ভিডিও বুধবার, ২২ জানুয়ারি ২০২৫

ইহুদিদের লাল গরুর রহস্য : কী আছে ধর্মগ্রন্থে

সংগৃহীত,ইহুদিদের লাল গরুর রহস্য : কী আছে ধর্মগ্রন্থে

পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ তিন ধর্ম খ্রিষ্টান, ইহুদি এবং ইসলামের অনুসারীদের কাছে প্রিয় আল আকসা। মক্কা-মদিনার পর মুসলমানদের কাছে তৃতীয় পবিত্রতম স্থান এটি। ইহুদিদের কাছে এটি ‘টেম্পল মাউন্ট’।


তাদের বিশ্বাস, ইহুদি ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা হযরত ইবরাহিম (আ.) তার পুত্র ইসমাঈলকে (আ.) উৎসর্গ করার জন্য এখানেই নিয়ে এসেছিলেন। অন্যদিকে খ্রিস্টানরা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন, এটাই সেই জায়গা যেখানে যীশু খ্রিস্ট ক্রুশবিদ্ধ হয়েছিলেন আর এখানকার গুহাতেই তার দেহ রাখা হয়েছিল।

 
ইহুদিদের একটি পবিত্র গ্রন্থ তালমুদ। এ গ্রন্থের ব্যাখ্যানুযায়ী, কিয়ামতের আগে ইহুদিদের ত্রাণকর্তার আগমন ঘটবে। তারা তাকে বলে মাসিহ। মাসিহের আবির্ভাবের তিনটি প্রধান শর্ত আছে। ১. সারা পৃথিবীতে বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়েছিটিয়ে থাকা ইহুদিদের ইসরাইলে জড়ো হতে হবে। ২. একটি ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।  ৩. সোলাইমানি মন্দির আগে যেখানে ছিল, ঠিক সেখানেই সেই মন্দির তৈরি করতে হবে। এটাকে তারা বলে ‘থার্ড টেম্পল’।


ইহুদিরা বিশ্বাস করে, এখন তৃতীয় শর্ত বাকি আছে। সেই শর্ত পূরণ করতে হলে আল-আকসা মসজিদ ভাঙতে হবে আর সেখানেই সোলাইমানি মন্দির বা থার্ড টেম্পল গড়তে হবে।
 
এটা করার জন্য তাদের প্রয়োজন লাল গরু। ধর্মগ্রন্থের ভাষ্যমতে, লাল গাভী জন্ম হওয়ার পর তিন বছর বয়সে উপনীত হলে তারা সেটিকে জবাই করে রক্ত ও আগুনে পুড়িয়ে ছাই করে সেই ছাই মেখে ইহুদি সম্প্রদায় পবিত্র হবে।

এই গাভির রক্ত ও ছাই মাখা ছাড়া ইহুদিরা পবিত্র হবে না। এটাই তারা বিশ্বাস করে। তাদের বিশ্বাস অনুযায়ী লাল গাভীর মাধ্যমে তারা পবিত্র হওয়ার পরই বর্তমান বাইতুল মুকাদ্দাসে অবস্থিত কুব্বাতুস সাখরা যাকে বলে The Dome of the Rock ভেঙ্গে সেখানে তারা একটি হাইকাল বা এবাদত গৃহ নির্মাণ করবে। এটিকে তারা বলে ‘থার্ড টেম্পল’।

এর আগে আরও দুইবার হাইকাল বা টেম্পল নির্মাণ করা হয়েছিল। প্রথমবার নির্মাণ করেছিলেন নবী সুলাইমান আলাইহিস সাল্লাম। কিন্তু পরবর্তীতে সেগুলো ভেঙ্গে ফেলা হয়। এখন তাদের পবিত্র হওয়া ছাড়া এ টেম্পল নির্মাণ করা যাবে না। তাই তারা বিশ্বের সর্বত্র এই লাল গাভী খুঁজে বেড়াচ্ছে।

বহু খোঁজাখুঁজির পর অবশেষে আমেরিকার নিউ জার্সিতে অবস্থিত একটি গো খামারে এক লাল গাভীর সন্ধান পাওয়া গেছে। কিন্তু গাভীর মালিক সেটি ইহুদিদের কাছে কোন মতেই, মিলিয়ন ডলার দিয়েও বিক্রয় করতে রাজি নয়। পরে মোট পাঁচটি লাল গাভি তারা একত্রিত করেছে।

ইহুদিদের সংগঠন ‘বনেহ ইসরাঈল’ তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে লিখে রেখেছে ‘৫টি লাল গাভি খুঁজে পাওয়া গেছে’। তবে সবচেয়ে আতঙ্কের বিষয় হলো, তারা ২৮ কিংবা ২৯ মার্চ এ গাভি বলি দিবে। আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ছাই বানিয়ে গায়ে মেখে দুনিয়ার নাপাক ইহুদিরা পাক হবে। তারপর তারা যে কোনোভাবে আল-আকসা ধ্বংস করে তাদের ‘টেম্পল’ তৈরি করবে।

