নতুন বছরের শুরু থেকে মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখবেন যেভাবে
সারাবছর সুস্থ থাকতে চান না কে! সুস্থতার লক্ষ্যে প্রায়ই নতুন বছরে আমরা স্বাস্থ্য, কর্মজীবন ও আর্থিক সাফল্যের জন্য রেজোলিউশন নিয়ে থাকি। তবে শুধু এখানে থেমে গেলেই চলবে না। মানসিক স্বাস্থ্যের দিকেও নজর রাখতে হবে। মানসিক স্বাস্থ্য আমাদের সামগ্রিক সুস্থতার একটি সমান গুরুত্বপূর্ণ দিক। বর্তমানে চাপ, উদ্বেগ একটি সাধরণ সমস্যা হয়ে উঠেছে। তাই আপনার মানসিক সুস্থতার জন্য কিছু কার্যকরী রেজোলিউশন নেওয়া জরুরি।
কেন মানসিক স্বাস্থ্য রেজোলিউশন গুরুত্বপূর্ণ?
বিশেষজ্ঞদের মতে, আমাদের চিন্তা-ভাবনা, অনুভূতি ও আচরণ মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি আমাদের সম্পর্ক, উৎপাদনশীলতা ও জীবন উপভোগ করার ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে। তাই মানসিক স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখতে নিন কিছু রেজোলিউশন। নতুন বছরে মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে কয়েকটি অভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি। যেমন-
পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে
ঘুম মানসিক স্বাস্থ্যের ভিত্তি। খারাপ ঘুম বা অপর্যাপ্ত ঘুম আমাদের উদ্বেগ ও বিষণ্নতা বাড়িয়ে তুলতে পারে। তাই পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন। এটি মেজাজ ও জ্ঞানীয় কার্যকারিতা বাড়ায়। একটি সামঞ্জস্যপূর্ণ ঘুমের রুটিন তৈরি করুন। শোবার আগে স্ক্রিন এড়িয়ে চলুন। আপনার ঘুমের পরিবেশ শান্ত রাখার চেষ্টা করুন।
নিয়মিত ব্যায়াম করুন
নতুন বছরের শুরু থেকেই শরীর ও মনকে ভালো রাখতে ব্যায়াম করার রেজোলিউশন নিন। শারীরিক কার্যকলাপ শুধু শরীরের জন্য নয়, মনের জন্যও একটি শক্তিশালী হাতিয়ার। ব্যায়াম এন্ডোরফিন নিঃসরণ করে, যা মানসিক চাপ কমায় ও মন-মেজাজ ভালো রাখে এজন্য যোগব্যায়াম, নাচ বা হাঁটা, বা আপনার মনের মতো কার্যকলাপ বেছে নিন।
নিজের যত্ন নিন
মনে রাখবেন, স্ব-যত্ন বিলাসিতা নয়, এটি আপনার প্রয়োজনীয়তা। এমন ক্রিয়াকলাপগুলো বেছে নিন, যা আপনার মন ভালো রাখবে। এজন্য শখের জিনিস করুন ও একান্তে প্রকৃতির মাঝে সময় কাটান।
মেডিটেশন করুন
বর্তমানের দ্রুতগতির যুগে মানসিক স্বাস্থ্য ও চাপ ব্যবস্থাপনা শারীরিক স্বাস্থ্যের মতোই গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে ধ্যান, গভীর শ্বাস নেওয়া ইত্যাদি মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করবে। দিনে মাত্র পাঁচ মিনিট দিয়ে শুরু করুন ও ধীরে ধীরে আপনার অনুশীলন প্রসারিত করুন।
স্ক্রিন টাইম সীমিত করুন
অত্যধিক স্ক্রিন টাইম বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় থাকা, আপনার মানসিক সমস্যার দিকে নিয়ে যেতে পারে। এর পরিবর্তে বই পড়া, হাঁটা বা আপনার শখের ক্রিয়াকলাপকে বেছে নিন।
চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
আপনি যদি ক্রমাগত দুঃখ ও উদ্বেগের মতো অনুভূতির সঙ্গে লড়াই করেন, তাহলে একজন মানসিক স্বাস্থ্য চিকিৎসকের সাহায্য নেওয়া একটি সক্রিয় পদক্ষেপ। থেরাপি বা কাউন্সেলিং আপনার আবেগ অন্বেষণ ও মোকাবেলার কৌশল বিকাশ করার জন্য একটি নিরাপদ স্থান প্রদান করে।
সম্পর্ক মজবুত করুন
মানসিক সুস্থতার জন্য শক্তিশালী সামাজিক সংযোগ অপরিহার্য। বন্ধু ও পরিবারের সঙ্গে মানসম্পন্ন সময় কাটানোর জন্য সচেতন প্রচেষ্টা করুন। নিয়মিত পারিবারিক ডিনার, বন্ধুদের সাথে আড্ডা বা আপনার সঙ্গীর সাথে ডেট নাইটে যান। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্কগুলিতে সময় ব্যয় করুন। জীবনের বেশিরভাগ সমস্যার কারণই হলো সামনের মানুষকে না বলতে সংকোচ বোধ করা। অনেক সময় ইতিবাচকতা থেকে কাউকে ‘না’ বলতে পারেন না অনেকেই। যা ভবিষ্যতে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যাকে ডেকে আনে।
মন্তব্য করুন