মাছের ঐতিহ্য হারিয়ে চলনবিল এখন মধুর বিল
চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি : মাছের ঐতিহ্য হারিয়ে এখন মধুর বিলে পরিণত হয়েছে চলনবিল। পাবনা, নাটোর ও সিরাজগঞ্জের ৮ উপজেলার মাঠগুলোতে এখন সরিষার হলুদ ফুলের সমারোহ। হলুদ ফুলে নেচে-নেচে, ছুটে-ছুটে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছে বিভিন্ন এলাকা থেকে বিলে আসা খামারিদের মৌমাছি।
সরিষা ক্ষেতের পাশে খামার স্থাপন করে মধু সংগ্রহের প্রস্তুতি নিচ্ছেন খামারিরা। ইতোমধ্যে কিছু এলাকায় মধু সংগ্রহ শুরু হয়েছে আগাম বোনা সরিষা ক্ষেতে। খামারিরা আশা করছেন এবার চলনবিল এলাকায় ৪৫ কোটি টাকার মধু উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।
কৃষি অফিসগুলোর তথ্য মতে, চলনবিল এলাকার উপজেলাগুলোতে প্রতিবছর প্রায় দেড় লাখ হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলনশীল বারি-৯, ১৪, ১৫, ১৭, ১৮ ও বীনা-৪, ১১ সহ স্থানীয় জাতের সরিষা চাষ হয়। ব্যাপক এলাকা জুড়ে সরিষা চাষ হওয়ায় দেশের বিভিন্ন এলাকার মৌ খামারিরা মধু সংগ্রহের উদ্দেশ্যে অগ্রহায়ণের শেষ ভাগে চলে আসেন চলনবিল এলাকায়।
প্রতিবছর অগ্রহায়ণ মাসের শেষদিকে চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া, ফরিদপুর, বড়াইগ্রাম, গুরুদাসপুর, তাড়াশ, সিংড়া, উল্লাপাড়ার পশ্চিমাংশসহ এর আশপাশ এলাকার মাঠগুলো ছেয়ে যায় হলুদ সরিষা ফুলে। এসময় পাবনা নাটোর সিরাজগঞ্জের খামারিদের পাশাপাশি সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, নড়াইল, গাজীপুর, রংপুর, দিনাজপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও ও নীলফামারীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আট শতাধিক মৌ খামারি মধু সংগ্রহের জন্য চলনবিল এলাকার মাঠগুলোতে এসে অস্থায়ী আবাস গড়ে তোলেন। সরিষা ক্ষেতের পাশে মৌবক্স স্থাপন করে কয়েকদিন পর পর মধু সংগ্রহ করেন।
আরও পড়ুননর্থবেঙ্গল হানি কমিউনিটি এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম জানান, চলনবিলে প্রায় দেড় লাখ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়। প্রতিবছর আট শতাধিক খামারি চলনবিলের বিভিন্ন মাঠে সরিষার মধু সংগ্রহ করেন। আবহাওয়ার ওপর নির্ভর করে মধুর উৎপাদন। অধিক শীত, কুয়াশা, বৃষ্টি হলে মধুর উৎপাদন কমে যায়।
চাটমোহর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন জানান, চলতি মৌসুমে কেবল চাটমোহরেই ৮ হাজার ৩শ’ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় ৫ হাজার ৫শ’ কৃষককে বিনামূল্যে সার ও বীজ সরবরাহ করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন