অব্যাহতিপ্রাপ্ত এসআইদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে
সচিবালয়ের সামনে আমরণ অনশনে থাকা অব্যাহতি পাওয়া শিক্ষানবিশ এসআইদের মধ্যরাতে জলকামান থেকে পানি ছিটিয়ে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে । মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) দিবাগত রাত পৌনে ১টার দিকে বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এসে তাদের সরিয়ে দেয়।সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বিকাল পাঁচটা থেকে বাংলাদেশ সচিবালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে আমরণ অনশনে বসেন পুলিশের প্রশিক্ষণরত ৪০তম ব্যাচের অব্যাহতি পাওয়া ৩২১ জন শিক্ষানবিস উপ-পরিদর্শকরা (এসআই)।
এরআগে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে অনশনরত এসআইদের সরিয়ে দেওয়া চেষ্টা করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যরা। পরে রাত পৌনে ১টার দিকে জলকামান ও বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্যরা তাদের পানি ছিটিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তাদের সচিবালয়ের সামনে থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ খালিদ মনসুর বলেন, “অব্যাহতিপ্রাপ্ত অনশনে থাকা এসআইদের চলে যাওয়ার জন্য কয়েক দফায় অনুরোধ করা হয়েছিল। সচিবালয়ের সামনে এভাবে অনশন করা আইনত অপরাধ। পরে রমনা বিভাগের ডিসি স্যারসহ আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
অনশনে থাকা এসআইদের দাবি, কোনো ওয়ার্নিং দেওয়া ছাড়াই পানি ছিটিয়ে তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের দাবি না মেনে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনে বাধা দেওয়ায় তাদের সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে।
অনশনে থাকা মিজানুর রহমান নামে একজন বলেন, “এই শীতের রাতে একটা কুকুরের শরীরেও কেউ পানি মারে না। আর আজকে এভাবে পানি ছিটিয়ে আমাদের সরিয়ে দেওয়া হলো। আমরা চেয়েছিলাম আমাদের চাকরি ফিরিয়ে দেওয়া হোক। অথচ আমাদের সঙ্গে পশুর মতো আচরণ করা হয়েছে।”সুমাইয়া জামান নামে অব্যাহতি পাওয়া এক নারী এসআই বলেন, “আমরা কখনও ভাবিনি এভাবে আমাদের সরিয়ে দেওয়া হবে। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে অনশন কর্মসূচি পালন করছিলাম। আমরা চেয়েছিলাম ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসে আশ্বাসের বাণী শোনাবেন। আমরা তো কোনো অন্যায় করিনি। শুধু চাকরি ফিরে পেতে চেয়েছিলাম। আজ আমাদের সঙ্গে কুকুরের মতো আচরণ করা হয়েছে।”
এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তারা জানিয়েছেন, তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সচিবালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচির মাধ্যমে আমরণ অনশন চালিয়ে যাবেন। সেসময় রবিউল নামে চাকরিচ্যুত এক এসআই বলেছিলেন, চাকরি ফিরিয়ে না দেওয়া পর্যস্ত আমাদের আমরণ অনশন চালিয়ে যাবো। প্রয়োজনে মরতেও রাজি আছি। কেননা এমনিতেই তো আমরা মরে গেছি। পরিবার, আত্মীয়স্বজন এমনকি সবাই আমাদের ঘৃণার চোখে দেখছে। আমাদের জীবন প্রায় ধ্বংসের পথে চলে গেছে।
মন্তব্য করুন