বাংলাদেশ আর কারও ষড়যন্ত্রের সামনে পরাস্ত হবে না: মাহফুজ আলম
ঢাকা : দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে ‘দায়িত্ব ও দরদ দেখানোয়’ ছাত্র-জনতাকে অভিবাদন জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। তিনি বিশেষ ধন্যবাদ জানিয়েছেন আলেম ও মুসলিম নেতাদের। আজ বুধবার (২৭ নভেম্বর) বিকেলে মাহফুজ আলম তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে বলেন, ‘বাংলাদেশ আর কারও ষড়যন্ত্রের সামনে পরাস্ত হবে না। ’
মাহফুজ আলম তার পোস্টে বলেন, ‘ছাত্র-জনতাকে অভিবাদন! দায়িত্ব ও দরদের নজির দেখিয়ে আপনারা বাংলাদেশকে গর্বিত করেছেন। বাংলাদেশ আর কারও ষড়যন্ত্রের সামনে পরাস্ত হবে না। ইনশাআল্লাহ। ’
তিনি বলেন, “আমাদের ব্যক্তি ও সমষ্টির ‘শক্তি’ সাধনায় দরদী ও দায়িত্ববান হয়ে রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী হয়ে ওঠা মোক্ষ। আমাদের এ অভ্যন্তরীণ শক্তি যে কোনো বহিঃশত্রুকে পর্যুদস্ত করবে। আমরা আর কলোনাইজেবল (উপনিবেশযোগ্য) হবো না। ’
আলেম-ওলামাদের ধন্যবাদ জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘বিশেষ ধন্যবাদ প্রাজ্ঞ আলেম ও মুসলিম নেতৃবৃন্দের প্রাপ্য। আপনারা এ গণঅভ্যুত্থানের পক্ষে বাঙালি মুসলমানকে দায়িত্বশীল আচরণে অনুপ্রাণিত করেছেন। ধর্ম, বর্ণ ও লিঙ্গ নির্বিশেষে সব নাগরিকের সমান অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে আপনাদের আজ ও আগামীর প্রাজ্ঞ উদ্যোগ বাংলাদেশ রাষ্ট্রে আপনাদের ইজ্জত ও শরিকানা নিশ্চিত করবে। ’
‘হঠকারিতা, নেতিবাচকতা ও ভাঙনের মানসিকতা থেকে বের হয়ে আমাদের সৃজনশীল ও ইতিবাচক মানসিকতায় এ রাষ্ট্রকে গড়তে হবে। এ রাষ্ট্র পরিগঠন করলেই কেবল জুলাই শহিদানসহ শহিদ আলিফের শাহাদাত অর্থবহ হয়ে উঠবে’, যোগ করেন মাহফুজ আলম।
আরও পড়ুনগত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর চট্টগ্রাম নগরের নিউমার্কেট মোড়ের জিরো পয়েন্টে স্তম্ভের ওপর একটি জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে ছাত্র-জনতা। এর মধ্যে ২৫ অক্টোবর বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের উদ্যোগে লালদীঘির মাঠে একটি মহাসমাবেশ হয়। সেদিন জাতীয় পতাকার ওপর ধর্মীয় গোষ্ঠী ইসকনের গেরুয়া রঙের ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন করে সমাবেশে অংশ নেওয়া লোকজন। এ নিয়ে দেশজুড়ে সমালোচনা তৈরি হয়।
পরে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগ এনে চট্টগ্রামের কোতয়ালী থানায় একটি রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করেন বিএনপি নেতা ফিরোজ খান (পরে বহিষ্কৃত)। সেই মামলায় গত সোমবার (২৫ নভেম্বর) ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয় ইসকনের সাবেক নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে। পরে তাকে চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) তাকে আদালতে তোলা হলে বিচারক কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আদালতে চিন্ময়কে তোলার সময় সেখানে জড়ো হন তার অনুসারী-সমর্থকরা। এক পর্যায়ে আদালতের অদূরে তারা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান। সেসময় সাইফুল ইসলাম আলিফ নামে রাষ্ট্রপক্ষের এক আইনজীবীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দিলে মাহফুজ আলম তার ফেসবুক পেজে ‘গণ-অভ্যুত্থান ও বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার্থে’ দেশবাসীকে শান্ত থাকার আহ্বান জানান। ওই ফেসবুক পোস্টে তিনি আরও লেখেন, ‘সরকার দ্রুতই সকল রাষ্ট্রদ্রোহী ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে’।
মন্তব্য করুন