বগুড়ায় ছাত্রদল নেতাকে আটক করে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়ে ফেরৎ, এসআই তরিকুল ক্লোজড
স্টাফ রিপোর্টার : বগুড়ায় ছাত্রদলের সাবেক নেতা রুবেল হোসেনকে আটক করে ছেড়ে দেয়ার নামে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েও পার পেলেন না সদর থানার এসআই মো: তরিকুল ইসলাম। অবশেষে ঘুষের ৫০ হাজার টাকা ফেরৎ এবং ওই ছাত্রদল নেতাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তবে শেষ রক্ষা হয়নি তার। এ ঘটনায় এসআই তরিকুলকে বগুড়া পুলিশ লাইন্সে ক্লোজড করা হয়েছে।
রুবেল শিবগঞ্জ উপজেলার কিচক ইউনিয়নের বেলাই গ্রামের গাজিউল ইসলামের ছেলে। তিনি ২০১৮ সালে অনুমোদিত জেলা ছাত্রদলের সদস্য ছিলেন। বগুড়া জজকোর্টের পিপি এড. আব্দুল বাছেদ জানান, রুবেল ও তার বাড়িও একই এলাকার। রুবেল জেলা ছাত্রদলের নির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য। গতকাল মঙ্গলবার রাত ৩ টার দিকে শহরের জামিল নগর থেকে আটক করেন এসআই তরিকুল ইসলাম।
এরপর তাকে থানায় এনে হাজতে ঢোকানো হয়। সেইসাথে এক লাখ টাকা ঘুষ দিলে তাকে ছেড়ে দেয়া হবে বলে রুবেলের আত্মীয় সাইফুলকে বলা হয়। এরপর এ নিয়ে চলে দরকষাকষি। এক পর্যায়ে রুবেলের বাবা গাজিউল ৫০ হাজার টাকা দিতে চাইলে এসআই তরিকুল রাজি হন। পরে রুবেলের আত্মীয় সাইফুল ইসলাম এসআই তরিকুলকে ৫০ হাজার টাকা রুবেলের বাবার কাছ থেকে এনে দেন। কিন্তু তারপরও রুবেলকে ছেড়ে দিতে গড়িমসি করা হলে বিষয়টি তাকে জানানো হয়।
এরপর তিনি এসআই তরিকুলের সাথে যোগাযোগ করে বলেন, কি কারণে রুবেলকে আটক করা হয়েছে তা জানতে চান। এ সময় এসআই তরিকুল তাকে বলেন, আটক রুবেল নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের গেপ্তারকৃত জেলা সভাপতি সজীব সাহার সহযোগী। সজীব সাহার সাথে ফেসবুকে তার ছবি রয়েছে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় রুবেল হামলায় জড়িত।
এই কারণে তাকে আটক করা হয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে এ ঘটনার প্রমাণ মেলেনি। এক পর্যায়ে তিনি নিজেই থানায় যান এবং রুবেলকে দ্রুত ছেড়ে দেয়াসহ ঘুষের ৫০ হাজার টাকা ফেরৎ দিতে এসআই তরিকুলকে বলেন। এরপর আজ বুধবার (১৮ নভেম্বর) বিকেল ৫ টার দিকে এসআই তরিকুল ঘুষের ৫০ হাজার টাকা রুবেলের আত্মীয় সাইফুলের মাধ্যমে টাকা ফেরৎ দেন এবং রুবেলকে ছেড়েও দেন।
আরও পড়ুনএব্যাপারে এসআই তরিকুল ঘুষের ৫০ হাজার টাকা লেনদেনের বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশে তাকে আটক করা হয়েছিল। বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি) এসএম মঈনুদ্দিন বলেন, রুবেলের নামে ছাত্র আন্দোলনের সময় ছাত্রলীগের সাথে থেকে সাধারণ ছাত্রদের উপর হামলার অভিযোগ করা হয়েছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের পক্ষ থেকে। একারণে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে মঙ্গলবার রাতে তাকে আটক করা হয়।
পরে যাচাই বাছাই করে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। ৫০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়ে ফেরত দেয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শুনেছি এসআই তরিকুল ৫০ হাজার টাকা নিয়ে পরে ফেরৎ দিয়েছেন। এ ঘটনায় তাকে পুলিশ সুপারের নির্দেশে তাকে পুলিশ লাইন্সে ক্লোজড করা হয়েছে।
ঘটনা জানতে পেরে বগুড়া জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুল বাছেদ থানায় গেলে ঘুষের টাকা অন্যের মাধ্যমে ফেরত দিয়ে থানা থেকে সটকে পড়েন এসআই তরিকুল ইসলাম। আজ বুধবার (১৮ নভেম্বর) বিকেলে বগুড়া সদর থানায় এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি পিপি বাছেদ পুলিশ সুপারকে জানালে এসআই তরিকুলকে সাথে সাথে থানা থেকে পুলিশ লাইনে ক্লোজড করেছেন।
মন্তব্য করুন