ভিডিও সোমবার, ০৬ জানুয়ারি ২০২৫

জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে ধান-চালের সংগ্রহ অভিযান ব্যর্থ

জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে ধান-চালের সংগ্রহ অভিযান ব্যর্থ

আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি : জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বাজারের দাম বেশি হওয়ায় চলতি মৌসুমে আমন ধান-চাল সংগ্রহ নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। আমন মৌসুমে চাল সংগ্রহের শুরু থেকেই ধান ও চালের বাজার বেশি হওয়ায় চালকল মালিকরা খাদ্যগুদামে চাল সরবরাহে গড়িমসি করছেন। এতে করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ধান ও চাল সংগ্রহ নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

কয়েকজন মিল মালিকের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, দুই থেকে তিন টাকা ভর্তুকি দিয়েও আমরা চাল কিনতে পারছি না। এ মৌসুমে সরকার ধানের দাম প্রতি কেজি ৩৩ টাকা এবং চালের দাম প্রতি কেজি ৪৭ টাকা নির্ধারণ করেছে। মৌসুমের শুরুতে ধানের যে দাম ছিল তখন চালকল মালিকরা গোডাউনের চাল দিতে পারতেন।

কিন্তু বর্তমান বাজারে ধানের দাম বেশি হওয়াই তাতে চাল উৎপাদন করে সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে চাল খাদ্যগুদামে সরবরাহ করলে বিপুল পরিমাণ অর্থ ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। বর্তমান সুমুন ও গুটি স্বর্ণাসহ মোটা জাতের ধানের বাজার দেড় হাজার টাকা দরে বেচাকেনা করতে দেখা গেছে।

আক্কেলপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানা যায়, এবার এ উপজেলা আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা ৭৩৭ মেট্রিকটন এবং চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ৫৩৮ মেট্রিকটন নির্ধারণ ছিল। চাল সরবরাহ করার জন্য মাত্র ১৩ জন মিলার চুক্তিবদ্ধ হন। চলতি মৌসুমে ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা ৭৩৭ মেট্রিকটন হলেও সংগ্রহ হয়েছে ১শ’ মেট্রিক টন। চালের লক্ষ্যমাত্রা ৫৫৮ মেট্রিকটন। কেনা হয়েছে ১২২ মেট্রিকটন। এদিকে এ উপজেলায় ৪১টি চালকলের মধ্যে ১৩টি চালকল মালিক সরকারি খাদ্যগুদামে চাল দেওয়ার জন্য চুক্তিবদ্ধ করেছে। ২০২৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চাল সংগ্রহ অভিযান চলবে।

গোপীনাথপুর ইউনিয়নের কৃষক রাশেদুল ইসলাম পাইলট জানান, সরকার নির্ধারিত ধানের দামের চেয়ে বাজারে ধানের দাম অনেক বেশি। বর্তমান স্বর্ণা-৫ জাতের ধান বাজারে দেড় হাজার টাকা থেকে ১ হাজার ৫২০ টাকা পর্যন্ত প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে। এই কারণে খাদ্যগুদামে ধান দেওয়া যায়নি।

আরও পড়ুন

মাহিন চালকলের স্বত্বাধিকারী গোলাম মোস্তফা বিদ্যুৎ বলেন, আমার মিলের নামে বরাদ্দকৃত ৮৮ মেট্রিকটন চাল সরকারকে দেওয়ার জন্য চুক্তিপত্র করেছিলাম। প্রায় দুই লাখ টাকা লোকসান মাথায় রেখে সব চাল খাদ্যগুদামে সরবরাহ করেছি।

উপজেলার চালকল মালিক সমিতির সভাপতি একেএম শাখাওয়াত হোসেন খায়ের বলেন, এ মৌসুমে প্রথম থেকে ধানের দাম বেশি। কয়েক বছর ধরে ধানের কেনা দামের সঙ্গে উৎপাদিত চালের দামের কোনো মিল নেই। গত বছরের তুলনায় উৎপাদিত চালের দাম বেশি হওয়ায় মিল মালিকেরা সরকারকে চাল দিতে অনীহা প্রকাশ করছেন। যেসব মিল মালিকেরা সরকারের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ করেছেন তারা চাল সরবরাহ করলে বর্তমান বাজার অনুযায়ী লোকসান পোহাতে হবে।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা শাহানশাহ হোসেন বলেন, ধান ও চালের দর বেড়ে যাওয়ায় চলতি মৌসুমে ধান সংগ্রহ নিয়ে কিছুটা শঙ্কিত। তবে আশাবাদী চাল সংগ্রহের জন্য চুক্তিবদ্ধ মিলারগণ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে খাদ্যগুদামে চাল সরবরাহ করবেন। এরপরও মিলাররা চাল দেবেন না তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যেসব মিলারগণ চুক্তিবদ্ধ হননি তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার সঙ্গে সমন্বয় করে কৃষককে খাদ্যগুদামে ধান সরবরাহ করার জন্য উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সাতক্ষীরায় মসজিদের ডিজিটাল বোর্ডে ভেসে উঠল ‘জয় বাংলা’ স্লোগান

কচুয়ায় চাঁদাবাজির অভিযোগে গণপিটুনিতে যুবক নিহত

বগুড়ায় হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে হামলা, ভাঙ্চুর ও অগ্নিসংযোগ

গুলিস্তানে দেশীয় অস্ত্রসহ ৪ ছিনতাইকারী গ্রেপ্তার

অগ্রাধিকারমূলক কাজের তালিকা দিলেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে আসামি ছিনতাইয়ের ঘটনায় ছয় পুলিশ সদস্য প্রত্যাহার, আটক ২