ছাড়া কোন শিক্ষার্থীকে শ্রেণি কক্ষে দেখা যায়নি। এসময় স্থানীয় অভিভাবকরা বলেন, এ দৃশ্য এক দিনের নয়, প্রতিদিনের।

আরও পড়ুন

এ বিষয়ে ওয়াহাব সরকার, লিটন মিয়া বলেন, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী উপস্থিতির হার এ রকম। শিক্ষকরা আসেন যখন-তখন, চলে যান নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী। তাই এই বিদ্যালয়ে মেধাবী শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা ভর্তি করাতে চান না। তারা আরও জানান, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা অফিসার বরাবর মৌখিক ও লিখিত অভিযোগ করেও কোন ফল হয়নি। এমনকি শিক্ষা বিভাগের তদারকি নেই তেমন।

এ বিষয়ে ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, তিনি ২০১৬ সালের জুন মাসে এ বিদ্যালয়ে যোগদান করেছেন। যোগদানের পর থেকে একই অবস্থা দেখছেন তিনি। তবে এজন্য তিনি আশপাশের পরিবেশ ও অভিভাবদের দায়ী করেন।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা নাজনীন বেবী বলেন, শুধু আজকে তাদের বিদ্যালয়ে কোন শিক্ষার্থী আসেনি। অন্যদিন ৮/১০ জন করে শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে আসে। তবে তারা নিয়মিত আসেন বলেও জানান। এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এনায়েতুর রশিদ বলেন, বিদ্যালয়ের ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে আসে কম।

তবে একেবারেই কেউ বিদ্যালয়ে আসে না এ সম্পর্কে কেউ তাকে জানাননি। তবে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী উপস্থিতির জন্য অভিভাবক সমাবেশ করে অভিভাবকদের সচেতন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আইনজীবী সাইফুল হত্যার কঠোর শাস্তি হবে: উপদেষ্টা নাহিদ

চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যা : যৌথ বাহিনীর অভিযানে আটক ২০

টস জিতে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ

আজ শহীদ ডা. মিলন দিবস 

‘বাংলাদেশ ধর্মীয় সহনশীলতা ও সহাবস্থানে বিশ্বে অনন্য’ : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

যুদ্ধবিরতি ঘোষণার আগেও লেবাননে ইসরায়েলের বিমান হামলা, নিহত অন্তত ২২