আজ গাইবান্ধা পাক হানাদার মুক্ত দিবস
গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি : একাত্তরের ৩ মার্চ ঢাকায় স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলনের পর থেকে দেশব্যাপী পাকিস্তানি পতাকা পুড়িয়ে বাংলাদেশের পতাকা উড়ানো শুরু হয়, যা স্বাধীনতা আন্দোলনের অংশে পরিণত হয়।
ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে ৭ই মার্চ ঐতিহাসিক ভাষণের পর স্বাধীনতাকামী মানুষের মুক্তির আকাঙ্খা তীব্রতর হতে থাকে। ২৩ মার্চ পাকিস্তানের প্রজাতন্ত্র দিবসে সর্বত্র পাকিস্তানি পতাকা উড়ানোর নির্দেশ দেয়া হয়। আর ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ঘোষণা করে দেশ জুড়ে প্রতিরোধ দিবস।
ঐদিন গাইবান্ধায় পাকিস্তানি পতাকার পরিবর্তে স্বাধীন বাংলার পতাকা উড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ২৩ মার্চ সকাল থেকে গাইবান্ধার পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে ছাত্র জনতার সমাবেশের প্রস্তুতি চলতে থাকে।
দুপুরে ছাত্রলীগের তৎকালীন মহকুমা সভাপতি এম এন নবী লালুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তৃতা করেন আওয়ামী লীগ নেতা নির্মলেন্দু বর্মন, মোহাম্মদ খালেদ, ছাত্রলীগের মহকুমা সাধারণ সম্পাদক নাজমুল আরেফিন তারেক, সৈয়দ শামস-উল আলম হিরু, সদরুল কবীর আঙ্গুর, আমিনুল ইসলাম ডিউক প্রমুখ।
বক্তৃতা শেষে সমাবেশেই পাকিস্তানি পতাকা পুড়িয়ে স্বাধীন বাংরার পতাকা উড়ানো হয়। এ সময় এম এন নবী লালু পতাকা ধরে থাকেন এবং নাজমুল আরেফিন তারেক পতাকায় অগ্নিসংযোগ করেন।
পরে এম এন নবী লালু, নাজমুল আরেফিন তারেক, রিয়াজুল হক বিরু, আব্দুল হাদি মুন্না, শাহ শরিফুল ইসলাম বাবলু, আব্দুস সালাম, প্রয়াত নির্মলেন্দু বর্মন ভাইয়া ও আরো অনেকে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন।
এরপর দীর্ঘ ৯ মাস মুক্তিযুদ্ধ শেষে ২৭ নভেম্বর ১৯৭১ মুক্তিযোদ্ধারা খবর পান পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী গাইবান্ধা ছেড়েছে। ওইদিন তারা এগিয়ে এসে রসুলপুরে অবস্থান নেন। কিন্তু পরদিন ওই এলাকা ও মোল্লারচরে বোমা বর্ষণ করে হানাদার বাহিনী। এতে আহত হন বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা।
আরও পড়ুন৭ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার কোম্পানী কমান্ডার মাহবুব এলাহী রঞ্জু (বীর প্রতীক) এর নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল ফুলছড়ি উপজেলার ফজলুপুর ইউনিয়নের কালাসোনার চর থেকে আজ বালাসীঘাট হয়ে গাইবান্ধা শহরে প্রবেশ করে।
তাদের আগমনের সংবাদ পেয়ে গাইবান্ধা শহরের স্টেডিয়ামে অবস্থিত পাক হানাদার বাহিনীর সদস্যরা তল্পিতল্পা গুটিয়ে রংপুর ক্যান্টনমেন্টের উদ্দেশ্যে পালিয়ে যায়। এর আগের দিন বিকেলে বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ বাহিনীর বিমান গাইবান্ধা রেলস্টেশনের উত্তর পাশে বোমা ফেলে।
১৯৭১ সালের এদিনে কোম্পানি কমান্ডার মাহবুব এলাহী রঞ্জুর (বীরপ্রতীক) নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল ফুলছড়ির ফজলুপুর চর থেকে বালাসীঘাট হয়ে গাইবান্ধায় প্রবেশ করে।
মুক্তিযোদ্ধাদের আগমনের সংবাদ পেয়ে রাতেই গাইবান্ধা শহরের স্টেডিয়ামে অবস্থিত পাক হানাদার বাহিনীর সদস্যরা তাদের তল্পিতল্পা গুটিয়ে রংপুর ক্যান্টনমেন্টের উদ্দেশ্যে পালিয়ে যায়।
মুক্তিযোদ্ধারা তৎকালীন এসডিও মাঠে (বর্তমান স্বাধীনতা প্রাঙ্গণ) সমবেত হন। এখানে গাইবান্ধাকে হানাদার মুক্ত ঘোষণা করে লাল সবুজের পতাকা উত্তোলন করা হয়। ৭ ডিসেম্বর গাইবান্ধা পাক হানাদার মুক্ত হয়।
মন্তব্য করুন