ভিডিও সোমবার, ০৬ জানুয়ারি ২০২৫

৪৩তম বিসিএসে বাদ পড়া ২৬৭ জনকে নিয়ে, যা বললেন সারজিস

কানো চাকরিপ্রার্থী যদি নিজ যোগ্যতায় সুপারিশপ্রাপ্ত হন তাহলে পরিবারের রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে চাকরি থেকে বঞ্চিত হবে কনে জানতে চেয়েছেন জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম। ছবি:ছব

৪৩তম বিসিএসে ভ্যারিফিকেশনে মোট ২৬৭ জন বাদ পড়েছেন। এ বিষয়ে মুখ খুলেছেন জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম। এই ইস্যুতে শনিবার (৪ জানুয়ারি) বেলা পৌনে ১১টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন তিনি।সারজিস লিখেন, ৪৩তম বিসিএসের পুনরায় ভ্যারিফিকেশন হয়েছে ৷ ১৬৮ জনকে এই ধাপে বাদ দেয়া হয়েছে ৷ প্রথম ও দ্বিতীয় ভ্যারিফিকেশন মিলে মোট বাদ পড়েছেন ২৬৭ জন৷ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখানো হয়েছে গোয়েন্দা সংস্থার নেগেটিভ রিপোর্ট৷ অর্থাৎ পলিটিক্যাল ব্যাকগ্রাউন্ড৷ কিন্তু এখানে অনেকগুলো প্রশ্ন রয়েছে৷

আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে দলটির পরিবার ব্যতীত অন্য পলিটিক্যাল ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে আসা যে কারো জন্য এই প্রথম শ্রেণীর সরকারি ভালো চাকরি পাওয়া কঠিন বিষয় ছিল৷ একই ধরনের একটি চিত্র যদি এখন দেখা যায় তাহলে পার্থক্যটা কোথায়, পোস্টে জানতে চেয়েছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক।


তিনি আরও লিখেন, কোনো চাকরিপ্রার্থী যদি নিজ যোগ্যতায় প্রিলিমিনারি, লিখিত ও ভাইভা পাস করে সুপারিশপ্রাপ্ত হন এবং তার যদি পূর্বে কোনো অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ততা না থাকে তাহলে তার বাবা, চাচা, মামা, নানার রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে তাকে চাকরি থেকে বঞ্চিত করা হবে কেন? আমি কী করবো সেটা কি আমার চাচা নির্ধারণ করতে পারে? কিংবা আমার চাচা কী করবে সেটা কি আমি নির্ধারণ করতে পারি?

একটা সময় পরে সবাইকে ব্যক্তিগত জীবন গুছাতে হয়৷ ইভেন আমার বাবার রাজনৈতিক মতাদর্শের সঙ্গে আমার চিন্তাভাবনার মিল নাও থাকতে পারে৷ তাহলে পরিবারের কোনো একজন সদস্যের রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ডের কারণে অন্য একজন সদস্যকে বঞ্চিত করার অধিকার রাষ্ট্র পায় কি না?

আরও পড়ুন

সবচেয়ে বাজে ব্যাপারটা এবার হয়েছে উল্লেখ করে সারজিস লিখেন, গোয়েন্দা সংস্থার অনেকে গিয়ে এবার ইউনিয়ন আর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি সেক্রেটারির কাছে বিভিন্ন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত চাকরিপ্রার্থীদের পরিবারের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা জানতে চেয়েছে! তার মানে সারাজীবন অধ্যবসায় করা বিশ্ববিদ্যালয় গ্র্যাজুয়েট এক মেধাবী তরুণ প্রায় তিনবছর দিনরাত এক করে পড়াশোনার পর প্রিলি, রিটেন, ভাইভা পাস করে ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়ার পর কোনো এক ওয়ার্ড সভাপতি সেক্রেটারির মতামতের কাছে জিম্মি হয়ে যাবে? সে তার কর্ম নির্ধারণ করবে?
 
