নওগাঁর বদলগাছীতে ভিজিডি’র উপকারভোগীদের টাকা আত্মসাৎ করে বিদেশ পাড়ি দিলেন উদ্যোক্তা
বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি : নওগাঁর বদলগাছীতে এবার ভিজিডি’র আওতাধীন উপকারভোগীদের জমানো আমানতের টাকা আত্মসাৎ করে বিদেশ পাড়ি জমালেন পাহাড়পুর ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা দুলাল হোসেন। লাপাত্তা হওয়ায় উদ্যোক্তা দম্পতি দুলাল হোসেন ও তার স্ত্রী সুইটি বেগমের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা ফারুক আহমেদ।
উপজেলা মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, দুঃস্থ মহিলা উন্নয়ন (ভিজিডি’র) নতুন নাম ভালানারেবল উইমেন বেনিফিট (ভিডব্লিউবি) আওতাধীন পাহাড়পুর ইউনিয়নে ২৬১ জন দুঃস্থ অসহায়ের নাম তালিকাভুক্ত হয়। ২০২৩-২৪ চক্র তালিকাভুক্ত উপকারভোগীদের দুই বছরে ১৩ লাখ ৭৮ হাজার ৮০ টাকা সঞ্চয় জমা হওয়ার কথা। উপজেলার আট ইউনিয়নের সিডিউল মোতাবেক উপকারভোগীদের টাকা ফেরত দিতে পাহাড়পুর ইউনিয়নে ২৬ জানুয়ারি দিন ধার্য ছিল।
সে মোতাবেক উপজেলা মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর উদ্যোক্তা দুলাল হোসেন ও তার স্ত্রী সুইটি বেগমকে চিঠি দেওয়া হয়। চিঠি পাওয়ার পর ২৪ জানুয়ারি দুলাল বিদেশ পাড়ি জমায়। উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়নে নিয়ম মোতাবেক উপকারভোগীদের সঞ্চয়ের টাকা ফেরত দেওয়া হলেও পাহাড়পুর ইউসিয়নে ধার্য দিনে উদ্যোক্তা দম্পতি পরিষদের ডিজিটাল সেন্টার কক্ষে তালা দিয়ে পালিয়ে যায়। প্রতিটি ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে উদ্যোক্তাদের নামে এনআরবিসি ব্যাংকের এজেন্ট নিযুক্ত আছেন।
পাহাড়পুর ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান কিশোর জানান, আগে টাকা জমা হতো ডাচ বাংলা এজেন্ট ব্যাংকে এখন জমা হয় এনআরবিসি এজেন্ট ব্যাংকে উদ্যোক্তারা নিজেই এজেন্ট। উপকারভোগীদের টাকা তারা নিজেরাই তোলে এবং নিজেরাই জমা করে। টাকা ফেরতের দিন থেকে সে পালিয়ে থাকায় আমি ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। এখন পর্যন্ত পরিষদের ডিজিটাল সেন্টার বন্ধ আছে আমি দুলালের খোঁজ-খবর এখনো পাইনি।
উদ্যোক্তা সুইটি বেগমের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে সে জানায়, ২৬ জানুয়ারি দুলাল আমাকে ফোনে বলে সে দুবাই চলে গেছে। এর আগে সে আমাকে কিছু বলেনি তাছাড়া আমি যে পরিষদের উদ্যোক্তা তা আমার জানা ছিল না। আমি তো কখনো পরিষদে কাজ করিনি। সঞ্চয়ের টাকা সম্পর্কে আমি কিছু বলতে পারব না। তবে আমার শ্বশুর চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।
আরও পড়ুনজানতে চাইলে উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা ফারুক আহমেদ জানান, টাকা ফেরতের চিঠি পাওয়ার পর উদ্যোক্তা পালিয়ে যায়। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। থানার এসআই নিহার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, দুলাল বিদেশ গিয়েছে। আমি তার স্ত্রীর মোবাইল নম্বর মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তাকে দিয়েছি।
উপকারভোগীদের কত মাসের সঞ্চয় জমা আছে আর কত টাকা জমা হয়নি তা দেখার দায়িত্ব ছিল কি না জানতে চাইলে এনআরবিসি ব্যাংক ম্যানেজার খাইরুল হুদা জানান, ব্যাংকিং নিয়মে এসব তথ্য দিতে বাধ্য নন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইসরাত জাহান ছনি বলেন, বিষয়টি জেনেছি এ বিষয়ে মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
মন্তব্য করুন