ভিডিও বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারি ২০২৫

নাব্যতা সংকট আর শীতে মাছ শূন্য সারিয়াকান্দি যমুনাপাড়ের আড়ৎ

নাব্যতা সংকট আর শীতে মাছ শূন্য সারিয়াকান্দি যমুনাপাড়ের আড়ৎ। ছবি : দৈনিক করতোয়া

সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি : প্রায় মাছ শূন্য হয়ে পড়েছে বগুড়া সারিয়াকান্দির মাছের আড়ৎগুলো। নাব্যতা সংকটে যমুনা নদীতে পানি না থাকা এবং শীতের কারণে এমন হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আড়ৎদার ও জেলেরা। মাছ না পেয়ে মাঝিদের কেউ অন্য পেশা বেছে নিচ্ছেন। মাছ সংকটের কারণ হিসেবে বিদ্যুৎশক এবং চায়না দুয়ারি জাল ব্যবহারকেও দুষছেন এলাকাবাসী।

বগুড়া সারিয়াকান্দি উপজেলার যমুনা নদীর নাব্যতা সংকটের জন্য গত কয়েক মাস ধরেই কাঙ্খিত পানি নেই। পানি না থাকায় নদীতে মাছ পাচ্ছেন না জেলেরা। অপরদিকে কয়েকদিনের মাঝারি শীতে জেলেরা যমুনায় নামতে পারছেন না।

যমুনা নদীর মাছ নির্ভর এ উপজেলায় দু’টি মাছের আড়ৎ গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে একটি পৌর এলাকার কালিতলা নৌঘাটে এবং অপরটি কর্ণিবাড়ী ইউনিয়নের দেবডাঙ্গা মাছের আড়ৎ। গত কয়েকদিন ধরেই এসব আড়ৎগুলো মাছ শূন্য হয়ে পড়েছে। কালিতলা নৌঘাটের মাছের আড়তে আগে যেখানে প্রতিদিন ৭ লাখ টাকার বেশি মাছ বিক্রি হতো এখন সেখানে মাত্র ৪০ হাজার টাকার মাছ বিক্রি হচ্ছে।

অপরদিকে দেবডাঙ্গা মাছের আড়তে চারটি ঘরে আগে সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে ৯ থেকে ১০ লাখ টাকার মাছ বিক্রি হতো, এখন সেখানে দুইবেলা মিলে মাত্র ৬০ হাজার টাকার মতো মাছ বিক্রি হচ্ছে। এদিকে নদীতে মাছ কম পাওয়ার জন্য মাছের দামও বেড়েছে। এখানে ৩ কেজি ওজনের বোয়ালমাছ ১২শ’ টাকা কেজি, আড়াই কেজি ওজনের ভেউস ১৪শ’ টাকা কেজি এবং ২০ কেজি ওজনের আইড়মাছ ১৮শ’ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে।

তবে আজ বুধবার (২৯ জানুয়ারি) সকালে ১৩ কেজি ওজনের একটি কাতল মাছ ১১শ’ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। এদিকে নদীতে পানি না থাকায় সরেলী, বৌ মাছ, বাইন মাছ, চিংড়ি, মলাসহ বেশকিছু প্রজাতির দেশি মাছ একেবারেই পাওয়া যাচ্ছে না। মাছ না পাওয়ায় অনেক দূর থেকে আসা ক্রেতারা মাছ না পেয়ে খালিহাতে ফেরত যাচ্ছেন।

আরও পড়ুন

কয়েকজন ক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বিদ্যুৎ শক, চায়না দুয়ারি জাল এবং কারেন্ট জাল দিয়ে অবাধে মাছ শিকারের কারণেও উপজেলার নদীগুলো মাছ শূন্য হয়ে পড়েছে। যমুনার জেলে নিতাই বলেন, যমুনায় পানি না থাকায় একেবারেই মাছ ধরা পড়ছে না। তাই প্রচন্ড শীত উপেক্ষা করে আমরা জলে নামছি না। কাঙ্খিত মাছ পেলে আমরা শীত উপেক্ষা করেই জলে নামতাম। মাছ না পাওয়ায় আমাদের কেউ এখন অন্য পেশা বেছে নিচ্ছেন।

দেবডাঙ্গা মাছের আড়ৎতে মাছ কিনতে আসা একজন ক্রেতা জানান, অনেক দূর থেকে তিনি যমুনা নদীর মাছ কিনতে এসেছিলেন। মাছ না পেয়ে তিনি খালি হাতে ফিরে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, একদিকে যমুনার নাব্যতা সংকট, অপরদিকে বিদ্যুৎ শক এবং চায়না দুয়ারি জাল দিয়ে মাছ শিকারের জন্য নদীর মাছ কমে যাচ্ছে। এর বিরুদ্ধে এখনি পদক্ষেপ না নিলে দেশে একসময় দেশি মাছের বিলুপ্তি ঘটবে।

আড়ৎদার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মাছ না থাকায় আমাদের ব্যবসা চালানোই মুশকিল হয়ে পড়েছে। আগে যেখানে প্রতিদিন তিন লাখ টাকার মাছ বিক্রি করতাম, এখন সেখানে মাছ না পাওয়ায় ২০ হাজার টাকার মাছ বিক্রি করাও কঠিন। আজ বুধবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে মাত্র ২১শ’ টাকার মাছ বিক্রি করেছি। ব্যবসা না হওয়ায় পরিবার পরিজন নিয়ে খুবই কষ্টে আছি।

সারিয়াকান্দি উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, আমি এ উপজেলায় সবেমাত্র যোগদান করেছি। আজ বুধবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে দেবডাঙা মাছের আড়তে গিয়েছি জেলেদের সমস্যার নিয়ে শুনতে। বিদ্যুৎশক এবং চায়না দুয়ারি জাল বন্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হবে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

রংপুরে জুলাই বিপ্লবে আহতদের মাঝে ১ কোটি ৭২ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর

শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে কম্বল বিতরণ করলেন যুবলীগ নেত্রী

বগুড়ার শিবগঞ্জে এক বছরে শিশুসহ ৫২ জনের আত্মহত্যা

বর্ধিত শুল্ক প্রত্যাহার দাবিতে বগুড়ায় ফল ব্যবসায়ীদের মানববন্ধন

চট্টগ্রামের ওসি পেটানোর ঘোষণাকারীকে ধরিয়ে দিলে পুরষ্কার

তারেক রহমানের নির্দেশ শীতে দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে -ভিপি সাইফুল ইসলাম