তাহলে এত আয়োজনের কি দরকার ছিল? এই ভ্যারিফিকেশন তো তাহলে প্রিলির আগে হয়ে যাওয়া উচিৎ৷ তাহলে তার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলো নষ্ট হতো না৷ আর কোন যোগ্যতা ভিত্তিতে সে এই মতামত দেয়? স্থানীয়ভাবে এমনিতেই নেতিবাচক একটা পলিটিক্স দেখা যায়, কে কারে ল্যাং মেরে উঠতে পারে! যদি একজন চাকরিপ্রত্যাশী এমন স্থানীয় রাজনীতির স্বীকার হন, তাহলে সে দায় সরকার নিবে কি না?
 
উদাহরণ দিয়ে জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক লিখেন, আমার অমর একুশে হলের জাকারিয়া ভাই এডমিন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছিলেন৷ কী অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন তিনি! প্রথম ভ্যারিফিকেশন উতরে গেলেও রি-ভ্যারিফিকেশনে বাদ দেয়া হলো তাকে! যারা উনাকে চেনেন তাদের সবার আকাশ থেকে পড়ার মতো অবস্থা! আমি ভেবেছিলাম আওয়ামী আমলে উনাকে আটকানো হতে পারে! কারণ, তার দাঁড়ি আছে, নুরানী চেহারা, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজও পড়েন৷ জামাত-শিবির ট্যাগ দেয়া সহজ৷ কিন্তু উনাকে আটকানো হলো এই অন্তবর্তীকালীন সরকারের সময়ে! কিন্তু এখন তো নিয়োগের ক্ষেত্রে স্ট্যান্ডার্ড প্রক্রিয়া নতুন করে সেট হওয়ার কথা ছিল!
 
এদিকে, দেখলাম যারা বাদ পড়েছেন তাদের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় নতুন করে পুনর্বিবেচনার আবেদনের সুযোগ দিয়েছে৷ কিন্তু এই ভ্যারিফিকেশন খেলা কেন? এখানে অনেকেই আছে যারা পূর্বের চাকুরি ছেড়ে এসেছে, অনেকের ছিল জীবনের শেষ চাকরির পরীক্ষা, অনেকের সামনের জীবন নির্ভর করছে এই চাকরির ওপর৷ সেখানে যদি এমন রিয়েলিটি সেট করা হয়, তাহলে আগামীর প্রজন্ম আপনাদের ওপর আস্থা রাখতে পারবে না, দোদুল্যমান অবস্থায় না থেকে দেশ ছেড়ে চলে যাবে৷ অলরেডি এটা নিয়ে কথা শুরু হয়েছে৷ যেটা কখনোই কাম্য নয়৷
 
মধার ভিত্তিতে চাকরি হবে উল্লেখ করে সারজিস লিখেন, যে মতাদর্শেরই হোক না কেন, যদি পূর্বে ক্ষমতার অপব্যবহার, অন্যায়, অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ততা না থাকে তাহলে নাগরিক হিসেবে সরকারি চাকরি পাওয়া তার সাংবিধানিক অধিকার৷ কোনো অহেতুক এক্সকিউজে যেটা ক্ষুণ্ন করা কখনওই ভালো বার্তা বহন করে না।

 

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বিয়ের পিঁড়িতে আলোচিত জুটি অঙ্কুশ-ঐন্দ্রিলা!

সৌদিতে পুরুষদের সেলুনে নারীদের পরিষেবা প্রদান, তদন্ত শুরু

দেশে এক বছরে বেকার বেড়েছে ১ লাখ ৭০ হাজার

মেক্সিকোতে বারে বন্দুক হামলায় নিহত ৭

সড়কে প্রাণ গেলো মেহেরপুর ডিসি অফিসের এক কর্মকর্তার

কোহলির আগ্রাসী আচরণ নিয়ে যা বলছেন এবি ডি ভিলিয়ার্স