নাটকীয় প্রত্যাবর্তনে ৯ গোলের ম্যাচে বার্সার জয়
৬৩ মিনিট পর্যন্ত ৩-১ গোলে পিছিয়ে থাকা ম্যাচে অবিশ্বাস্য নাটকীয়তায় শেষ পর্যন্ত ৫-৪ গোলে জিতে রোমাঞ্চের জোয়ারে ভাসছেন বার্সেলোনা কোচ হান্সি ফ্লিক।এরিক গার্সিয়ার হেডে যখন সমতা ফেরাল বার্সেলোনা, হান্সি ফ্লিক আর তার দল জয়ের উল্লাস করে ফেলেছিল তখনই। একটু পর আরেকটি গোল করলেন রাফিনিয়া, জয় যখন সত্যিই ধরা দিল, তখন তো তাদের উচ্ছ্বাস কোনো বাধা মানছিল না। বাঁধনহারা উদযাপনে মেতে উঠেছিলেন তারা। ম্যাচের পর সেই অনুভূতি ফুটে উঠল ফ্লিকের কণ্ঠেও। এমন রুদ্ধশ্বাস জয় অবিশ্বাস্য লাগছে স্বয়ং বার্সেলোনা কোচের কাছেই।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে উত্তেজনায় ঠাসা চরম নাটকীয় ম্যাচ বেনফিকার মাঠে ৫-৪ গোলের জয় নিয়ে ফিরেছে বার্সেলোনা।
ম্যাচের ৩০ মিনিটের মধ্যে ৩-১ গোলে পিছিয়ে পড়েছিল বার্সেলোনা। ৬৩ মিনিট পর্যন্ত সেটিই ছিল স্কোরলাইন। ৬৪তম মিনিটে গোল করে ব্যবধান কমান রাফিনিয়া। চার মিনট পরেই রোনাল্দ আরাউহোর আত্মঘাতী গোলে আবার ব্যবধান বেড়ে হয় দুই গোলের। কিন্তু ৮৬তম মিনিটে গার্সিয়ার সেই হেড। এরপর ৯০ মিনিট শেষে যোগ করা সময়ের ষষ্ঠ মিনিটে রাফিনিয়ার ঠাণ্ডা মাথার ফিনিশিংয়ে কাতালানদের স্মরণীয় এক জয়।
ম্যাচ শেষের বেশ কিছুক্ষণ পরও সেই উত্তেজনার রেশ ছিল ফ্লিকের কণ্ঠে। কোচিং ক্যারিয়ারে এমন কিছুর অভিজ্ঞতা তার আগে ছিল না।
“খুবই পাগলাটে ম্যাচ ছিল। সবচেয়ে ইতিবাচক দিক ছিল আমাদের মানসিকতা। আমরা যেভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছি, তা অসাধারণ। এটাই ফুটবল এবং এজন্যই খেলাটাকে আমরা এত ভালোবাসি।”“আমার মনে হয় না, এই ধরনের প্রত্যাবর্তনের অভিজ্ঞতা আমার আগে ছিল। এটা স্রেফ অবিশ্বাস্য।”কোচের মতে, প্রথমার্ধে বার্সেলোনার খেলা ছিল খাপছাড়া। দ্বিতীয়ার্ধের খেলায় অবশ্য তিনি খুশি।
“প্রথমার্ধে আমরা ভালো খেলতে পারিনি। ওরা খুব ভালো ছিল এবং গোল করেছে। ওরা আমাদেরকে বাধ্য করেছে অনেক নিচে নেমে রক্ষণ সামলাতে। সঠিক পজিশনেও থাকতে পারিনি আমরা। দ্বিতীয়ার্ধে আমরা শ্রেয়তর ছিলাম এবং বদলিগুলো আমাদের দারুণভাবে কাজে লেগেছে।”
আরও পড়ুনইনাকি পেনিয়ার জায়গায় ফ্লিক এ দিন গোলকিপার হিসেবে বেছে নেন ভয়চেক স্ট্যান্সনিকে। পোলিশ এই গোলকিপারের ভুলে দুটি গোল হজম করে দল। তবে বার্সেলোনার ডাকে অবসর ভেঙে ফেরা কিপারের দিকে আঙুল তুলতে নারাজ কোচ।
“কোন ফুটবলার ভুল করে না? এটা স্বাভাবিক। স্ট্যান্সনি কিছু ভুল করেছে। তবে প্রথমার্ধে তো সবাই কিছু না কিছু ভুল করেছে।”
“আমরা জিতি একসঙ্গে, হারি একসঙ্গে। আমরা একটি দল। দ্বিতীয়ার্ধে যা দেখেছি, আমার ভালো লেগেছে। সে বেনফিকার প্রায় নিশ্চিত একটি গোল ঠেকিয়ে দিয়েছে।”
এই জয়ে সাত ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে দ্বিতীয় স্থান ধরে রেখেছে বার্সেলোনা। তবে লা লিগায় তারা ধুঁকছে শীর্ষস্থান থেকে তিনে নেমে গিয়ে। সবার ওপরে থাকা রেয়াল মাদ্রিদের চেয়ে তারা পিছিয়ে আছে সাত পয়েন্টে। সামনের ম্যাচে লা লিগায় তাদের প্রতিপক্ষ ভালেন্সিয়া। এরপর আবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগে লড়াই আতালান্তার বিপক্ষে। বেনফিকার বিপক্ষে দারুণ জয়ের প্রেরণায় সামনের দুই চ্যালেঞ্জ জিততে চান ফ্লিক।
“এই জয় নিজেদের পথে আমাদের বিশ্বাস বাড়িয়ে দেবে এবং তরুণ এই দলটিকে এই বার্তা দেবে যে, আমরা আরও উন্নতি করতে পারি।”
“এখন ভালেন্সিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে মনোযোগ দেওয়া জরুরি। এরপর আমরা আতালান্তাকেও হারাতে চাই। কোনোভাবেই ভেবে নেওয়ার সুযোগ নেই যে আমরা ঢিল দিতে পারি।”
মন্তব্য করুন