ভিডিও শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

জেনারেশন বেটা : প্রযুক্তি যাদের খেলার সাথী

জেনারেশন বেটা : প্রযুক্তি যাদের খেলার সাথী

ই বছর জন্ম নিচ্ছে যে শিশুরা, তাদের দিয়েই শুরু হচ্ছে নতুন একটি প্রজন্ম। এই প্রজন্মের নাম দেওয়া হয়েছে জেনারেশন বেটা। ২০২৫ থেকে ২০৩৯ সাল পর্যন্ত যারা পৃথিবীতে আসতে যাচ্ছে, তারা সকলেই এই জেনারেশনের সদস্য।

ইন্টারনেট জগতে বর্তমানে সবচেয়ে সরব প্রজন্মগুলো হলো- মিলেনিয়ালস্, যাদের জন্ম ১৯৮১ থেকে ১৯৯৬ এর মধ্যে; জেন-জি বা জেনারেশন জেড, যাদের জন্ম ১৯৯৭-২০১০ সালে; এবং জেনারেশন আলফা, যাদের জন্ম ২০১১ থেকে ২০২৪ সালে। এরমধ্যে মিলেনিয়াল্‌ আর জেন-জি- এই দুটি প্রজন্মই মূলত এই নতুন জেনারেশন বেটার অভিভাবক। প্রযুক্তির উত্থান দেখতে দেখতে বড় হয়েছে মিলেনিয়ালস্ আর জেন-জি, কিন্তু জেনারেশন বেটা বেড়ে উঠবে এমন একটি দুনিয়ায়, যেখানে এমন কোনো ক্ষেত্র থাকবেনা, যা প্রযুক্তির ছোঁয়ার বাইরে।

ফলে তারা শুধু একটা নতুন প্রজন্ম না, তারা হল ভবিষ্যতের চিন্তাভাবনা, অনুভূতি এবং জীবনদর্শনের প্রতিচ্ছবি। তারা এমন এক পৃথিবীতে বড় হবে, যেখানে প্রযুক্তি, গ্লোবালাইজেশন এবং পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ তাদের চিন্তাভাবনা এবং ব্যক্তিত্বকে গভীরভাবে প্রভাবিত করছে। তাই অতীতের যেকোন প্রজন্ম থেকে তারা হবে অনেকটা আলাদা। চলুন দেখে নিই কোন কোন বিষয়ে এই জেনারেশন বেটা হবে অনন্য-

দ্রুত শেখার ক্ষমতা
জেনারেশন বেটার মেন্টাল এ্যাবিলিটি তাদের পিতামাতার প্রজন্মের থেকে একদম আলাদা। ওরা এমন এক যুগে বড় হচ্ছে, যেখানে তথ্য হাতের মুঠোয়। ওরা শেখার জন্য মানুষের তুলনায় গুগল, ইউটিউব, বা এআই-এর সাহায্য বেশি নিবে। জন্ম থেকেই ডিজিটাল দুনিয়ার সঙ্গে পরিচিত হওয়ায় তাদের মস্তিষ্ক দ্রুত তথ্য প্রসেস করতে সক্ষম হবে। ওরা এক সঙ্গে অনেকগুলো কাজ করা বা মাল্টিটাস্কিংয়ে পারদর্শী হবে। কিন্তু এত তথ্যের মধ্যে কি তারা গভীরভাবে চিন্তা করতে পারবে? সেই প্রশ্ন থেকেই যায়

উদ্যোক্তা মনোভাব, স্বাধীনচেতা
জেনারেশন বেটার ব্যক্তিত্ব হবে স্বাধীনচেতা এবং উদ্যোক্তা মনোভাব সম্পন্ন। ওরা শুধু চাকরি করার জন্য নয়, বরং নিজের আইডিয়া নিয়ে কিছু তৈরি করার জন্য আগ্রহী হবে। খাপ খাইয়ে নিতে তারা পারদর্শী হবে। নতুন কিছুকে বা পরিবর্তনকে তারা ভয় পাবে না। বরং সুযোগ হিসেবে দেখবে। তবে, অনেকেই মনে করেন যে জেনারেশন বেটা একটু বেশি আত্মকেন্দ্রিক হতে পারে। ভার্চুয়াল জগতে অতিরিক্ত সময় কাটানোর কারণে ওরা হয়তো বাস্তব জগতে কম আগ্রহী হবে। এটা ওদের সামাজিক দক্ষতাকে প্রভাবিত করতে পারে।

জেনারেশন বেটা : প্রযুক্তি যাদের খেলার সাথী

আরও পড়ুন

বিশ্ব নাগরিক ও পরিবেশ সচেতন
জেনারেশন বেটার জীবন নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি হবে বৈশ্বিক এবং পরিবেশ সচেতন। তারা এমন এক পৃথিবীতে বড় হবে, যার কোনো সীমানা নেই, শুধু আছে গ্লোবাল কমিউনিটি। ওরা বিভিন্ন সংস্কৃতি, ভাষা এবং বিশ্বাসের সঙ্গে সহজেই মিশতে পারবে।

ওরা পরিবেশ নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করবে। জলবায়ু পরিবর্তন, প্লাস্টিক দূষণ, এবং প্রাকৃতিক সম্পদের সংকট ওদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হবে। তাদের পেশাগুলোও হয়তো এই চিন্তার প্রতিফলন করবে।


মানসিক স্বাস্থ্য
জেনারেশন বেটার মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে ইতোমধ্যেই বিজ্ঞানীরা চিন্তিত। প্রযুক্তির অতিরিক্ত ব্যবহার, ভার্চুয়াল জগতে অতিরিক্ত সময় কাটানো, আর সামাজিক চাপ তাদের মানসিক স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করতে পারে। ফলে তারা হয়তো আমাদের চেয়ে বেশি একাকীত্ব আর উদ্বেগের সম্মুখীন হবে। তবে তারা মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে আরও বেশি সচেতন হবে, আর এটা নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করবে।

জেনারেশন বেটা আসলে প্রযুক্তি, পরিবেশ, আর গ্লোবালাইজেশনের এক নতুন যুগে বড় হবে। ওরা হবে আমাদের চেয়ে বেশি সচেতন, আর বেশি অভিযোজিত। এই প্রজন্মের অভিভাবকরা তাই তৈরি হয়ে নিন ভবিষ্যতের কারিগরদের গড়ে তোলার জন্য। কারণ জেনারেশন বেটা শুধু একটা প্রজন্ম না, ওরা হল ভবিষ্যতের নির্মাতা। আর ওদের হাত ধরেই তৈরি হবে নতুন এক পৃথিবী।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

কুয়েটে শিক্ষার্থীদের সিন্ডিকেট সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান

‘বাংলাদেশ ও ভারতকে হারিয়ে সেমিতে যাবে পাকিস্তান’

গোপনে বিয়ে সারলেন নারগিস ফাখরি

শেষ হলো চরমোনাই দরবারের মাহফিল

সীমান্ত হত্যা শূন্যে নামিয়ে আনতে বিএসএফের প্রতি বিজিবির আহ্বান

নিজ ভাষার প্রতি ভালোবাসা ও চর্চা একটি জাতির পরিচয় ও সংস্কৃতির ভিত্তি গড়ে তোলে-পুলিশ সুপার, বগুড়া