এক মাসে রংপুর বিভাগের পাঁচ জেলা থেকে ১৩টি গৃধিনী শকুন উদ্ধার
রংপুর প্রতিনিধি : রংপুর বিভাগের রংপুর, লালমনিহাট, নীলফামারী, গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রাম জেলা থেকে গত এক মাসে ১৩টি হিমালয় গৃধিনী শকুন উদ্ধার করেছে ওয়াইল্ড লাইফ অ্যান্ড স্নেক রেসকিউ টিমের সদস্যরা। খাবারের খোঁজে এসব শকুন প্রতিবছর শীতের সময় রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলায় এসে আশ্রয় নেয়।
উদ্ধারকৃত শকুনের মধ্যে রংপুরে ২টি, কুড়িগ্রামে ২টি, নীলফামারীতে ৪টি, গাইবান্ধায় ২টি ও লালমনিরহাট থেকে ৩টি শকুন উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া একটি ঈগল ও লক্ষ্মীপেঁচা রয়েছে। এনিমেল বিশেজ্ঞ তোরাব অধিকারী জানান, খাবারের সন্ধানে দীর্ঘ মাইল পাড়ি দিয়ে আসার পর ক্লান্ত ও অসুস্থ হয়ে পড়ে বিশালদেহী এসব শকুন। তারা আকাশে ওড়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। এদের সুস্থ সেবা করলে পুনরায় এরা আকাশে উড়তে পারে।
তিনি জানান প্রতি বছর শীতকালে এ ধরনের শকুন দেশের সমতল ভূমিতে আসে। রংপুর বিভাগীয় সামাজিক বন বিভাগ ও ওয়াইল্ড লাইফ অ্যান্ড স্নেক রেসকিউ টিম ইন বাংলাদেশ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৮ ডিসেম্বর কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ি উপজেলার গংগারহাট এলাকায় স্থানীয়রা একটি হিমালয় গৃধিনী শকুন পড়ে থাকতে দেখে ওয়াইল্ড লাইফ অ্যান্ড স্নেক রেসকিউ টিমের সদস্যদের খবর দেন। তারা শকুনটিকে উদ্ধার করে রংপুরে নিয়ে এসে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে দিনাজপুরের সিংগাড় ফরেস্টে পাঠিয়ে দেন।
২৯ ডিসেম্বর গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার উদাখালি ইউনিয়নের হরিপুর ও সদর উপজেলার বানিয়াজান এলাকা থেকে দুটি হিমালয় গৃধিনী শকুন উদ্ধার করা হয়। একই দিনে সদর উপজেলার বানিয়াজান এলাকা থেকে আরেকটি হিমালয় গৃধিনী শকুন উদ্ধার করা হয়।
আরও পড়ুনওয়াইল্ড লাইফ অ্যান্ড স্নেক রেসকিউ টিম ইন বাংলাদেশের অর্থ সম্পাদক লিজেন আহমেদ প্রান্ত জানান, প্রতি বছর হিমালয় থেকে খাবারের খোঁজে উত্তরাঞ্চলে আসে গৃধিনী শকুন। ক্ষুধার্ত এসব শকুন দীর্ঘ পথ উড়তে থাকায় তারা দুর্বল হয়ে পড়লে আকাশ থেকে মাটিতে পড়ে যায়। আমরা যে কয়েকটি গৃধিনী শকুন পেয়েছি, সবগুলো খুবই ক্লান্ত ও দুর্বল ছিল। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে দেশের একমাত্র শকুন পরিচর্যাকেন্দ্র দিনাজপুরের সিংড়া ফরেস্টে এসব শকুন পাঠানো হয়েছে। ২০১৪ সাল থেকে হিমালয় গৃধিনী নিয়ে সরকারের বন অধিদপ্তর আর বেসরকারি সংস্থা আইইউসিএন কাজ করছে।
রংপুর বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন জানান, প্রতি বছর শীতের সময় গৃধিনী শকুন উত্তরাঞ্চলে চলে আসে। শীত শেষ হলে আবার হিমালয়ে ফিরে যায়। গত এক মাসে ১৩টি হিমালয় গৃধিনী শকুন, একটি ঈগল ও একটি লক্ষ্মীপেঁচা উদ্ধার হয়েছে। ঈগল পাখিটির পরিচর্যা শেষে মুক্ত আকাশে অবমুক্ত করা হয়েছে। বর্তমানে লক্ষ্মীপেঁচার পরিচর্যা চলছে বলে জানান তিনি।
মন্তব্য করুন