মার্কেট-ফুটপাতে জমে উঠেছে বেচাকেনা
হঠাৎ তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় গরম কাপড়ের কদর বেড়েছে
স্টাফ রিপোর্টার : হঠাৎ করেই সর্বনিম্ন এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় শীতে কেঁপে উঠছে বগুড়ার মানুষ ও অন্যান্য প্রাণিকূল। দিনভর সূর্যের দেখা মেলেনি। এর সাথে বিকেলের গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাতে জেঁকে বসেছে শীত। গতকাল রোববার রাত থেকে আজ সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সকাল পর্যন্ত ঘন কুয়াশার কারণে দেখা যাচ্ছিল না কোন কিছু। সকালবেলা সব যানবাহনের হেড লাইট জ্বালিয়ে চলতে দেখা গেছে।
দিনের অবস্থা দেখে এতদিন শীতের জন্য অপেক্ষা করা ব্যবসায়ীরা নড়েচড়ে বসেছেন। শীতার্ত মানুষও ছুটছেন গরমের কাপড়ের দোকানে। দিনভর কাপড় বিক্রি বাড়লেও সন্ধ্যার পর দোকানে তো বটেই মৌসুমী বিক্রেতাদের ভ্যানের কাপড় কিনতে হুমরি খেয়ে পড়েছেন শীতার্ত মানুষ। আজ সোমবার (৯ ডিসেম্বর) দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে তেঁতুলিয়ায় ১০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার বগুড়ার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামী কয়েকদিন তাপমাত্রা আরও কমবে বলে করতোয়া’কে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। গত কয়েক হলো দিনে কড়কড়ে রোদ এবং সন্ধ্যায় শীতের আমেজ বেশ উপভোগ করছিল মানুষ। কিন্তু আজ সোমবার (৯ ডিসেম্বর) হঠাৎ করেই শীতের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে প্রকৃতির সর্বত্রই।
এমন অবস্থায় বগুড়ার বিভিন্ন স্থানে শীতের তৈরি পোশাকের চাহিদা বেড়েছে। তীব্র শীতের প্রস্তুতি হিসেবে মার্কেট, শপিং মল, ফুটপাতের দোকানে ভিড় করে প্রয়োজনীয় গরম পোশাক, জ্যাকেট, সোয়েটার, শাল, টুপি, মোজা, হুডি, মাফলার কিনছেন। শীত মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই বেশিরভাগ ব্যবসায়ী গরম পোশাকের স্টক বাড়িয়ে রেখেছেন।
দেশীয় পোশাকের পাশাপাশি ভারত, চীন ও থাইল্যান্ড থেকে আমদানি করা সোয়েটার, জ্যাকেট, কম্বলসহ বিভিন্ন শীতবস্ত্র বাজার ছেয়ে গেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর গরম কাপড়ের দাম বেশি। এর কারণ হিসেবে আমদানি খরচ, পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি এবং ডলার রেটের তারতম্যকে দায়ী করছেন তারা।
আরও পড়ুনগতকাল রোববার দুপুরের পর পরিবর্তিত আবহাওয়ায় শহরে লোক সমাগম কমে যায়। হঠাৎ করে শীত বাড়ার কারণে শহরের শপিংমলগুলোতে উচ্চবিত্ত বা মধ্যবিত্তরা শীতের পোশাক কিনছেন। আর নিম্নআয়ের মানুষরা হকার্স মার্কেট, ফুটপাতের দোকানে ভিড় করছেন। শপিংমল, মার্কেট ও ফুটপাতে কেনাকাটায় দামের তারতম্য।
ফুটপাতে ১৫০-১০০০ টাকার মধ্যে সোয়েটার, হুডি পাওয়া গেলেও ব্র্যান্ডের দোকান, শপিংমল ও মার্কেটে হুডি, জ্যাকেট ও ব্লেজারের দাম ১৫০০-৫০০০ টাকা পর্যন্ত হাঁকছেন বিক্রেতারা। অন্যদিকে ফুটপাতের ভ্রাম্যমাণ দোকানে তাই দরদাম করে সাশ্রয়ী দামে কাপড় কেনার চেষ্টা করছেন। পুরাতন কাপড়ের দোকানে ছোটদের শীতের কাপড় পাওয়া যাচ্ছে মান অনুযায়ী ২০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা মধ্যে। আবার বড়দের কাপড় পাওয়া যাচ্ছে ৫০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত।
বগুড়ার কলোনী এলাকার গৃহবধূ সালমা সুলতানা এসেছেন স্বামী ও ছেলেমেয়ের জন্য শীতের কাপর কেনার জন্য। তার সাথে কথা হয় শহরের সাতমাথায়। তিনি করতোয়া’কে বলেন, ছেলে মেয়ের বড় হচ্ছে। তাই প্রতিবছর শীতের কাপড় কিনতে হয়। কিনতে এসে দেখতে পাচ্ছি গতবারের তুলনায় প্রতিটি হুডি বা জ্যাকেটের দাম ২০০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত বেশি চাওয়া হচ্ছে। আগামীতে শীত আরও বাড়বে তাই ক্রেতারা দাম ছাড়ছেন না।
নিউমার্কেট, রানাপ্লাজা ও হকার্স মাকের্টের গরম পোশাকের বিক্রেতারা বলেন, শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গরম কাপড়ের চাহিদাও বেড়েছে। আর সামনের দিনে শীত যত বাড়বে, গরম পোশাকের চাহিদাও তত বাড়বে।
এখনই ফুটপাত থেকে শুরু করে বড় বড় ব্র্যান্ডের দোকান সব জায়গায় বেচাকেনা জমজমাট হয়ে উঠেছে। তাতে করে তারা এই মৌসুমকে কেন্দ্র করে শীতের কাপড়ের ওপর যে লগ্নি করেছেন তা উঠে আসবে এবং সেই সাথে লাভবানও হবেন বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
আবাহওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, আজ সোমবার (৯ ডিসেম্বর) বগুড়ার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধান কমে যাওয়ায় শীত বেড়েছে। আগামীকাল থেকে তাপমাত্রা আরও কমবে বলে করতোয়া’কে জানিয়েছেন সূত্রটি। সেই সাথে কুয়াশাতে ঢেকে থাকবে চারিদিক।
মন্তব্য করুন