 
পবিত্র কোরআনে বর্ণিত গরুর কথা

আরও পড়ুন

গরুর সাথে ইহুদি জাতির সম্পর্ক নতুন নয়, এটা খুব পুরানো। হযরত মুসা (আ.) এর জাতির গরু প্রীতি নিয়ে পবিত্র কোরআনে বর্ণনা করা হয়েছে। একবার তারা গরুর মূর্তি তৈরি করে আরেকবার গরু নিয়ে হাজারো প্রশ্ন করে। গরু সম্পর্কে পরীক্ষা নিরীক্ষা- এটা তাদের পুরানো অভ্যাস।


পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, যখন মুসা (আ.) তার সম্প্রদায়কে বললেন, আল্লাহ তোমাদের একটি গরু জবাই করতে বলেছেন। তারা বলল, তুমি কি আমাদের সাথে  উপহাস করছ?

মুসা (আ.) বললেন, মুর্খদের অন্তর্ভুক্ত হওয়া থেকে আমি আল্লাহর আশ্রয়  প্রার্থনা করছি। তারা বলল, তুমি তোমার পালনকর্তার কাছে আমাদের জন্য প্রার্থনা কর, যেন সেটির রূপ বিশ্লেষণ করা হয়।
মুসা (আ.) বললেন, তিনি বলছেন, সেটা হবে একটা গাভী, যা বৃদ্ধ নয় এবং কুমারীও নয়- বার্ধক্য ও যৌবনের মাঝামাঝি  বয়সের। এখন আদিষ্ট কাজ করে ফেল।

তারা বলল, তোমার পালনকর্তার কাছে আমাদের জন্য প্রার্থনা কর যে, তার রং কিরূপ হবে? মুসা (আ.) বললেন, তিনি বলেছেন যে, গাঢ় পীতবর্ণের গাভী- যা দর্শকদের চমৎকৃত করবে। তারা বলল, আপনি প্রভুর কাছে প্রার্থনা করুন- তিনি বলে দিন যে, সেটা কিরূপ?

কেননা, গরু আমাদের কাছে সাদৃশ্যশীল মনে হয়। ইনশাআল্লাহ এবার আমরা অবশ্যই পথপ্রাপ্ত হব। মুসা (আ.) বললেন, তিনি বলেন যে, এ গাভী ভূকর্ষণ ও জল সেচনের শ্রমে অভ্যস্ত নয়- হবে নিষ্কলঙ্ক, নিখুঁত। তারা বলল, এবার সঠিক তথ্য এনেছ। অতঃপর তারা সেটা  জবাই করল, অথচ জবাই করবে বলে মনে হচ্ছিল না। (সুরা বাকারা: ৬৭-৭১)

বাইবেলে বর্ণিত গরুর ধরণের সাথে কোরআনে বর্ণিত গরুর বেশ কিছু মিল আছে, যেমন, গাভী হতে হবে,মাঝারী বয়সের হতে হবে, কোনো চাষাবাদ বা অন্য কাজে ব্যবহৃত হয়নি এমন হতে হবে, নিখুঁত ও কলঙ্ক বিহীন হতে হবে, তাদের ধর্মগ্রন্থে আছে, ‘হাইকলের জমি আমাদের হাতে আসা মাত্রই আল্লাহ লাল গাভীকে আদেশ করবেন, সে হাম্বা ধ্বনিতে মুখর হয়ে উঠবে তারপর আমরা শুরু করবো হাইকল নির্মাণ। বনী ইসরাইলের নবীগণ এই ভবিষ্যৎবাণী করে গেছেন’ (আখবারুশ-শারক ১৩/০৫/১৯৯৭)

ইহুদি আরেক এক পণ্ডিতের ভাষায়, ‘আমরা হাইকলের নির্ধারিত জায়গার সামনে পূর্বমুখী করে গাভী জ্বালাবো। এ কাজে বিভিন্ন বৃক্ষের কাঠ ব্যবহৃত হবে, তারপর ছাইকে পানি সরবরাহের মতো পাইপলাইনের সহয়তায় প্রতিটি ইহুদির ঘরে ঘরে পোঁছে দেবো (এভাবেই সব ইহুদিকে পবিত্র করা হবে)।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

শুভ জন্মদিন নায়ক রাজ রাজ্জাক

মদিনা গ্রুপে চাকরির সুযোগ

মিরসরাইয়ে গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু, পরিবারের দাবি হত্যা

নারীদের শরীরে আয়রনের ঘাটতি মিটাবে যেভাবে

সাভারে কেন্দ্রীয় গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামারে শ্রমিককের মরদেহ উদ্ধার

শ্যামনগরে অস্ত্র ও ককটেলসহ আটক ২