গাজীপুরে কিশোর গ্যাং সদস্যদের হামলায় ওষুধ ব্যবসায়ী নিহত
গাজীপুরের শ্রীপুরে মাদকাসক্ত কিশোর গ্যাং সদস্যদের হামলায় মো. হাসিবুল ইসলাম বাদশা (৪০) নামের এক ওষুধ ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন।
গতকাল বুধবার ( ১ জানুয়ারি) রাত আড়াইটার দিকে শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া পশ্চিমখণ্ড গ্রামের মসজিদ মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত হাসিবুল ইসলাম বাদশা শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া পশ্চিমখণ্ড গ্রামের মো. আব্দুল হাইয়ের ছেলে। তিনি মসজিদ মোড় এলাকায় মা মনি নামের একটি ফার্মেসি পরিচালনা করতেন।
হাসিবুল ইসলাম বাদশার প্রাইভেটকারচালক শিমুল হোসেন বলেন, ‘মাওনায় বাসার সামনে গাড়ি দাঁড় করানোর পরপরই ওরা (কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য) অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকে। আমরা মনে করেছি, ওরা রাস্তা দিয়ে চলে যাবে। কিন্তু, ওরা গাড়ির সামনে এসে নারীদের দেখে উল্লাস শুরু করে। এরপর নারীদের গায়ে হাত দেয়। গাড়ি থেকে নামার পর আমাকে মারধর করে। ওরা সংখ্যায় অনেক, তাই তাদের সঙ্গে পারা সহজ ছিল না। তাছাড়া সবাই মাদকাসক্ত ছিল। হাসিবুল ভাই এতো অনুরোধ করল, তবু ওরা থামেনি। বাসার গেট ভেঙে শেষ পর্যন্ত তাকে হত্যা করে। ওরা আমার দিকেও কয়েকবার ইট নিয়ে তেড়ে আসে।
নিহত ওষুধ ব্যবসায়ীর স্ত্রী মোছা. মাহমুদা আক্তার মালেকা বলেন, ‘ঢাকা থেকে রওনা হয়ে বাসার সামনে গাড়ি থামার পর কিশোর গ্যাংয়ের দল আমাদের গাড়ির সামনে আসে। আমার স্বামী বারবার নিজের পরিচয় দেন। রুবেলকে ভাগনে বলে অনেকবার চলে যাওয়ার অনুরোধ করেন। ওদের শরীরে হাত বুলিয়ে দেন, তবু ওরা থামেনি। মাদকাসক্তরা কতটা হিংস্র, আমার বাসার গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে তারা আমার স্বামীকে খুন করে। তারা আমার বোনসহ আমাকেও লাঞ্ছিত করে।’
আরও পড়ুনশ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার প্রণয় ভূষণ দাস বলেন, রাত সোয়া ৩টার দিকে মৃত অবস্থায় হাসিবুল ইসলামকে হাসপাতালে নিয়ে আসে তার স্বজনেরা।
শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। এরপর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। অভিযুক্ত কিশোর গ্যাং সদস্যদের গ্রেফতার করার চেষ্টা চলছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বলেন, হাসিবুল ঢাকায় শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে গিয়েছিলেন। গভীর রাতে মাওনার বাসায় ফেরার পরপরই বাসার সামনে হামলার শিকার হন। বাড়িতে ঢুকে তাকে হত্যা করে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত দুজনকে আটক করা হয়েছে। পলাতক রুবেলসহ অন্যদের আটক করার চেষ্টা চলছে। এ বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন।
মন্তব্য করুন