কিভাবে 'মা' ডাক শিখলেন?

লাইফস্টাইল ডেস্ক : মনের ভাব প্রকাশের প্রধান মাধ্যম ভাষা। অথচ ভাষার জ্ঞানের সঙ্গে একেকজন মানুষের কী দারুণ আবেগ জড়িয়ে আছে ভেবে দেখেছেন কখনো? একজন মা যখন অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেন সন্তানের মুখে ‘মা’ ডাক শোনার, সেই অপেক্ষা কি শুধু সন্তানকে কথা বলতে শেখানোর জন্য? ভাষাকে আরও আপন করতে আমরা কেনইবা ‘মাতৃভাষা’ বলি? কারণ মায়ের ভাষা শুধুই যোগাযোগের মাধ্যম নয়, এটি আমাদের পরিচয়ের অংশ। আজ মহান আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। বাঙালির অর্জন। এইদিন বিশ্ববাসী, বিশেষ করে প্রতিটি বাঙালি অন্তত একবার হলেও নিজের মাতৃভাষা নিয়ে ভাবেন নিশ্চয়ই।
আজকে একবার ভেবে দেখুন তো, একটি ছোট্ট শিশু কীভাবে ‘মা’ বা ‘বাবা’ বলতে শেখে? কীভাবে সে ধীরে ধীরে জটিল বাক্য বুনতে শুরু করে? মাতৃভাষা শেখার প্রক্রিয়াটি আসলে এক ধরনের জাদুর মতো। শুধু শব্দ শেখা নয় বরং মস্তিষ্কের এক আজব খেলা এটি; সামাজিক মেলামেশা এবং প্রকৃতির দেওয়া এক বিশেষ উপহার।
বিখ্যাত মনোবিজ্ঞানী নোম চমস্কি বলেছেন, মানুষের মস্তিষ্কে ভাষা শেখার একটা সহজাত ক্ষমতা আছে। তিনি এটাকে বলেছেন ‘সার্বজনীন ব্যাকরণ’। তার মতে, সব ভাষার মধ্যে কিছু সাধারণ নিয়ম থাকে, যা শিশুরা স্বাভাবিকভাবেই শিখে নেয়।
আরেক বিখ্যাত মনোবিজ্ঞানী জঁ পিয়াজে বলছেন, ভাষা শেখার পেছনে শিশুর জ্ঞানের বিকাশের বড় ভূমিকা আছে। তিনি মনে করেন, শিশুরা তাদের চারপাশের পরিবেশের সংস্পর্শে থেকেই ভাষা শেখে।
আরও পড়ুনহার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা দেখেছেন, শিশুরা ভাষা শেখার সময় মস্তিষ্কের দুটি বিশেষ অংশ সক্রিয় হয়—ব্রোকা এরিয়া এবং ভের্নিকেস এরিয়া। এই অংশগুলো ভাষা উৎপাদন এবং বোঝার জন্য দায়ী।
এদিকে স্ট্যানফোর্ডের এক গবেষণায় দেখা গেছে, শিশুরা শব্দের ধ্বনিগত বৈশিষ্ট্য খুব দ্রুত শিখে নেয়। মস্তিষ্ক স্ক্যান করে দেখা গেছে, নতুন শব্দ শেখার সময় মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশ একসঙ্গে কাজ করে।
আবার আপনি আশেপাশে তাকালেও দেখবেন যে, শিশুরা তাদের পরিবার এবং আশেপাশের মানুষের সঙ্গে কথা বলার মাধ্যমেই ভাষা শেখে। যেসব শিশু বেশি কথোপকথনে অংশ নেয়, তাদের ভাষার দক্ষতা দ্রুত বিকশিত হয়।
মন্তব্য করুন