জয়পুরহাটে এবার ২শ’ টন গুড় উৎপাদনের আশা
কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি : উত্তরাঞ্চলে জেঁকে বসেছে শীত। সীমান্তবর্তী জেলা জয়পুরহাটে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করছেন গাছিরা। রস থেকে তৈরি করা হচ্ছে সুস্বাদু গুড়। শীতের কুয়াশা ভেজা ভোরের আগেই রস ভর্তি মাটির কলসি গাছ থেকে নামানোর পর টিনের বড় তাওয়ায় জ্বাল দিয়ে পাটালি ও লালি গুড় তৈরি করা হচ্ছে।
মান ভালো হওয়ায় দূর-দূরান্ত থেকে গুড় কিনতে আসছেন সাধারণ ক্রেতা ও ব্যবসায়ীরা। আবার অনেকেই আসছেন খেজুরের রস পান করতে। তবে নিপা ভাইরাসের কারণে কাঁচা রস না খেয়ে ফুটিয়ে বা গুড় করে খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন জয়পুরহাটের সিভিল সার্জন অফিস।
সপ্তাহখানেক ধরে চলছে তীব্র শীত। ঘন কুয়াশার সাথে হিমেল হাওয়া বাড়িয়ে দিয়েছে শীতের প্রকোপ। এ মৌসুমে বিভিন্ন জেলা থেকে পাঁচ শতাধিক গাছি জয়পুরহাটে এসেছেন খেজুরের রস সংগ্রহে। তারা জেলার বিভিন্ন স্থানে প্রায় ১৫ হাজার খেজুর গাছ ভাড়া নিয়ে রস সংগ্রহ করছেন। চার মাস ধরে চলবে এই রস সংগ্রহ। চলতি মৌসুমে এ জেলায় ২শ’ মেট্রিক টন গুড় উৎপাদনের আশা করছে কৃষি বিভাগ।
রাজশাহী থেকে জয়পুরহাট শহরের কুঠিবাড়ী ব্রিজ এলাকায় এসেছেন গাছি আনছার আলী। তিনি বলেন, কার্তিক মাসে আমরা জয়পুরহাটে এসে বিভিন্ন এলাকায় খেজুর গাছ ভাড়া নিয়ে হাঁড়ি লাগিয়েছি। পাঁচজন মিলে ৩৫০টি খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করছি। প্রতিদিন ৩০ থেকে ৩৫ মণ রস সংগ্রহ হয়। প্রতিদিন গড়ে গুড় উৎপাদন হয় দুই থেকে তিন মণ। পুরো মৌসুমে গুড় সংগ্রহ হবে প্রায় ৫শ’ মণ। এখানে বিক্রির পর রাজশাহীতেও গুড় পাঠানো হয়।
আরও পড়ুনএকই জেলার গাছি হেলাল বলেন, আমাদের মতো আরও অনেক গাছিরা জয়পুরহাটে এসে গাছ ভাড়া নিয়ে রস সংগ্রহের পর গুড় তৈরি করছেন। এখানে ৪শ’ টাকা কেজি দরে গুড় বিক্রি হচ্ছে। খেজুরের রস বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা লিটার। সবমিলে লাভ ভালোই টিকছে।
জয়পুরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মজিবুর রহমান বলেন, জেলায় এবার ১৫ হাজার খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করছেন গাছিরা। জেলায় এবার ২শ’ মেট্রিক টন গুড় উৎপাদন হবে বলে আশা করছি। বাদুর বা এই জাতীয় প্রাণি রসের সংস্পর্শে যাতে করে না আসে এজন্য আমরা গাছিদের পরামর্শ দিয়ে আসছি।
জয়পুরহাট সিভিল সার্জন ডা. রুহুল আমিন বলেন, রাতে খেজুর গাছের রস বাদুর খায়। এই রস কাঁচা খেলে নিপা ভাইরাসের আশঙ্কা থাকে, কোন ভাবেই কাঁচা খেজুর রস পান করা যাবে না। কাঁচা রস কেউ যাতে না পান করে এজন্য গাছিদের ও এলাকায় মানুষদের সতর্ক করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন