ভিডিও মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারি ২০২৫

অপরাধ বাড়ছে

অপরাধ বাড়ছে। প্রতীকী ছবি

পত্রিকাগুলো ক্রমেই যেন খুন-রাহাজানির বিবরণী হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বেপরোয়া হয়ে উঠছে অপরাধীরা। দিন-দুপুরেই খুনোখুনি ডাকাতি, নিত্য নতুন কৌশল। দিন দিন ভয়ংকর হয়ে উঠেছে অপরাধীরা। কাগজ খুললেই দেখা যায় অমুক নেতা হত্যা, যুবক খুন, প্রেমিক খুন, রাজনৈতিক পরিচয়ধারী খুন, সাংবাদিককে পেটালেন অমুক সংগঠনের কর্মিরা, মাঠ-ঘাট থেকে যুবক-যুবতীর লাশ উদ্ধার, কলেজ ছাত্রকে কুপিয়ে হত্যা, ধর্ষণ, বিশেষ পোশাক পরে ডাকাতি, অপহরণ, বাসা-বাড়িতে প্রতারণা, জবরদস্ত করে কারো দোকান-সম্পত্তি দখল, নকল-ভেজাল পণ্য উদ্ধার, জালনোট তৈরির কারখানার সন্ধান, আছে ইয়াবাসহ মাদক দ্রব্যের রমরমা বাজারের খবরসহ আরও নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকান্ডের বিবরণ।

আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সংশ্লিষ্টরা যতই বলুন না কেন, দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে, আমরা তা মেনে নিতে পারছি না। রাজনৈতিক কারণে খুন, বিষয়-সম্পত্তির বিরোধে খুন, প্রভাব-প্রতিপত্তি বা আধিপত্য বিস্তারের প্রতিযোগিতায় খুন, সামান্য কথা কাটাকাটিতে খুন-দেশ যেন পতিত বিগত সরকারের অপরাধীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হচ্ছে। ওপরতলায় থাকা কর্মকর্তারা বাস্তবতা অস্বীকার করতে পারেন, কিন্তু নিচের তলার বাসিন্দা হিসেবে আমাদের পক্ষে চোখ বন্ধ করে থাকার উপায় নেই। দেখতে না চাইলেও দেখতেই হয় প্রতিদিনের অবনতির এ চিত্র। আর চোখ বন্ধ করে রাখলেও তাতে কোনো লাভ হয় না। কারণ অন্ধ হলেও প্রলয় বন্ধ থাকে না।
৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর তৎকালীন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। তবে দেশের অভ্যন্তরে রয়ে গেছে তাদের নিপীড়ক-খুনি দলীয় অপরাধীরা। তারা লুকিয়ে আছে তবে দেশকে অস্থিতিশীল করতে ভিন দেশ থেকে আসা নির্দেশ মোতাবেক দেশের অভ্যন্তরে অরাজকতা সৃষ্টি এবং আইন শৃঙ্খলার অবনতি সৃষ্টিতে তারা সর্বাত্মক প্রচেষ্টায় নিয়োজিত। ৫ আগস্টের পর পুলিশ বাহিনী থেকে যারা পালিয়ে গেলে তারা এখনও বাহিনীতে ফিরে আসেনি।

ফলে পুলিশ বাহিনী পূর্ণশক্তিতে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারছে ন। ফলে এখানেও বিরাট ঘাটতি রয়ে গেছে। এই সুযোগে দিন দিন ভয়ংকর হয়ে উঠেছে রাজধানীর অপরাধীরা। কেবল বাসা লুটপাটই নয়, লুটের পর বাচ্চা নিয়ে উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনাও এবার ঘটেছে। পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে নিত্য নতুন কৌশল নিয়ে এগোচ্ছে অপরাধীরা। চুরি করতে গিয়ে খুন করা হয় বাসার মালিককে। দিন-দুপুরে ঘটছে ছিনতাইয়ের ঘটনা। প্রায় প্রকাশ্যেই ঘটছে অস্ত্রবাজি ও খুনাখুনি। প্রকাশ্যে অবৈধ অস্ত্র নিয়ে মাঝে মাঝেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে দেখা মিলছে দুর্বৃত্তদের।

তারা হামলে পড়ছে প্রতিপক্ষ কিংবা সাধারণ মানুষের ওপর। আবার দুর্বৃত্তের অনেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অঙ্গসংগঠনের সাইন বোর্ড ব্যবহার করে লিপ্ত হচ্ছে চাঁদাবাজি, দখল বাণিজ্যসহ নানা অপরাধে। এদের প্রায় সবাই পতিত সরকারের অনেক নেতার অধীনে কাজ করেছেন দীর্ঘ সময়। এটা শুধু রাজধানী বা জেলা শহরের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, মফস্বলেও ছড়িয়ে পড়েছে। অভ্যন্তরীণ কোন্দল, আধিপত্য বিস্তার, লুটপাট, চাঁদাবাজিসহ যে কোনো তুচ্ছ ঘটনায় অস্ত্রের ব্যবহার করছে সন্ত্রাসীরা।

আরও পড়ুন

সারাদেশেই প্রতিদিন হত্যা, হামলা, ভাঙচুর, ছিনতাই, ডাকাতি, চাঁদাবাজি ঘটছে। মানুষ এসব কারণে স্বস্তিতে নেই। যা খুবই উদ্বেগের। অপরাধ নিয়ন্ত্রণে পুলিশের কার্যকর ভূমিকা বাড়াতে হবে। পালিয়ে যাওয়া দলীয় পুলিশের জায়গায় নিরপেক্ষ, দলীয় রাজনীতিমুক্ত পুলিশ নিয়োগ দিতে হবে অতিদ্রুত।

আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে আবারও নতুন করে ঢেলে সাজাতে হবে যাতে তারা সাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রের দায়িত্ব পালন করতে পারে। পুলিশ বাহিনীর অবকাঠামোগত সংস্কারই জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মেহেরপুরে ২ কেজি ওজনের সোনাসহ ভারতীয় নাগরিক আটক

ককটেল ফাটিয়ে লুটে নিলো বিকাশ ব্যবসায়ীর ৬ লাখ টাকা 

লম্বা সময়ের জন্য মাঠের বাইরে মার্তিনেজ

যশোরে সার মজুদ রাখায় ২ ব্যবসায়ীকে ২ লাখ টাকা জরিমানা

৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে ডিভোর্স দিয়ে একাধিক প্রেমে মজেন কুমার শানু

খাগড়াছড়ির বাজারে দুর্বৃত্তের ছোড়া গুলিতে শিক্ষার্থী আহত