প্রধান উপদেষ্টা
ট্রাম্পকে নিয়ে অপপ্রচার চালাতে গিয়েও তারা পারল না
![](https://dailykaratoa.com/public/images/2025-02/Screenshot_132_original_1739630285.jpg)
বাংলাদেশ নিয়ে অপপ্রচার চালাতে ট্রাম্পের কাছে গিয়েও সুবিধা করতে পারেনি একটি পক্ষ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেন, সারা পৃথিবীজুড়ে আমাদের একটা বড় রকম সমর্থন গড়ে উঠেছে, যে কারণে অপরপক্ষ সুবিধা করতে পারছে না। পদে পদে ব্যাহত হচ্ছে যেখানে যায়। বহু গল্প করছে, গল্প টেকাতে পারছে না। শেষমেষ তো ট্রাম্পকে নিয়ে গল্প, সে অপপ্রচার চালাতে গিয়েও চালাতে পারল না।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর হওয়া সংলাপের সূচনা বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা।
ড. ইউনূস বলেন, যত ছোট রাষ্ট্র, বড় রাষ্ট্র, মাঝারি রাষ্ট্র, ধনী রাষ্ট্র, সবাই সমর্থন দিয়েছে, কারো কোনোরকম দ্বিধা নাই। তাদের ভাষা শুনলে আমি অবাক হই। আমরা যখন বসি, বিস্তারিত জানার আগে বলে, আমরা আপনাদের সঙ্গে আছি। এ পর্যন্ত তারা সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে এবং ক্রমাগতভাবে তাদের সমর্থন বাড়ছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমাদের এই যে দুই সমর্থন, অভ্যন্তরীণ একটা সমর্থন, আন্তর্জাতিক একটা সমর্থন, এই দুই সমর্থনের ভেতর দিয়ে আমরা যদি নতুন বাংলাদেশ গড়তে না পারি। এটা আমাদের কর্মের দোষ ছাড়া আর কি বলব। আমরা এ সুযোগ ছাড়তে চাই না।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক মহলও আমাদের জিজ্ঞেস করে তোমাদের অর্থনৈতিক দিক থেকে আমরা সাহায্য করতে পারি কি না। সংস্কারের ব্যাপারেও আমরা সাহায্য করব, তোমাদের কি দরকার। তোমাদের এ সংস্কারটা দরকার। তা না হলে এই যে পরিবর্তন, এটা টিকিয়ে রাখা যাবে না।
আন্তর্জাতিক মহলের সমর্থন, সহযোগিতা এবং শুভেচ্ছা, এটা আমাদের জন্য একটা মস্তবড় সম্পদ বলে উল্লেখ করেন ড. ইউনূস। বলেন, আমরা তাদের বলি আমাদের এই স্বপ্ন, আমরা এই করতে চাই, ওই করতে চাই। তারা বলে তোমরা করতে পার, আমাদের কোনো সমস্যা নাই। আমরা আছি তোমাদের সঙ্গে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এই যে আইনকানুন, নীতিমালা বানিয়ে দেব। একবার বানিয়ে দিলে তারপর থেকে চলতে থাকবে। একটা ট্রান্সপারেন্ট খেলা হবে। খেলায় জিতলে কেউ সন্দেহ করবে না যে কেউ জিতিয়ে দিয়েছে। এত ট্রান্সপারেন্ট, কেউ সন্দেহ করবে না।
আরও পড়ুনতিনি বলেন, এখন যে খেলা চলছে, ঠিকমতো জিতলেও সন্দেহ করে। বলে কিছু একটা কলকাঠি নেড়ে করেছে। এই কলকাঠি নাড়ার বিষয়টি আমাদের মনের ভেতর গেঁথে গেছে। কলকাঠি ছাড়া যে দেশ একটা নিয়মে চলতে পারে, সেটা আমরা ভুলে গেছি।
ড. ইউনূস বলেন, আন্তর্জাতিক সমর্থনের কথা বলেন আর দেশীয় সমর্থনের কথা বলেন, এটা বলতে গেলে মনটা বড় হয়ে যায়। জাতিসংঘের সমর্থন, আপনারা চিন্তা করেছেন যে রিপোর্টটা প্রকাশিত হলো। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের একটি প্রতিবেদনে সারা পৃথিবী বদলে গেছে। আর কত সমর্থন চাই আমরা। একেবারে অক্ষরে অক্ষরে বলে দিয়েছে কোথা কীভাবে মেরেছে, এর থেকে বের হওয়ার তো কারো উপায় নেই।
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে ঘিরে যে অপপ্রচার চলছিল, এই এক প্রতিবেদনে সব সমাপ্ত। বলতে পারবে কিন্তু কোনো আওয়াজ বের হবে না। আরও অন্য যেসব প্রতিষ্ঠান প্রতিবেদন তৈরি করেছে তাদের প্রতিবেদনে অত্যন্ত জোরালোভাবে তাদের (আওয়ামী লীগ) অপরাধের কথা উঠে এসেছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা সেদিন আয়নাঘরে গেলাম, মানুষ কত নির্মম হতে পারে, বীভৎস দৃশ্যের সৃষ্টি করতে পারে, নৃশংস হতে পারে, এর চেয়ে বড় নমুনা বোধ হয় পাওয়া যাবে না। আমাদের শুধু দেখতে কষ্ট লেগেছে, যারা বছরের পর বছর সেখানে থেকেছে তাদের কথা চিন্তা করুন। তাদের প্রতিটি বর্ণনা, তাদের অভিজ্ঞতা গুম-তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে।
ড. ইউনূস বলেন, পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পর দেশের ভেতরে এবং আন্তর্জাতিকভাবে মানুষ প্রথম বুঝতে পারল আমরা কীসের কথা বলছি, আমরা কোথা থেকে এসেছি। কাজেই আমরা প্রথম পর্বের পর দ্বিতীয় পর্বে এলাম। দ্বিতীয় পর্ব যেন আমরা আনন্দের সঙ্গে, খুশি মনে সম্পন্ন করতে পারি।
তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশে যে নতুন নির্বাচন, নির্বাচনের মাধ্যমে যে সরকার গঠন হবে সেটার ব্যাপারে কেউ প্রশ্ন তুলবে না। সেটার ব্যাপারে আইনকানুন সবার জানা থাকবে, এটা নড়চড় করার উপায় কারো থাকবে না। আইনকানুন বানানোর পর সেটা নড়চড় করার সুযোগ থাকবে না, সেজন্য এত বড় কমিশন করতে হয়েছে।
মন্তব্য করুন