পদ্মার চরে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষে সফলতা
লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি : নাটোরের লালপুরে পদ্মা চরে প্রথমবারের মত গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ রোপণ করে ভাল ফলনের আশা করছেন চাষিরা। দু’দফা বন্যার পর স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শ ও প্রণোদনায় পদ্মা চরের কৃষকরা তাদের জমিতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ রোপণ করেছেন। পেঁয়াজের গঠন দেখে ভাল ফলনের আশায় কৃষকের মুখে খুশির ঝিঁলিক দেখা যাচ্ছে।
সরকার থেকে সার, বীজ ও প্রণোদনার অর্থ পাওয়াসহ অসময়ের চাষকৃত এ পেঁয়াজের ভালো বাজারমূল্যসহ নানা কারণে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ আবাদে আগ্রহ প্রকাশ করছেন চরাঞ্চলের কৃষকরা। লালপুরের বিলমাড়িয় চরের পেঁয়াজ চাষি শরিফ আলী এবার পদ্মার চরে ৮ বিঘা জমিতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের চাষ করেছেন।
কৃষক শরিফ আলী বলেন, আর কদিন পর চরের এই পেঁয়াজ তুলতে শুরু করবেন তিনি। এই গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ বিক্রি করে দ্বিগুণ টাকা আয় করবেন তারা। পদ্মা চরের গ্রীষ্মকালীন এই পেঁয়াজ দেখে স্থানীয় কৃষি বিভাগও খুশি হয়েছেন।
তার এই পেঁয়াজ দেখে অনেক কৃষক আগামীতে এই পেঁয়াজের চাষের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সরকারের থেকে উন্নতজাতের বীজ, সার ও প্রণোদনার অর্থসহ নানা সহযোগিতা পাওয়ায় এ আগ্রহ বাড়ছে। বড় আকারের এই পেঁয়াজের গঠন দেখে ভাল ফলন ও লাভের আশা করছেন কৃষকরা।
সরেজমিনে পদ্মার চরাঞ্চলে গিয়ে দেখা যায়, পদ্মা নদীর চরের প্রায় আড়াই হাজার হেক্টর বিস্তীর্ণ জমিতে নানা ফসল আবাদ করেন স্থানীয় কৃষকরা। কেউ নিজেদের জমিতে আবার কেউ বা লিজ নিয়ে জমিতে সবজি ও আখসহ নানা ফসলের চাষ করেন। চলতি মৌসুমে দু’দফা বন্যার পরও স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শ ও সহযোগিতায় পদ্মার চরে প্রথমবারের মত গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ রোপণ করেছেন অনেকেই।
আরও পড়ুনকৃষি বিভাগের তথ্য বলছে, এবার উপজেলায় ১৫০ জন কৃষককে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। এজন্য একজন কৃষককে এক কেজি বীজ, সার, শেড তৈরির জন্য বাঁশ ও পলিথিন ছাড়াও অর্থ দেওয়া হয়েছে, যাতে শ্রমিক নিয়ে কাজ করতে পারেন। গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের বীজতলা তৈরির উপযুক্ত সময় শ্রাবণ ও ভাদ্র মাস। কোনো কোনো সময় তা গড়িয়ে আশ্বিনেও চলে যায়।
লালপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রীত কুমার হোড় বলেন, কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে লালপুর উপজেলায় এবার প্রথমবারের মত প্রায় ১৫০ জন কৃষককে প্রণোদনা দিয়ে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। বিশেষ করে পদ্মার চরের পলিমিশ্রিত জমিতে এই পেঁয়াজ চাষ করে ভাল ফলনের আশা করা হচ্ছে।
সরকার থেকে সার, বীজ ও প্রণোদনার অর্থ পাওয়াসহ অসময়ের চাষকৃত এ পেঁয়াজের ভালো বাজারমূল্যসহ নানা কারণে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ আবাদে আগ্রহপ্রকাশ করছেন চরাঞ্চলের কৃষকরা। লালপুরে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ বৃদ্ধি পেলে যেমন কৃষকদের সমৃদ্ধ করবে, তেমনি বাজার নিয়ন্ত্রণে থাকবে পাশাপাশি ভোক্তাদের চড়া দামে পেঁয়াজ কিনতে হবে না বলে জানান এই কর্মকর্তা।
মন্তব্য করুন