পঞ্চগড়ে সাবেক রেলমন্ত্রী সুজন ৩ দিনের রিমাণ্ডে, আদালতের বাইরে ভুয়া ভুয়া শ্লোগান

পঞ্চগড় প্রতিনিধি : পঞ্চগড়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেয়া আল আমিন নামে এক ইজিবাইক চালক যুবককে হত্যার পর লাশ গুমের অভিযোগে দায়ের করা মামলার প্রধান আসামি সাবেক রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজনের তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) মামলার শুনানি শেষে রিমান্ড মঞ্জুর করেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নাহিদা আকতার জুলিয়েট।
মামলার শুনানিকালে আদালতের উদ্দেশ্যে সুজন বলেন, আমি গত ২০ বছর ধরে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। আমি দীর্ঘদিন সুপ্রিম কোর্ট বারের সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলাম, সরকারের সাবেক মন্ত্রী ছিলাম। একই দিনে তিনটি ঘটনায় ঢাকার যাত্রাবাড়ি, ডেমরা ও পঞ্চগড়ের মামলায় আমাকে আসামি করা হচ্ছে। আমি এই ঘটনায় সম্পৃক্ত ছিলাম না। আমাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে হয়রানি করা হচ্ছে। ঢাকা থেকে পঞ্চগড়ে যাওয়া আসাতে আমার কষ্ট হচ্ছে। আদালতকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। সরকারের পরিবর্তন না হলে এখানে আসতে হতো না। আদালতে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন সুজন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এবং জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি আদম সুফি বলেন, এটি রহস্যাবৃত। ভিকটিমের কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। রহস্য উদঘাটনের জন্য এই মামলায় আসামির রিমান্ড প্রয়োজন ছিল। এটি আদালত অনুধাবন করেছেন। বিধায় আদালত তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
এর আগে মামলায় হাজির করার জন্য নুরুল ইসলাম সুজনকে গত মঙ্গলবার রাতে ঢাকার কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে পঞ্চগড় জেলা কারাগারে কড়া নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে হাজির করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) সকালে সাবেক রেলমন্ত্রীকে আদালতে তোলার আগে সকাল থেকে পুলিশি কড়া নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। সকাল ১০টা ২০ মিনিটে সুজনকে আদালতে নিয়ে আসা হলে আদালত চত্বরে জড়ো হওয়া লোকজন ভুয়া ভুয়া, ভোট চোর ভোট চোর শ্লোগান দিতে থাকেন। সকাল সাড়ে ১০ টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত টানা এক ঘন্টা শুনানি চলে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সুজনের ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
আরও পড়ুনমামলার শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হিসেবে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি আদম সুফি, জিপি আব্দুল বারী, এপিপি মোস্তাফিজুর রহমান মিলন, এপিপি মোস্তাফিজুর রহমান আইনজীবী হাবীব আল আমিন ফেরদৌসসহ অন্তত ১০জন এবং আসামি পক্ষে মির্জা সারোয়ার হোসেন, জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সাবেক পিপি আমিনুর রহমান, আজিজার রহমান আজু, আবু বক্কর সিদ্দিক, আলী আসমান বিপুলসহ ১০ থেকে ১৫ জন অংশ নেন।
উল্লেখ্য, পঞ্চগড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়ে ৪ আগষ্ট থেকে গুম হন আল আমিন। এ ঘটনায় আল আমিনের বাবা মনু মিয়া গত বছরের ১০ নভেম্বর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক রেলমন্ত্রী সুজনসহ ১৯ জনকে আসামি করে হত্যা ও গুমের মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় আরও ১৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।
মন্তব্য করুন