ভিডিও রবিবার, ১২ জানুয়ারি ২০২৫

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে পরীক্ষামূলকভাবে বিনাচাষে সরিষা আবাদ, প্রথমবারই সফলতা

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে পরীক্ষামূলকভাবে বিনাচাষে সরিষা আবাদ, প্রথমবারই সফলতা

ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি : প্রথমবার পরীক্ষামুলকভাবে বিনাচাষে সরিষা আবাদে সাফল্য অর্জন করেছেন দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার কৃষকরা। কৃষি বিভাগ বলছে, সাথী ফসল হিসেবে সরিষা চাষ হওয়ায় একদিকে যেমন খরচ ও সময় বাঁচবে অন্যদিকে সরিষা চাষ বৃদ্ধি পাবে। ফলে বাজারে ভোজ্য তেলের চাহিদা পূরণ সহজ হবে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরিষা চাষ বৃদ্ধি পাওয়ায় ভোজ্যতেল আমদানিতে যেমন চাপ কমবে, একই সাথে আমদানি ব্যয়ে বৈদেশিক মুদ্রার ওপরও চাপ কমবে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সরিষার হলুদ ফুলে ভরে উঠেছে মাঠের পর মাঠ। মাঠজুড়ে হলুদ রঙে ছেয়ে গেছে প্রকৃতি, ধান কাটার পর ওই জমিতে বিনা চাষে সরিষা চাষ করেছেন অনেক কৃষক।

কৃষকরা জানান, কৃষি অধিদপ্তরের পরামর্শে বিনাচাষে পরীক্ষামূলকভাবে ধানক্ষেতের মধ্যে তারা সরিষার বীজ বপন করেছিলেন। এতে দেখা গেছে ধানের পাশাপাশি, সাথী ফসল হিসেবে সরিষাও চাষ হচ্ছে। ধান পাকার পর তা কেটে নেয়া হয়েছে, এদিকে সরিষা গাছও বেড়ে উঠেছে। এই সরিষা কেটে তারা একই জমিতে বোরো ধান চাষ করবেন বলে জানান। পরীক্ষামূলকভাবে ধানক্ষেতে বিনাচাষে সরিষা চাষ করে সাফল্য পাওয়ায় আগামীতে সরিষা চাষ আরও বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করছেন তারা।

তেঁতুলিয়া গ্রামের কৃষক মাহমুদ আলম বলেন, তিনি প্রথমবার ৫০ শতক জমিতে ধানক্ষেতে সরিষা চাষ করে সফলতা পেয়েছেন। তিনি বলেন, একই সাথে সরিষা ও ধান চাষ হওয়ায় একদিকে যেমন একই জমিতে তিন ফসল হচ্ছে, অন্যদিকে সময় এবং উৎপাদন মূল্যও কমে যাচ্ছে। এতে করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন বেশি। একই কথা বলেন, খয়েরবাড়ী ইউনিয়নের কৃষক নূর আলম ও রাজারামপুর গ্রামের কৃষক মোজাম্মেল হক।

আরও পড়ুন

উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর ১ হাজার ৮২৩ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। এর মধ্যে ৮ থেকে ১০ একর জমিতে প্রথমবার পরীক্ষামূলক ভাবে বিনাচাষে সরিষা আবাদ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার ৬৬১ মেট্রিক টন। জেলার বাণিজ্য দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, দিনাজপুর জেলার ৩৩ লাখ ১৫ হাজার জনগণের জন্য ৪০ হাজার মেট্রিক টন ভোজ্যতেলের প্রয়োজন হয়। এর মধ্যে স্থানীয় উৎপাদিত সরিষা থেকে ১২ ভাগ ভোজ্যতেলের যোগান আসে। তবে বর্তমানে সরিষা চাষ বৃদ্ধি পাওয়ায় এ যোগান বৃদ্ধি পাবে।

সূত্রটি আরও জানায়, ফুলবাড়ীতে তিন লাখ জনসংখ্যার জন্য ভোজ্যতেলের চাহিদা রয়েছে সাড়ে ৩ হাজার মেট্রিক টন। উপজেলার তেলমিল মালিকরা জানান, প্রতি টন সরিষা থেকে ৪০০ লিটার তেল উৎপাদন করা হয়, সেই হিসেব অনুযায়ী ২ হাজার ৬৬১ মেট্রিক টন সরিষা থেকে এক হাজার ৬৬৪ লিটার তেল উৎপাদন করা সম্ভব হবে, যা ভোজ্য তেলের মোট চাহিদার ৩০ ভাগ।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রুম্মান আক্তার বলেন, এ বছর উপজেলায় ১ হাজার ৮২৩ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। এর মধ্যে ৮ থেকে ১০ একর জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে বিনাচাষে সরিষা আবাদ হয়েছে। প্রথমবার পরীক্ষামূলকভাবে বিনা চাষে সরিষা আবাদ করে কৃষকরা সাফল্য অর্জন করায় আগামীতে সরিষা চাষ আরও বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি আশা করেন।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

জার্মানিতে আশ্রয়ের আবেদন কমেছে এক-তৃতীয়াংশ

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে পরীক্ষামূলকভাবে বিনাচাষে সরিষা আবাদ, প্রথমবারই সফলতা

শাহজালাল বিমানবন্দরের যাত্রীসেবা আরও বেগবান করার নির্দেশ

কুড়িগ্রামের চিলমারীতে বেগুন চাষে কৃষকের বাজিমাত পাঁচ মাসে আয় আড়াই লাখ টাকা

গাইবান্ধায় চাকরির পরীক্ষায় প্রক্সি দিতে এসে আটক ৪

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অবহেলায় শিশু মৃত্যুর অভিযোগ