জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে এক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের খোলা আকাশের নিচে পাঠগ্রহণ
ক্ষেতলাল (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি : জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার আকলাশ শ্যামপুর শিবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে দীর্ঘ দিন যাবৎ শ্রেণি কক্ষ ও শিক্ষার্থীদের বসার ব্রেঞ্চ সংকটে খোলা আকাশের নিচে পাঠদান করাচ্ছেন শিক্ষকরা। নতুন ভবন নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে মাটিতে বসে ক্লাস নিতে হচ্ছে।
সরজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার সদর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দক্ষিণে আলমপুর ইউনিয়নে আকলাশ শ্যামপুর শিবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের অবস্থান। ১৯৪৫ সালের বিদ্যালয়টিতে ১৯৯৪ এবং ২০১০ সালে শিক্ষা প্রকৌশলী অধিদপ্তর থেকে পৃথক দু’টি ভবন নির্মাণ করা হয়।
ভবন দুটিতে মোট ১১টি কক্ষের মধ্যে বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষ, শিক্ষক কক্ষ, লাইব্রেরি, কম্পিউটার ল্যাব, ছাত্রী কমন রুম ও বিজ্ঞানাগার হিসেবে ব্যবহার করার কারণে শ্রেণি কক্ষের সংকট দেখা দেয়। বর্তমান শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ৯টি শ্রেণি কক্ষের প্রয়োজন হলেও সেখানে পাঠদানের জন্য মাত্র ৫টি কক্ষ রয়েছে। ওই কক্ষগুলোতে পাঠদান দিতে অনেক সময় শিক্ষার্থীদের ব্রেঞ্চে গাদাগাদি করে বসাতে হয়।
বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেণির ছাত্র রাহাদ হোসেন বলেন, গত এক বছর ধরে বিদ্যালয়ের শ্রেণি কক্ষের সংকটের কারনে খেলার মাঠে ক্লাস করতে হয়। অনেক সময় মাটিতে বসে ক্লাস করতে গিয়ে বই-খাতাসহ পড়নের কাপড়ে ধুলা-বালি এবং ময়লা জমে। এভাবে স্কুলে এসে পড়ালেখা করতে মন চায় না।
আরও পড়ুনবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শফিকুল আলম শফিক বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে উপজেলার মধ্যে এই বিদ্যালয়ের ব্যাপক সুনাম রয়েছে। অথচ শ্রেণি কক্ষসহ অন্যান্য অবকাঠামো সংকট। পর্যাপ্ত শ্রেণি কক্ষ না থাকায় খেলার মাঠে পাঠদান দেওয়ায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কথা শুনতে হয়।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আজিজুল হাসান জোয়ারদার বলেন, প্রতিদিনের শিক্ষার্থীর উপস্থিতি হিসেবে ৯টি শ্রেণি কক্ষের প্রয়োজন। সেখানে মাত্র ৬টি শ্রেণি কক্ষ রয়েছে। বাঁকি ৩টি শ্রেণিীকক্ষের অভাবে অবশেষে বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে ক্লাস করাতে বাধ্য হচ্ছি। কয়েক বছর ধরে শ্রেণি কক্ষ সংকটের বিষয়টি জেলা, উপজেলা শিক্ষা অফিসসহ সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রকৌশলী অধিদপ্তরে জানানো হয়েছে। কিন্তু কোন সমাধান এখনও হয়নি।
জেলা শিক্ষা অফিসার রুহুল আমিন বলেন, বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা আগের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। সেখানে শ্রেণি কক্ষের সংকট দেখা দিয়েছে। শিক্ষা প্রকৌশলী অধিদপ্তর থেকে জেলাভিত্তিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণের জন্য চাহিদা চাইলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ওই বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণের ব্যাপারে জোর সুপারিশ করা হবে।
মন্তব্য করুন