ঘোড়া দিয়ে আব্দুল মমিনের হালচাষ

পাটগ্রাম (লালমনিরহাট) সংবাদদাতা: আব্দুল মমিন (৬৬)। বসতভিটা ছাড়া নিজের কোন জায়গা জমি নেই। তার স্ত্রী,এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। ছেলে দিনমজুর। ঘোড়া পোষা (পালন) তার নেশা। বর্তমানে তার পাঁচটি ঘোড়া রয়েছে। তিনি ঘোড়া দিয়ে হাল চাষ ও গাড়ি চালিয়ে সংসার চালান।
অন্যের এক বিঘা জমি ঘোড়া দিয়ে হাল চাষ করে নেন ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতির যুগে গরু-মহিষ দিয়ে হাল চাষ প্রচলন প্রায় উঠেই গেছে। গরু-মহিষ দিয়ে হাল চাষ চোখে পড়ে না তেমন। ঠিক সেই সময় ঘোড়া দিয়ে হাল চাষের ঘটনা খুবই বিরল। আর সেখানে মাঠে গরু-মহিষের বদলে ঘোড়া দিয়ে অন্যের জমিচাষ করছেন লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা ইউনিয়নের জমগ্রামের আব্দুল মমিন।
ঘোড়া দিয়ে হালচাষকারী আব্দুল মমিন (৬৬) বলেন, আমি গরিব মানুষ। আমার নিজের কোন জমিজমা নেই। মানুষের জমিতে হাল চাষ করি। গরুর চেয়ে ঘোড়া বেশি হাঁটাচলা করে। ফলে কম সময়ে অনেক বেশি জমি চাষ করা যায়। একদিনে দুই-তিন বিঘা পর্যন্ত জমিতে হালচাষ করা যায়। বিঘা প্রতি ৫০০ টাকা নেই। এই টাকা দিয়ে অভাবের সংসার চালাই।
এ বিষয়ে নবীনগর গ্রামের জমির মালিক কৃষক বাবুল হোসেন (৪০) বলেন, আমি ঘোড়া দিয়ে জমি চাষ করেছি। আমার জমির চারদিকে সবজিও ভুট্টার আবাদ। ট্রাক্টর বা পাওয়ার টিলার ঢোকার মত রাস্তা নেই। জমি কি দিয়ে চাষ করবো দুশ্চিন্তায় পড়েছিলাম। আগের মতো গরু দিয়ে হাল চাষও এখন নেই। একজনের কাছে জানতে পারলাম মমিন চাচা ঘোড়া দিয়ে হাল চাষ করেন। ঘোড়ার শক্তি গরুর চেয়ে অনেক বেশি। ঘোড়া খুব দ্রুত হাঁটে। তাই হাল চাষও দ্রুত হয়। চাষও খুব ভালো হয়।
আরও পড়ুনএ বিষয়ে বাউরা ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক ও পাটগ্রাম উপজেলার অতিরিক্ত কৃষি অফিসার কৃষিবিদ হারুন মিয়া বলেন, আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতির যুগে প্রায় কৃষকই এখন উন্নতমানের যন্ত্র দিয়ে জমি চাষ করেন। এখন গরু -মহিষের হালচাষ চোখে পড়ে না। সেখানে ঘোড়া দিয়ে হালচাষ করাটা খুবই বিরল।
মন্তব্য করুন