মারা গেছেন বিলিয়নিয়ার-আধ্যাত্মিক নেতা আগা খান
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইসমাইলি সম্প্রদায়ের আধ্যাত্মিক নেতা এবং দানশীল বিলিয়নিয়ার প্রিন্স করিম আগা খান মারা গেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতিতে প্রিন্স করিম আগা খানের দাতব্য সংস্থা আগা খান ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্ক তার মৃত্যুর খবর দিয়েছে। পর্তুগালের লিসবনে পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
১৯৩৬ সালে সুইজারল্যান্ডে জন্ম নেওয়া আগা খান ব্রিটিশ নাগরিক ছিলেন এবং জীবনের বেশিরভাগ সময় কাটিয়েছেন ফ্রান্সের একটি চ্যাটোতে। তার ব্যক্তিগত জীবন ছিল যথেষ্ট বিলাসবহুল-বাহামাসে তার একটি ব্যক্তিগত দ্বীপ, একটি সুপার-ইয়ট এবং ব্যক্তিগত জেট ছিল। তবে তার এই ঐশ্বরিক জীবনযাপন তার দানশীলতার পথে কোনো বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। তিনি ছিলেন এমন এক নেতা, যিনি শুধু ধর্মীয় নেতা নন বরং দাতব্য কাজের মাধ্যমে লাখো মানুষের জীবনকে পরিবর্তন করেছেন।
ইসমাইলি সম্প্রদায়ের মতে, ৪৯তম ইমাম হিসেবে পরিচিত আগা খান ছিলেন নবী মুহাম্মদের বংশধর। আগা খানের দাতব্য সংস্থাগুলো বিশ্বজুড়ে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে শতাধিক হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সাংস্কৃতিক প্রকল্প পরিচালনা করেছে। তার এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য ছিল-মানুষের জীবনমানের উন্নতি, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের জন্য একটি সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা। তার মৃত্যুতে আগা খান ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্ক এক শোকবার্তায় জানিয়েছে, আমরা তার পরিবার এবং বিশ্বব্যাপী ইসমাইলি সম্প্রদায়ের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই। তিনি যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, সেই লক্ষ্য পূরণে আমরা আমাদের কাজ চালিয়ে যাব, যাতে বিশ্বের প্রতিটি কোণে মানুষের জীবন আরও ভালো হয়।
আরও পড়ুনমাত্র ২০ বছর বয়সে, ১৯৫৭ সালে, তিনি তার দাদার স্থলাভিষিক্ত হন। পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি শুধু ইসমাইলি সম্প্রদায়ের নয়, বরং সারা বিশ্বের বহু মানুষের জন্য কাজ করে গেছেন। ২০০৮ সালে ফোর্বস ম্যাগাজিন তার সম্পদের পরিমাণ আনুমানিক ১ বিলিয়ন ডলার হিসেবে উল্লেখ করেছিল, যার মধ্যে ঘোড়া পালন ও অন্যান্য ব্যবসায়িক উদ্যোগের অবদান ছিল উল্লেখযোগ্য। বিশ্বজুড়ে প্রায় দেড় কোটি ইসমাইলি সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠি রয়েছেন, যাদের মধ্যে পাকিস্তানেই আছেন প্রায় ৫ লাখ। ভারত, আফগানিস্তান এবং আফ্রিকার বিভিন্ন দেশেও এই সম্প্রদায়ের উল্লেখযোগ্য সংখ্যা রয়েছে। সূত্র : নিউ ইয়র্ক টাইমস।
মন্তব্য করুন