কুড়ি বছর পর একি দেখলাম মাদক অধিদপ্তরে!
রুদ্র রাসেল : মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের নতুন সরকারের মহাপরিচালক খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান, এনডিসি। অর্থাৎ গোটা দেশে মাদক নিয়ন্ত্রণের প্রধান ব্যক্তি তিনি। তাকে পাওয়া কি আতটা সহজ!
আগে যারা ছিলেন তাদের বেশিরভাগের দেখা পাওয়া ছিল আমাবশ্যার চাঁদ কিংবা লটারিতে মার্কিন ভিসা জেতার মতো দুরুহ। আর কথা বলা সে অনেক সাংবাদিকের জন্যেও ছিল যেন সৌভাগ্য! আমি এক মহাপরিচালকের রুমে ঢুকে সরাসরি প্রটোকল ছাড়া বক্তব্য নিয়েছিলাম আট দিন ঘুরে, সাক্ষী ক্রাইম রিপোর্টার সুজন কৈরী। এরপরেও পিআরও কত কি বলে গেলো ফোনে, বক্তব্যের রেকর্ড পাঠাতে হলো, আরো কত মনকালাকালি।
তবে নোবেলজয়ী সরকার প্রধান প্রফেসর ড ইউনূস নেতৃত্বাধীন নতুন স্বাধীনতার নতুন বাংলাদেশেও কি সেই হাইপ্রোফাইল অফিসার ডিজি- নাকি প্রজাতন্ত্রের সেবক চেয়ারে বসেছে, কতটুকু সাংবাদিকবান্ধব- তা দেখতে সরেজমিনে মঙ্গলবার বিকাল পাঁচটার দিকে ডিআরইউ থেকে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে ছুটলাম তিনজন সিনিয়র সাংবাদিক, যারা ক্র্যাব ও ডিআরইউর মতো প্রেজটিজিয়াস রয়েল সাংবাদিক সংগঠনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, অতীতেও একাধিকবার দিয়েছেন।
পৌঁছতে হাঁটা পথ তিন মিনিটের, এর মধ্যে আমাদের নানান মন্তব্য। তবে সেই ধারণা একদম কেটে গেলো, দেখা হলো এক সাদাসিধে সরল মিশুক অভিব্যক্তির কর্মকর্তার সঙ্গে। চা খেতেও সমাদর করলেন তখন সরকারি অফিস ঘন্টা শেষ, ঘড়ি বলছে সাড়ে পাঁচটা, আকাশ বলছে গোধূলি।
এর আগেও তাকে কয়েকটি মিটিং করতে দেখেছি।
অবশেষে বদলে গেলাম আমরা, মনস্থির করলাম শুধু রিপোর্ট করেই নয়, কার্যত মাদক নির্মূলে আমরাও পাশে দাঁড়াবো সরাসরি, ভয়দ্বিধাহীন চিত্তে। গত কুড়ি বছর এ দপ্তরে আনাগোনা, কখনো এমন করে বদলাইনি আমরা, বা আমাদের বদলাতে পারেননি কোনো ডিজি সাহেব।
একি দেখলাম, কেউ ফেরে না না দেখে তারে, গেলেই দেখা হবেই, বড় সম্ভাবনা জাগলো মনে, এবার হয়তো মাদকের যুদ্ধ জয় করা হবে, এ আশা জাগালেন তিনি প্রথম পরিচয়ে।
অনেক ভালোবাসা, পাশে আছি মাদকমুক্ত দেশের অপেক্ষায়, পাশে আছে সাংবাদিক সমাজ, এগিয়ে চলুন, প্রধান উপদেষ্টা ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ফলপ্রসূ নির্দেশনা বাস্তবায়নের পথে, যে প্রত্যয়ের দৃঢ়তা মুগ্ধ করেছিল সেই সাত মিনিটের আলোচনা, যেন সাত শতাব্দীর পণ।
হাসলেন, হাসালেনও। সত্যি বলছি, একজন সাধারণ মানুষ গিয়েই দ্যাখেন, কতটা মিথ্যে বলেছি এই আমি।
লেখক : সাংবাদিক, কবি
চিফ রিপোর্টার, বাংলাদেশের খবর, ডিজিটাল এডিশন।
সাবেক চিফ রিপোর্টার, ঢাকা টাইমস
সাবেক দপ্তর সম্পাদক, বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন (ক্র্যাব )
মন্তব্য করুন