বগুড়ায় আমনের ভালো ফলন ও দামে খুশি কৃষক
শাওন রহমান : চলতি রোপাআমন মৌসুমে ধানের ভালো ফলন তুলছেন বগুড়ার কৃষকরা। কাঙ্খিত ফলনের সাথে প্রত্যাশিত দামে খুশি জেলার আমন চাষিরা। গত বছর বগুড়ায় হেক্টর প্রতি ৩.৩ মেট্রিকটন ফলন পাওয়া গেলেও এবার পাওয়া যাচ্ছে সাড়ে তিন মেট্রিকটন।
বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, চলতি মৌসুমে এ জেলায় আমনের প্রত্যাশিত ফলন হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (০৫ ডিসেম্বর) পর্যন্ত বগুড়ার মাঠে থাকা ৭৮ শতাংশ জমির ধান কাটা হয়েছে। এখন পর্যন্ত হেক্টর প্রতি ৩.৫৩ মেট্রিকটন ফলন পাওয়া গেছে। সেই হিসেবে বগুড়ায় এবার আমন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।
বগুড়া সদর উপজেলার শ্যামবাড়িয়া এলাকার কৃষক আব্দুল গফুর বলেন, জমি প্রস্তুত, চারা, সার-কীটনাশক, শ্রমিক খরচ ও জমি পত্তন খচরসহ এক বিঘা জমিতে ধান উৎপাদনের খরচ হয়েছে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা। এবার এক বিঘা জমির খড় বিক্রি হচ্ছে সাড়ে চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা। এখন পর্যন্ত বিঘা প্রতি প্রায় ১৫ মণ ধান পাওয়া গেছে। স্থানীয় হাট-বাজারে বিভিন্ন মান ও জাতের প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে ১২শ’ থেকে ১৪শ’ টাকা। সেই হিসেবে বিঘা প্রতি সব খরচ বাদ দিয়ে ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা লাভ থাকছে।
আরও পড়ুনকৃষক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এবার আমন মৌসুমের শুরু থেকেই প্রত্যাশিত বৃষ্টি ছিল। পাশাপাশি এবার কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকায় ভালোভাবেই ধান ঘরে তোলা যাচ্ছে। এই এলাকায় বিঘা প্রতি ১৩ থেকে ১৫ মণ পর্যন্ত ফলন পাওয়া যাচ্ছে। ধান উৎপাদনের খরচ বেড়েছে, তবে খড়ের বাড়তি দামের কারণে বিঘা প্রতি ভালোই লাভ হবে বলে মনে হচ্ছে।
আরেক কৃষক ছানোয়ার হোসেন বলেন, এবার আমন ধান রোপণ মৌসুমজুড়েই প্রয়োজনীয় বৃষ্টি ও আবহাওয়া ছিল অনুকূলে ফলে ফলন ভালো হয়েছে। ধানের বেপারিরা বাড়িতে এসে শুকনো ও চিকন ধান ১৪শ’ টাকা মণ পর্যন্ত কিনছেন। বাড়ি থেকে ধান নিয়ে যাওয়া পরিবহন ও হাটের খাজনা খরচও সাশ্রয় হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বগুড়া সূত্রে জানা গেছে, বগুড়ায় চলতি রোপাআমন মৌসুমে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৫৫২ হেক্টর জমিতে ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও অর্জিত হয় ১ লাখ ৮৩ হাজার ৪৯২ হেক্টর। বগুড়ার মাঠে থাকা রোপাআমনের মধ্যে এখন পর্যন্ত ৭৮ শতাংশ জমির ধান কাটা হয়েছে। হেক্টর প্রতি ফলন পাওয়া গেছে ৩.৫৩ মেট্রিকটন। এই কার্যালয়ের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফরিদুর রহমান জানান, বগুড়ার চাষ হওয়া রোপাআমন ধানের বেশিরভাগই উচ্চ ফলনশীল এবং হাইব্রিড জাতের। এছাড়াও স্থানীয় ও সুগন্ধি জাতের ধানও রয়েছে। তিনি আরও বলেন, এবার আমন চাষে আবহাওয়া ছিল অনুকূলে, চলতি বছর কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকায় কৃষকরা স্বস্তিতে ধান ঘরে তুলছেন।
মন্তব্য করুন