সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী ও তার পুত্রের নামে কুড়িগ্রামে সাড়ে ২৪ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা
কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি : সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ ও তার পুত্র রাকিবুজ্জামান আহমেদকে আসামি করে কুড়িগ্রাম দুর্নীতি দমন কমিশনে গতকাল মঙ্গলবার একটি মামলা রুজু করেছে। দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের ২০০৪এর ২৭(১) ধারা, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪(২) (৩) ধারা এবং দন্ডবিধি ১০৯ ধারায় এ মামলা দায়ের করেন দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক জাকির হোসেন।
কুড়িগ্রাম দুদকের উপসহকারী পরিচালক মিজানুর রহমান চৌধুরী জানান, সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের পুত্র রাকিবুজ্জামান আহমেদকে এক নম্বর আসামি করা হয়। তার বিরুদ্ধে ২কোটি ১১ লাখ ২৪ হাজার ৪০০ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং ১০টি ব্যাংক হিসাবে ১১ কোটি ২৬ লাখ ৩৪ হাজার ৫৭৪ টাকা জমা ও ১১ কোটি ১৬ লাখ ৬৮ হাজার ৪১১ টাকা সন্দেহজনক উত্তোলনসহ সর্বমোট ২২ কোটি ৪৩ লাখ ২হাজার ৯২৫টাকার সঠিক বৈধ উৎস ও ব্যাখ্যা না থাকায় সন্দেহজনক লেনদেন হিসেবে চিহিৃত করা হয়।
একই সঙ্গে সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদকে দুই নম্বর আসামি করা হয়। তার বিরুদ্ধে মন্ত্রী থাকা অবস্থায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে অর্জিত অবৈধ অর্থকে বৈধ করার উদ্দেশ্যে ছেলের নামে সম্পদ অর্জন ও দখলে রাখতে সহায়তা করার অভিযোগ আনা হয়। ঘটনাস্থল লালমনিরহাট জেলাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা উল্লেখ করা হয়। আর ঘটনার সময়কাল নির্ধারণ করা হয় ২০১৩ সাল থেকে ২০২৪ সাল। মামলাটি দুর্নীতি দমন কমিশন নিজে তদন্ত করবে।
তিনি আরো উল্লেখ করেন, দুজন আসামির মধ্যে ২নং আসামি সাবেক মন্ত্রীকে গত বৃহস্পতিবার (৩০/০১/২৫) আইন শৃঙ্খলা বাহিনী রংপুর নগরীর সেন্ট্রাল রোডের পোস্ট অফিসের গলিতে মানিক নামে এক আত্মীয়ের বাসা থেকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার অভিযানে নেতৃত্ব দেন রংপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. মজিদ আলী। মন্ত্রীর নামে রংপুর ও ঢাকায় তিনটি হত্যা মামলা রয়েছে। সে মামলায় তিনি জেলহাজতে আছেন।
আরও পড়ুনজানা যায়, নুরুজ্জামান আহমেদ রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত বছর ৪ আগস্ট নগরীর রাজা রামমোহন ক্লাবের সামনে গুলিতে নিহত পথচারী মাহমুদুল হাসান মুন্না হত্যা মামলার আসামি। ওই ঘটনায় নুরুজ্জামান আহমেদসহ ১২৮ জনের নামে গত ৩১ আগস্ট রংপুর কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন মুন্নার বাবা কাউনিয়া উপজেলার বরুয়াহাট এলাকার আব্দুল মজিদ। এছাড়াও তার নামে ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানায় ১১ সেপ্টেম্বর এবং ২৪ আগস্ট দায়ের করা দুটি হত্যা মামলা রয়েছে।
তিনটি হত্যা মামলায় তিনি এতদিন আত্মগোপন করে ছিলেন। পতিত সরকারের মন্ত্রী হওয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমাতে মাস্টার মাইন্ডদের একজন ছিলেন এই সাবেক মন্ত্রী। নুরুজ্জামান আহমেদ লালমনিরহাট-২ (কালীগঞ্জ-আদিতমারী) আসনে ৩ বারের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন। তিনি সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের একবার প্রতিমন্ত্রী ছাড়াও একবার একই দপ্তরের পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
মন্তব্য করুন