যেসব খাবারে মাইগ্রেনের ব্যথা বাড়ে
লাইফস্টাইল ডেস্ক : মাইগ্রেনের ব্যথা যাদের আছে, তারাই বোঝে এই রোগের যাতনা। প্রতিদিন কী খাচ্ছেন, সেটার সঙ্গে কিন্তু এই ব্যথা কমা-বাড়ার গভীর সম্পর্ক রয়েছে। কোন কোন খাবারে বাড়ে মাইগ্রেনের ব্যথা, আর কোন খাবারে কমে, তা নিয়েই আজকের প্রতিবেদন। চলুন, জেনে নেওয়া যাক।
মাইগ্রেনের ব্যথায় আক্রান্তদের মাথা ব্যথার সঙ্গে বমিভাব, চোখের যন্ত্রণা, খিদে কমে যাওয়া, আলো ও শব্দ সহ্য করতে না পারা, ইত্যাদি উপসর্গ দেখা যায়। মাথা ব্যথার তীব্রতার ধরন একেকজনের ক্ষেত্রে একেক রকম হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মাইগ্রেন রোগীদের মস্তিষ্কে ম্যাগনেশিয়াম কম থাকে। তবে খাবার ও জীবনযাত্রায় পরিবর্তনের মাধ্যমে মাইগ্রেনের ব্যথাকে অনেকটাই কমানো যায়।
দীর্ঘক্ষণ উপোস করলে বা সময়মতো খাদ্যগ্রহণ না করলে, এ ছাড়া অতিরিক্ত চকোলেট, পনির ও বেশি ফ্যাটযুক্ত দুগ্ধজাত খাবার থেকে মাইগ্রেন হতে পারে।
যেসব খাবারে বাড়তে পারে
খাবারের প্রোটিনের মধ্যে টাইরামিন নামে রাসায়নিক পদার্থ থাকে যা মস্তিষ্কের রক্তনালির সংকোচন ঘটিয়ে মাইগ্রেনের ব্যথা বাড়ায়। টাইরামিন বেশি থাকে পনির, চকোলেট, অ্যালকোহল, মেটে, সয়াসস, ডিম, কমলালেবু, ডুমুর, কলা, টমেটো, কিশমিশ ইত্যাদিতে। এগুলো মাইগ্রেন রোগীরা এড়িয়ে চলতে পারেন বা পরিমাণে কম খাবেন।
ফাস্ট ফুড যেমন ম্যাগি, রোল, পাস্তা, পিৎজা, বিরিয়ানি, এসব খাবারে রাসায়নিক পদার্থ মেশানো হয়, যা খাবারকে সুস্বাদু করে তোলে। এদের মধ্যে প্রধান হলো আজিনোমোতো। যারা নিয়মিত চায়নিজ ফুড খান, তাদের মাথাব্যথার প্রকোপ বেশি হতে দেখা যায়। এ ছাড়া দুধ, চা, কফি, সাইট্রাস ফল পনির এগুলো খেলে মাথাব্যথা হয়।
রেডমিট, চিংড়ি, কাঁকড়া, মাছের মাথা, মাছের ডিম, লিভার, কিডনি, ফুল ক্রিমযুক্ত দই, মিষ্টি দই, কনডেন্সড মিল্ক, সয়া মিল্ক, লেবু জাতীয় ফল, আনারস, নারকেলও বেশি খাওয়া যাবে না।
যে খাবারে নিয়ন্ত্রণে থাকবে
পুষ্টিযুক্ত খাবার যেমন, তাজা শাকসবজি (কুমড়া, আলু, গাজর, ঝিঙে, লাউ, চিচিঙ্গা, করলা), ফল (আপেল, পেঁপে, ন্যাশপাতি, ফুটি, তরমুজ, বেদানা), কম ফ্যাটযুক্ত চিকেন, মাছ গ্রহণ করলে এর প্রকোপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
এ ছাড়া যে খাবারে ওমেগা-৩-ফ্যাটি এসিড পাওয়া যায় যেমন স্যামন ফিশ, ফ্ল্যাক্সসিড, আখরোট, ভুট্টা খেলে ব্যথার উপশম হয়। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি বা তরল পদার্থ যেমন স্যুপ খাওয়া যেতে পারে। ডিহাইড্রেশন হলে মাইগ্রেনের ব্যথা বাড়ে। সবুজ শাকসবজি, পালংশাক ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার, যা মাইগ্রেন কমাতে সাহায্য করে।
এ ছাড়া আমন্ড, কুমড়া বীজ, সূর্যমুখী বীজ, সাদা তিল, কম ফ্যাটযুক্ত প্রোটিন খাবার, দানাশস্য ও ডাল জাতীয় সবুজ দানা ওটস, আটার রুটি, ব্রাউন রাইস, ভুট্টা, কুইনোয়া, খাওয়া যেতে পারে। গ্রিন টি, আদা চা, ক্যামোমাইল চা ব্যথা কমাতে ভালো।
যেসব বিষয়ে নজর দিতে হবে
মাইগ্রেনের সমস্যায় থাকলে খাদ্যাভ্যাসে নজর দিতে হবে।
প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট হাঁটা খুবই জরুরি।
বাইরের তৈলাক্ত খাবার, সফট ড্রিংক।
জুস, স্যুপ, প্যাকেজড স্যুপ খাওয়া যাবে না।
মাইগ্রেনের প্রকোপ কমাতে অল্প অল্প করে, দুই ঘণ্টা অন্তর অন্তর খাবার খেতে হবে।
পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি ও কম ফ্যাট যুক্ত খাবার গ্রহণ করতে হবে।
ঠাণ্ডা জাতীয় খাবার খাওয়ার সময় সতর্ক থাকুন, বেশি ঠাণ্ডা এড়িয়ে চলুন।
যে খাবার খেলে মাইগ্রেনের ব্যথা বাড়ে সেগুলো খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিতে হবে।
মন্তব্য করুন